প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা : রাখী দাশ পুরকায়স্থ ছিলেন আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক

আগের সংবাদ

বধ্যভূমি দেখার দায়িত্ব কার : সারাদেশে ৫ হাজারের বেশি বধ্যভূমি, ২২ বছরে ২০টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ হয়েছে

পরের সংবাদ

২৪ ঘণ্টায়ও গ্রেপ্তার নেই : বাউফলে দুই শিক্ষার্থী খুনের বিচার দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর বাউফলের সূর্যমণি ইউনিয়নের ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের দুই শিক্ষার্থী মো. মারুফ হোসেন বাপ্পি (১৭) ও নাফিস মোস্তফা আনসারীকে (১৬) প্রকাশ্যে খুনের ঘটনায় স্বজন ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণসহ পুরো এলাকা। গত বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী গ্যাংয়ের ধারালো চাকুর উপর্যুপরি আঘাতে ওই দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজন গুরুতর জখম হয়। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারুফ ও নাফিসের মৃত্যু হয়। সিয়াম নামে অপর এক শিক্ষার্থী জখম হয়ে বাউফল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরজমিন দেখা গেছে, দুই শিক্ষার্থী খুনের ঘটনায় ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সহপাঠী ও শিক্ষকদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। গগনবিদারি কান্নায় যেন আকাশ বাতাস স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। সহপাঠী ও স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, গত বুধবার বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়েমের সঙ্গে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সৈকতের ধাক্কা লাগে। এটা নিয়ে উভয়ের মধ্যে মৃদু কথা কাটাকাটি হয়। বিকাল ৪টার দিকে স্কুল ছুটি হলে একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র সায়েম, রায়হান, হাসিবুল, নায়িম-১ এবং নায়িম-২ বিদ্যালয় থেকে অনতিদূরে পাঙ্গাশিয়া ব্রিজের দক্ষিণ পাশে অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে সিয়াম, নাফিস ও মারুফ ওই ব্রিজ পার হয়ে বাড়ি যাচ্ছিল।
এ সময় আগে থেকে অবস্থান নেয়া ওই পাঁচ শিক্ষার্থী চাকু দিয়ে দশম শ্রেণির ওই তিন শিক্ষার্থীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে স্থানীয়রা গুরুতর জখম ওই তিন শিক্ষার্থীকে বাউফল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে নাফিস ও মারুফকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহত দুই শিক্ষার্থীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিহতদের বাড়িতে নিয়ে আসা হবে এবং পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এদিকে হত্যার ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হয়ে গেলেও পুলিশ এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসী। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, দুজন মেধাবী ছাত্রকে প্রকাশ্য দিবালোকে নিমর্মভাবে হত্যার পর ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কিন্তু পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এটা দুঃখজনক।
নিহত দুই শিক্ষার্থীর সহপাঠি সাজিদুল ইসলাম রুদ্র (১৬), জাহিদুল ইসলাম (১৬) ও রাবেয়া বসরি (১৫) বলেন, আমাদের দুই বন্ধুকে কিশোর গ্যাং গ্রুপ সুইজগিয়ার চাকু দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এটা তাদের ব্যর্থতা। আজকের মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করতে হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, পুলিশের ভূমিকায় আমরা হতাশ। ঘটনার পর দীর্ঘসময় পার হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। অতিদ্রুত দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি করছি। বাউফল থানার ওসি মো. আল মামুন বলেন, দোষীদের গ্রেপ্তার করতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। গোয়েন্দা বিভাগসহ পুলিশের কয়েকটি ইউনিট মাঠে কাজ করছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়