প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসের মতো জাতীয় দিবসগুলো আমার কাছে হালখাতার দিনের মতো। এই দিনগুলোর অর্জন এবং ব্যর্থতা- দুটোরই পরিমাপ করার প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে আমার মধ্যে মিশ্র অনুভূতি কাজ করে। বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে অকল্পনীয়, অভাবিত অগ্রগতি হয়েছে। বিশেষ করে অর্থনীতি এবং অবকাঠামোগত খাতে। এছাড়া বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী উন্নয়নে ঈষর্ণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। তবে অর্থনীতি এবং অবকাঠামোগত খাতে অগ্রগতি হলেই শুধু সামাজিক সূচকে অগ্রগতি হয় না। কারণ যে ধারার রাষ্ট্রগঠনের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, সেই ধারার সমাজ ও রাষ্ট্র পশ্চাদপদ ঘটেছে বলে আমার আশঙ্কা হয়। যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছি- সেক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে গেছি। ধর্মের নামে পাকিস্তান আমলে সমাজে বিভাজন হয়েছিল, সেই ধর্ম বিদ্বেষ বেড়েছে। বর্ণ বৈষম্য বেড়েছে। জঙ্গির সর্বগ্রাসী বিস্তার সমাজে অস্থিরতার জন্ম দিচ্ছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, ধর্মের যে উগ্রবাদী ব্যাখ্যা পাকিস্তান আমলে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করত, বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পায় না বটে, তবে সামাজিক ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এর প্রভাব আমরা ব্যক্তি জীবনে লক্ষ্য করছি।
একদিকে ধর্ম বিদ্বেষ, ধর্ম বৈষম্য ও লোভের বিস্তার; অন্যদিকে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষের আত্মকেন্দ্রিকতা, উদাসীনতার কারণে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের যে প্রত্যাশিত ধারার রাষ্ট্রগঠনের থেকে পথভ্রষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের যেমন দায় আছে; তেমনি সমাজেরও দায় আছে। বাঙালি জাতীয়বাদের যে আন্দোলন হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে, সেই সময় আপামর জনগণ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল- ওই সময় সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড অত্যন্ত বেগবান ছিল। এখনো একটি সাংস্কৃতিক জাগরণের বড় প্রয়োজন। সমাজকে জাগানোর জন্য, ঘুমন্ত মানুষকে জাগানোর জন্য। সামাজিক অবক্ষয় রোধ করার জন্য। নারী-পুরুষের সুস্থ-স্বাভাবিক সম্পর্ক লালন করার জন্য।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।