বিশ্বের সর্ববৃহৎ ‘সবুজ মানব প্রাচীর’ তৈরি করল জিএলটিএস

আগের সংবাদ

ভোটের হাওয়ায় জোটের মিশন

পরের সংবাদ

মাহে রমজানের পয়গাম : অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন

প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুস্বাগত পবিত্র মাহে রমজান। রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের পয়গাম নিয়ে হাজির হলো মাহে রমজানুল মুবারক। আত্মোপলব্ধি, আত্মসংযম, আত্মশোধন আর নিজেকে সব ধরনের কলুষতা হতে মুক্ত রেখে মহাসত্যের পথে আত্মপ্রতিষ্ঠার এক সুবর্ণ সুযোগের মাস পবিত্র রমজান। লালসা, কামনা, বাসনা, অসহনশীলতা, অসহিষ্ণুতা আর অমানবিকতার কবর রচনার ভিত সৃষ্টি করে দেয় রমজান। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অভাব, মুখাপেক্ষিতা আর বঞ্চিতের কষ্ট অনুধাবনের প্রকৃষ্ট মৌসুমও এই রমজান। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো আমাদের অজ¯্র কালিমা থেকে মুক্তিদানের তরে উপস্থিত হয়েছে পবিত্র রমজান; তাই তাকে নিষ্ঠার সঙ্গে স্বাগত ও মোবারকবাদ জানাই।
মানবতার পরম সুহৃদ মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) স্বয়ং পবিত্র এ মাসের প্রাক্কালে এর বরকতপূর্ণ আগমনী বার্তা ঘোষণা করতেন; যা রমজানের তাৎপর্যকে অধিকতর মহিমাময় করত। শাবান মাসের শেষ তারিখে তিনি মর্যাদাশীল ও বরকতমণ্ডিত এ মাসের খোশ আমদেদ জানান দিতেন; নাতিদীর্ঘ কথামালায় রমজানের কার্যাবলি ও মাহাত্ম্য বর্ণনা করতেন। মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য রমজান অনেক বড় এক নেয়ামত ও পুরস্কার বটে। তাই তিনি বলেন, লোকেরা যদি জানত, রমজান কি জিনিস, তাহলে সারা বছরই যেন এই রমজানের অনুশীলন থাকে সে জন্য আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করত। রমজানের সিয়াম সাধনা মানুষের অন্তঃকরণের আবর্জনা এবং যাবতীয় বিভ্রান্তি নিরসন করে দেয়।
পবিত্র কুরআনের ভাষ্যমতে, রমজান কোনো আকস্মিক বা নতুন ইবাদত-পদ্ধতির নাম নয়। ইতিহাসের নানা বাঁকে অপরাপর উম্মতের জন্যও এ রমজানের নির্দেশনা ছিল; যার মূল লক্ষ্য হলো তাকওয়া তথা খোদাভীতি অর্জন করা। মহান আল্লাহর যাবতীয় নির্দেশের ফরমাবরদারী এবং তাঁকে ভয় ও ভালোবাসার অনুভূতি অর্জিত হওয়াই রমজানের আসল উদ্দেশ্য। সর্বত্র পরাক্রমশালী মহান প্রভুর অস্তিত্ব ও তার ক্ষমতার বিশালত্বকে স্বীকৃতি দানের এক পরম যোগ্যতা নসিব হয় এই রমজানের মাধ্যমে। কেউ দেখে না কিন্তু আল্লাহ দেখেন, কেউ জানে না বা জানতে পারে না এমন সব বিষয় মহান আল্লাহ জানেন এবং সর্বদাই জানতে, সবকিছু বুঝতে, পর্যবেক্ষণ করতে সর্বোতভাবে তিনি সক্ষম- এই বোধ আমাদের মাঝে প্রবলতর হয় রমজানের মধ্য দিয়ে।
সীমাহীন বরকত আর পুণ্য লাভের মহিমাময় মাস পবিত্র রমজানকে আমাদের উচিত সত্যিকার অর্থে কাজে লাগানো এবং এ মাসের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করা। এ মাসে ইবাদতের ব্যাপারে আগ্রহ ও উদ্দীপনার সর্বোচ্চ ঘোষণাটি এসেছে মানবতার পরম বন্ধু বিশ্বনবী (সা.)-এর পক্ষ হতে। তিনি বলেছেন- মান সামা রামাদান ইমানান ওয়া ইহতিসাবান গুফিরা লাহু মা তাকাদ্দামা মিন যানবিহি অর্থাৎ যে ব্যক্তি বিশ্বাস ও কর্তব্য-নিষ্ঠার সঙ্গে মাহে রমজানের সিয়াম পালন করবে, তার জীবনের সমস্ত পাপকার্য ক্ষমার ঔদার্যে বিবেচনা করা হবে, মাফ করে দেয়া হবে। তাই আসুন আমরা সবাই রমজানের পবিত্রতা বজায় রাখি এবং সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আমাদের জীবনে এ মাসের সর্বোচ্চ কল্যাণ অর্জনে ব্রতী হই।
মাহে রমজানের প্রকৃত শিক্ষা আমাদের মাঝে প্রতিফলিত হোক, পবিত্র রমজান আমাদের জন্য বরকতময় হোক এবং সিয়ামব্রত পালনের মধ্য দিয়ে আমরা যথোপযুক্ত গুণাবলি ধারণপূর্বক নিজেদের সর্বোন্নত মানবসত্ত্বায় পরিণত করতে পারি- মহান আল্লাহ সবাইকে সে তাওফিক দান করুন (আমিন)।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়