বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের : গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা বিএনপির কারণেই বারবার হোঁচট খায়

আগের সংবাদ

আত্রাই উপজেলা মিলনায়তনের পাশে জলাবদ্ধতা

পরের সংবাদ

হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাবের তদন্ত কমিটি

প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নওগাঁয় আটকের পর র‌্যাবের হেফাজতে ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সংস্থাটি। র‌্যাব সদর দপ্তর সোমবার এই তদন্ত কমিটি গঠন করে। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। তদন্তে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান, র‌্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে কর্মরত যুগ্ম সচিব এনামুল হকের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে, ভুয়া আইডি তৈরি করে একটি চক্র। ওই আইডি থেকে তার নামে চাকরি দেয়া ও বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেয়ার নাম করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা চলছিল। তিনি গত বছরের মার্চে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে তিনি এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। একজন নারী তার নামে ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে প্রতারণা করছে এমন অভিযোগে আদালতে মামলাও করেন। গত ১৯-২০ মার্চ নিজ কার্যালয়ের সামনেই তার নাম নিয়ে প্রতারণা করা হয়। এই খবর পেয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে, প্রতারণায় আল আমিন নামে একজনের যোগসাজশ রয়েছে। এরপর তিনি আরো জানতে পারেন এ কাজে জেসমিন নামে এক নারীর নামও রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ওই যুগ্ম সচিব অফিস যাওয়ার পথে র‌্যাবের টহল টিমের কাছে অভিযোগ করেন। তার সামনেই অভিযুক্ত নারীকে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এ সময় আটক সুলতানা জেসমিন অকপটে সব অভিযোগ স্বীকার করেন। তার মোবাইলে এনামুল হকের নামে খোলা ভুয়া ফেসবুক আইডি চলমান অবস্থায় দেখা যায়। তার মোবাইলে সোনালী ব্যাংকের একাউন্টে বিপুল টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে তাকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আটক করে জব্দকৃত আলামত নিয়ে একটি কম্পিউটারের দোকানে প্রিন্ট করা হয়। এরপর সেখান থেকে থানায় মামলার উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে ওই নারী অসুস্থবোধ করেন। তখন র‌্যাব মামলার চেয়ে তাকে হাসপাতালে নেয়াকেই অধিক গুরুত্ব দেয়।
কমান্ডার মঈন বলেন, প্রত্যেকটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নারী ও শিশু অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাই আমরাও ওই নারীকে দ্রুত নওগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাই। তিনি গাড়ি থেকে নিজে নেমে হেঁটে হাসপাতালে ঢোকেন। এ সময় ওই নারীর আত্মীয়স্বজন ও তার এসিল্যান্ডসহ ভূমি অফিসের

সহকর্মীদরে খবর দেয়া হয়। সন্ধ্যার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্ট্রোক সন্দেহ করলে ওই নারীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে সিটি স্ক্যানে স্ট্রোকের আলামত আসে। তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
র?্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ওই নারী কী কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন তা কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেছেন, মৃত্যু সনদেও তা উঠে এসেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করতে কিন্তু অনুমতি লাগে। ভুক্তভোগী যুগ্ম সচিব এনামুল হক অনুমতি সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে থানায় বাদী হয়ে মামলাও করেছেন।
কমান্ডার মঈন বলেন, যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, জেসমিন নামে ওই নারী র‌্যাব হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। এখানে র‌্যাব সদর দপ্তরের পক্ষ আমাদের তদন্ত সেল রয়েছে। ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তদন্তে দেখা হচ্ছে কারো কোনো ধরনের অবহেলা, গাফিলতি বা যোগসাজশ কিংবা অনৈতিক কিছু ছিল কিনা। তদন্তে যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে অতীতের ন্যায় চাকরিচ্যুতিসহ কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন। স্বজনদের অভিযোগ, আটক হওয়ার আগে সুলতানা জেসমিন সুস্থ ছিলেন। র?্যাবের হেফাজতে নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। ওই মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়