১ মিনিট ‘ব্ল্যাকআউট’ : আলোর মিছিলে গণহত্যার স্বীকৃতি দাবি

আগের সংবাদ

পাঠ্যবই কেলেঙ্কারি : গোয়েন্দা নজরদারিতে ৪ কর্মকর্তা

পরের সংবাদ

কবিতায় গানে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে স্বাধীনতা উৎসব উদযাপন

প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রেরণাদায়ী গণসংগীতের উদ্দীপ্ত মুখরতায়, কবিতার দৃপ্ত উচ্চারণে, নৃত্যের ঝংকারে, গানের সুরে আর নাটকের সংলাপে শুধুই ছিল দেশের প্রতি ভালোবাসার কথা। পাশাপাশি স্বাধীনতার জন্য যারা প্রাণ উৎসর্গ করেছেন এদিন তাদেরও স্মরণ করা হয় বিন¤্র শ্রদ্ধায়। এছাড়া রাজধানীজুড়ে দেশমাতৃকার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে মঞ্চে মঞ্চে ছিল স্বাধীনতা দিবসের নানা আয়োজন।
শিল্পকলা একাডেমি : বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। সকালে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ ও আবৃত্তি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। একাডেমির সচিব সালাহউদ্দিন আহাম্মদের নেতৃত্বে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান একাডেমির কর্মকর্তা-শিল্পী-কর্মচারীরা। এর আগে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ ও আবৃত্তি অনুষ্ঠান। আব্দুল্লাহ বিপ্লব ও তামান্না তিথির উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই কবিতা পাঠ করেন দি রেইন, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতা বিষবৃক্ষের বীজ থেকে পাচু বিবির সংলাপ এবং বাতাসে লাশের গন্ধ। এরপর মজুমদার বিপ্লব উপস্থাপন করেন মুস্তফা আনোয়ারের কবিতা ‘বৈশাখের রুদ্র জামা’ এবং অসীম সাহার কবিতা ‘পৃথিবীর সবচেয়ে মর্মঘাতী রক্তপাত’। অনন্যা লাবণী পাঠ করেন মোশাররফ করিমের কবিতা ‘মারো মরো হারিয়ে যাও’ এবং নাসিমা সুলতানার ‘যুদ্ধে

যাওয়ার গল্প’। মিজানুর রহমান সজল আবৃত্তি করেন ‘স্বাধীনতা ভোর’, কবি সৈয়দ শামসুল হক এবং অসীম সাহার কবিতা ‘আমি স্বাধীনতার কথা বলছি’। লায়লা আফরোজ আবৃত্তি করেন কবি এলেন গ্রিন্সবার্গের ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’। মীর বরকত আবৃত্তি করেন কবি মোস্তফা তোফায়েল হোসেনের ‘মেহরুন’, আব্দুল্লাহ বিপ্লব আবৃত্তি করেন আহসান হাবিবের ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’, নায়লা তারান্নুম কাকলী আবৃত্তি করেন সৈয়দ শামসুল হকের ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘তোমারি তরে মা’ এবং পাঠ করেন তানভীর মোকাম্মেলের ‘পরিচয়’। আহসান উল্লাহ তমাল আবৃত্তি করেন কবি নির্মলেন্দু গুণের ‘স্বাধীনতা শব্দটি কী করে আমাদের হলো’ এবং শামসুর রাহমানের ‘অভিশাপ দিচ্ছি’। ‘প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে’ স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব সালাহউদ্দিন আহাম্মদ। পরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
ছায়ানট : কথায় গানে আর তথ্যচিত্র পরিবেশনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছে ছায়ানট। ছায়ানট মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী। এরপর ‘ও ভাই খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি’ সম্মেলক গান গেয়ে শোনান ছায়ানটের শিল্পীরা। এরপর একক গান ‘যদি মরণের পরে কেউ প্রশ্ন করে’ গেয়ে শোনান নুসরাত জাহান রুনা। রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ‘বাতাসে লাশের গন্ধ পাই’ একক আবৃত্তি করেন মাসুদুজ্জামান। বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী গেয়ে শোনান ‘সাঁঝের বেলায় পাখি ফিরে নীড়ে’, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ‘কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প’ আবৃত্তি করেন শামীমা সুলতানা তন্দ্রা, ‘মাগো ধন্য হলো জীবন আমার তোমায় ভালোবেসে’ একক গান গেয়ে শোনান সুমন মজুমদার। ‘আয়রে বাঙালি আয় সেজে আয়’ সম্মেলক গান গেয়ে শোনান ছায়ানটের শিল্পীরা। একক গান শোনান ডালিয়া নওশিন। এরপর সুমন দেলোয়ার নির্মিত তথ্যচিত্র ‘জলগেরিলা ৭১’ প্রদর্শনী হয়। ‘লাখো লাখো শহীদের রক্ত মাখা’ সম্মেলক গান এবং রীতি অনুযায়ী সব শেষে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
জাতীয় জাদুঘর : মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব ও দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক সেমিনার, আলোচনা সভা, দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর। জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত। আলোচক ছিলেন সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি : ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে। শিশু একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহাপরিচালক আনজীর লিটন। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, যারা অসা¤প্রদায়িক চেতনা বিশ্বাস করে না, এখনো যারা পাকিস্তানের প্রেমে মগ্ন, তাদের এ দেশে থাকার কোনো অধিকার নেই। তারা পাকিস্তানপ্রেমী, তারা পাকিস্তানেই চলে যাক। এ দেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয়েছে। জাতির পিতার নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে লাখো প্রাণের বিনিময়ে এবং লাখ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে।
এর আগে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল এবং মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর, জাতীয় মহিলা সংস্থা, জয়িতা ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের পুরস্কার প্রদান শেষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির শত শিশুশিল্পী পার্থ বড়–য়া ও নিশীতা বড়–য়াকে সঙ্গে নিয়ে ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গানটি পরিবেশন করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়