১ মিনিট ‘ব্ল্যাকআউট’ : আলোর মিছিলে গণহত্যার স্বীকৃতি দাবি

আগের সংবাদ

পাঠ্যবই কেলেঙ্কারি : গোয়েন্দা নজরদারিতে ৪ কর্মকর্তা

পরের সংবাদ

রাষ্ট্রীয় মর্যাদা চান যুদ্ধ শিশু ছেপি খাতুন

প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মর্তুজা ফারুক রুপক, মেহেরপুর থেকে : স্বাধীনতার পর বীরাঙ্গনাদের পুনর্বাসনে এগিয়ে আসেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭২ সালে প্রতিটি জনসভায় বীরাঙ্গনাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি বীরাঙ্গনার সন্তানদের পিতার নাম জিজ্ঞেস করে, তবে বলে দিও তাদের পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। আর তাদের ঠিকানার পাশে লিখে দিও ধানমন্ডি ৩২ নম্বর।’ মূলত মুক্তিযুদ্ধের সময় লাঞ্ছিত, নির্যাতিত নারীদের বীরাঙ্গনা খেতাব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। অথচ মেহেরপুরের বীরাঙ্গনাদের স্থানীয় সমাজ তথা রাষ্ট্র মূল্যায়ন করেনি। স্বাধীনতা পরবর্তী এদের জীবন চলেছে কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে। বর্তমানেও এই কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন মেহেরপুরের বিরাঙ্গনা মুনজুরা খাতুনের মেয়ে ছেপি খাতুন। এই বীরাঙ্গনা কন্যার ভাগ্যে আজো জোটেনি স্বীকৃতি।
জানা গেছে, চিকিৎসার অভাবে ১৯৯৮ সালে মারা যান মুনজুরা খাতুন। পরে যুদ্ধ শিশু ছেপি খাতুন পড়েন সমাজের রোসানলে। পিতৃ পরিচয়হীন ছেপি খাতুনের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।
ছেপি খাতুন বলেন, ‘আমার মা একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছে। আমার জন্ম পাক সেনাদের ঔরসে। অথচ কোনো সরকারই আমার মায়ের আত্মত্যাগের মূল্য দেয়নি। দেয়নি তার ত্যাগের স্বীকৃতি। চিকিৎসার অভাবে মায়ের মৃত্যু এখনো আমাকে কষ্ট দেয়।’ এসব কথা বলতে বলতে ডুকরে কেঁদে ওঠেন ছেপি খাতুন।
দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে জন্ম হয় ছেপি খাতুনের। বর্তমানে কাশ্যব পাড়ায় বসবাস করলেও ছেপি জানান, তার পিতার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ঠিকানা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বীরাঙ্গনার কন্যাদের এই পরিচয়ে পরিচয় দেয়ার জন্য বলেছেন বলে লোকমুখে শুনেছেন তিনি। তাই তিনি এই পরিচয় বহন করেন।
সাংবাদিক তোজাম্মেল আযম বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মুনজুরাকে সমাজ মেনে নেয়নি। মেনে নেয়নি বাবা-মা ও আত্মীয়স্বজন। তবে সেসময় সিরাজুল ইসলাম নামে এক যুবক তাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেন। কিন্তু সেই সংসার বেশিদিন টেকেনি। পরবর্তীতে অর্থকষ্টে চিকিৎসার অভাবে ১৯৯৮ সালের ২৫ মে মারা যান মুনজুরা। মুনজুরা খাতুন মেহেরপুরের মণ্ডল পাড়ার কাঠফাড়ায়ের মিস্ত্রি ইছারদ্দির মেয়ে। এই বীরাঙ্গনার কন্যা ছেপি তার মাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার দাবি করেন। সেই সঙ্গে যুদ্ধ শিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা চান ছেপি খাতুন।
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল মালেক বলেন, ‘ছেপি খাতুনকে মর্যাদা দেয়া উচিত। মন্ত্রণালয়ে আবেদন করুক। আমরা সহযোগিতা করব।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়