প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর প্রতি বছরের মতো এবারো বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ২১ মার্চ প্রকাশিত ‘২০২২ কান্ট্রি রিপোর্টাস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিসেস’ শীর্ষক বার্ষিক এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, স্বাধীন মতপ্রকাশে বাধা, মিডিয়ায় সেলফ সেন্সরশিপসহ, ২০১৮ সালের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি কিংবা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বিষয়ে এ প্রতিবেদনে তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে রিপোর্টটি তৈরি করা হয়। প্রতি বছর মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট তাদের এ প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ করে বার্ষিক রিপোর্টের ভিত্তিতে। তবে বাংলাদেশের বিষয়ে এ রিপোর্ট প্রকাশের পর পেশাদার কূটনীতিকসহ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এ রিপোর্টকে অস্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন। কারণ বার্ষিক প্রতিবেদনে চার বছর আগের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করাটা সন্দেহের উদ্রেক ঘটায়। আর বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন এই প্রতিবেদনকে ‘অযৌক্তিক’ বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র ত্রæটিমুক্ত নয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কীভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজ দেশের নির্বাচনের বিরুদ্ধে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গা বাধিয়েছেন, কয়টি প্রাণ ঝরে গেছে সেই ইতিহাস আমরা ভুলিনি। আমরাতো বলছি না আমরা পারফেক্ট। আমরা ত্রæটিমুক্ত করছি। ক্রমান্বয়ে আমরা রিফর্ম করছি। নির্বাচন কমিশনে এর আগে কখনো আইন ছিল না। সেই নির্বাচন কমিশনকে শেখ হাসিনা আইন করে স্বাধীনতা দিয়েছেন।’
কূটনীতির সম্পর্কের জায়গায় অন্য একটি দেশ আমাদের কোনো ব্যবস্থা সম্পর্কে তাদের মতামত দিতে পারে কিন্তু আমাদের শাসনতন্ত্র নিয়ে কথা বলার অধিকার রাখে না। কারণ শাসনতন্ত্র কীভাবে চলবে সেটি ঠিক করবে এদেশের জনগণ। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে দেশে কী ধরনের শাসনতন্ত্র কায়েম হবে। মানবাধিকার নিয়ে পশ্চিমাদের রাজনৈতিক কূটচাল নতুন নয়। আমরা আমাদের ভাগ্য গড়ব কী, তা নিয়ে আমাদেরই ভাবতে হবে। আপাতত পশ্চিমাদের রাজনৈতিক মানবাধিকার ফাঁদে আমাদের পা না দিলেও চলবে। যেমনটা করেছিলেন লি কুয়ান, তিনি জেলেপল্লী থেকে আধুনিক সিঙ্গাপুর তৈরিতে প্রায় ৪০ বছর টানা কাজ করেছিলেন। তাকেও শুনতে হয়েছিল গণতন্ত্রের ছবক। প্রশ্ন উঠেছিল মানবাধিকারের। বিশ্ব সমালোচনাকে তিনি পাত্তা দিতেন না। তিনি শৃঙ্খলার প্রশ্নে কঠোর ছিলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখাতেন। সুশাসনও প্রতিষ্ঠা করেন। উন্নয়নে সারা বিশ্বের মেধাবীদের মিলনমেলা বানালেন সিঙ্গাপুরকে। একই কাজ করেও এশিয়াতে চমক দেখিয়েছিলেন মাহাথির বিন মোহাম্মদ, টানা ২২ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। মাহাথির বদলে দিলেন মালয়েশিয়াকে। এখানেও পশ্চিমাদের মাথাব্যথার অন্ত ছিল না, তাতে কী! মালয়েশিয়া তো আজ বিশ্বের রোল মডেল। একইভাবে শেখ হাসিনার উন্নয়নের গণতন্ত্র হয়তো অনেকেরই সহ্য সীমা অতিক্রম করার উপক্রম হয়েছে, তাই মানবাধিকারসহ অন্যান্য ইস্যুকে সামনে এনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের নতুন নতুন দৃশ্যপট তৈরির ব্যর্থ চেষ্টা চলছে। জাতির পিতার খুনিদের যারা আশ্রয়দাতা তাদের মুখে মানবাধিকারের কথা বেমানান। তারা কেবল রাজনৈতিক নাটাই ঘোরাতে পারবে, ঘুড়ির রং বদলাতে চেষ্টা করতে পারবে, তাতে এগিয়ে চলা বাংলাদেশকে কেউ থামাতে পারবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।