বিশ্বের সর্ববৃহৎ ‘সবুজ মানব প্রাচীর’ তৈরি করল জিএলটিএস

আগের সংবাদ

ভোটের হাওয়ায় জোটের মিশন

পরের সংবাদ

ডিপিএলে অগ্নিঝরা বোলিং মাশরাফির

প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশের ক্রিকেটের প্রাণ ভোমরা ছিল সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার স্পর্শে বদলে যায় টাইগাররা। মাশরাফি বর্তমানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ থেকে দূরে থাকলেও ঘরোয়া লিগে নিয়মিত খেলেন। গতকাল ডিপিএলে তার আগুনঝরা বোলিংয়ে সামনে কোমড় সোজা করে দাঁড়াতেই পারেনি ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ব্যাটারা। মাশরাফির দুর্দান্ত ফাইফারে ৮০ রানে গুটিয়ে যায় তারা। জবাবে হেসে খেলে ১০ উইকেটের ব্যবধানে জিতেছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। এই জয় ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেটে লিগে এটা সবচেয়ে দ্রুততম জয়। এদিন ৮.৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১৭ রান খরচায় ৫ উইকেট শিকার করেন মাশরাফি। যার সুবাদে ম্যাচসেরাও হন তিনি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সপ্তমবারের মতো ফাইফারের স্বাদ পেলেন এই পেসার। এছাড়া সবচেয়ে বয়স্ক হিসেবেও এই কীর্তিতে নাম লেখান মাশরাফি। ৩৯ বছর ১৭৩ দিন বয়সে এই রেকর্ড গড়েন তিনি। এই ম্যাচ খেলতে নামার আগে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তার ছিল ৪৪৭ উইকেট, এখন ৪৫২টি। এবার ৫ উইকেটসহ প্রিমিয়ার লিগে ৪ ম্যাচে ১১টি উইকেট শিকার করেছেন মাশরাফি। ক্রিকেটপ্রেমীরা জানেন যে, দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেকবার ইনজুরি শিকার হন তিনি। এমনকি দুই হাঁটুতে সাতটি অস্ত্রোপচারও করতে হয়েছে। যাই হোক মাশরাফির বয়স কিন্তু থেমে নেই। আগামী অক্টোবরে তিনি পা দেবেন চল্লিশে। তবে মাশরাফি কাছে বয়স যেন নিছকই সংখ্যা, এই বয়সেও তিনি দুর্দান্ত। পায়ের ইনজুরি একজন পেস বোলারের জন্য বিপদজন। কিন্তু তার কাছে চোটও হার মেনেছে।
এদিকে বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে টস জিতে মোহামেডানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় মাশরাফির রূপগঞ্জ। শুরুতেই দলীয় তিন রানে অঅউট হন ওপেনার মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন।
এরপর মোহামেডানের হাল ধরেন সৌম্য সরকার-ইমরুল কায়েস। দলীয় ৫৩ রানে অঅউট হন সৌম্য। তিনি সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন। এরপর মাশরাফির দুর্দান্ত আক্রমণে মোহামেডানের রানের চাকা থেমে যায়। এদিন ১১ ওভারের শেষ বলে ইমরুল কায়েসকে বোল্ড করেন মাশরাফি। তার পরের ওভারে বোল্ড হয়ে ফেরেন ভারতীয় ব্যাটসম্যান অনুষ্টুপ মজুমদার। এরপর মোহামেডান একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে। মাশরাফির বল বুঝতেই পারেননি প্রতিপেক্ষের ব্যাটসম্যানরা। মোহামেডানের ৮১ রান তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৫০ বলে আধঘণ্টা না যেতেই জয় তুলে মাঠ ছাড়ে রূপগঞ্জ। প্রিমিয়ার লিগে এটি সবচেয়ে দ্রুততম জয়। পারভেজ হোসেন ইমন ৪টি করে চার-ছয়ে ২১ বলে ৪৪ ও মুনিম শাহরিয়ার ২৯ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জেতান।
এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচ খেলে সবকটিতে জয় পেয়েছে মাশরাফির দল। অন্যদিকে সমান ম্যাচে কোনো জয়ের দেখা না পাওয়া মোহামেডান হারের বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে। একমাত্র পয়েন্ট এসেছে বৃষ্টির সুবাদে। এর আগে মাশরাফির সুবাদে জয় দিয়ে ডিপিএল শুরু করে রুপগঞ্জ। নিজদের প্রথম ম্যাচে বৃষ্টি, আলোক স্বল্পতার ম্যাচে ডিএলএস পদ্ধতিতে ২০ রানে জিতেছে মাশরাফি বাহিনী। বৃষ্টির কারণে খেলা শুরুর পর ৪৪ ওভারে নেমে আসে ম্যাচ। নারায়ণগঞ্জের খান সাহেব ফতুল্লা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে আজিম নাজির কাজির সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে ২৪৩ রান অগ্রণী ব্যাংকের স্কোরবোর্ডে। আজিমের ১০২ রানের সঙ্গে সাদমান ইসলামের ব্যাটে ৬২ রান। ৪৪ ওভারে ২৪২ রানের লক্ষ্য ঠিক হয় লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের জন্য। ৩ উইকেটে ৩৮.৫ ওভারে ২১৫ রান তুলতেই আলোক স্বল্পতা। ফলে ডিএলএস পদ্ধতিতে ২০ রানে জিতে মাশরাফির দল। এই ম্যাচে ইরফান শুক্কুর অপরাজিত ছিলেন ৭১ রানে। সাব্বির রহমান করেন ৪৯ রান। রূপগঞ্জের হয়ে ৮ ওভারে ১ মেডেনসহ ২১ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেন মাশরাফির। তিনটি নেন ভারতীয় চিরাগ জানি।
এছাড়া পরের ম্যাচে তানজিদ হাসানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ব্রাদার্স ইউনিয়ন তিনশ রানের লক্ষ্য দেয় রূপগঞ্জকে। তার ১৪২ রানের ইনিংসে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রথম জয়ের স্বপ্ন দেখছিল ব্রাদার্স । কিন্তু চমৎকার বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়ে ঝড় তুলে তাদের হতাশ করলেন চিরাগ জানি। এই ভারতীয় অলরাউন্ডারের নৈপুণ্যে ৩ উইকেট জিতেছে রূপগঞ্জ। বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে আগে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ২৯৯ রান করে ব্রাদার্স। দলীয় ৪০ রানে মিজানুর রহমান বিদায় নিলে তানজিদ ৮০ রানের জুটি গড়েন সাব্বির হোসেনের সঙ্গে। এরপর আনিসুল ইসলাম ইমনের সঙ্গে ৬১ ও মায়শুকুর রহমানের সঙ্গে ৮৭ রানের জুটি গড়েন এই ওপেনার। যাইহোক ব্রাদার্সের তিনশ রানের জবাবে পারভেজ হোসেন ইমন ও ইরফান শুক্কুর শুরুটা ভালোই করেন। তার দুজন ব্যাট হাতে ঝড় তোলন। ইমন ৬৬ ও শুক্কুর ৫৩ রান করেন। ১৩৬ রানে ৩ উইকেট যাওয়ার পর শুক্কুর ও চিরাগের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। ৮৪ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ে ৯৪ রান করেন। জয় থেকে ৮ রান দূরে থাকতে আউট হন এই ভারতীয় ব্যাটার। শেষটা করে আসেন সোহাগ গাজী ও মুক্তার আলী। ৭ উইকেটে ৩০২ রান করে রূপগঞ্জ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়