প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা : রাখী দাশ পুরকায়স্থ ছিলেন আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক

আগের সংবাদ

বধ্যভূমি দেখার দায়িত্ব কার : সারাদেশে ৫ হাজারের বেশি বধ্যভূমি, ২২ বছরে ২০টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ হয়েছে

পরের সংবাদ

ক্যাব ও নাগরিক উদ্যোগের প্রচারণা : অসাধু মজুতদারদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান

প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : রমজান মাসে ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখার দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ( ক্যাব) ও নাগরিক উদ্যোগ চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার নগরীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজারে জনসাধারণ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য তারা প্রচারণা চালিয়েছেন। পাশাপাশি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ভোক্তাদের একসঙ্গে বেশি ভোগ্যপণ্য ঘরে কিনে মজুদ না করারও আহ্বান জানান।
দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ বাজারে ক্যাব চট্টগ্রামের বাজার ভিত্তিক প্রচারণা কর্মসূচিতে বক্তারা রমজান মাসের বাজার একসাথে না করা, ইফতার সামগ্রীর পরিবর্তে নগদ অর্থ বিতরণ ও অতিমুনাফা আদায় থেকে সংযম প্রদর্শন এবং ইফতারিতে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের আহ্বান।
পবিত্র রমজান মাসে পণ্য-দ্রব্য ক্রয়ে সংযমের পরিচয় প্রদানের জন্য মাসের বাজার একসঙ্গে না করে সপ্তাহের বাজার করা, দরিদ্রদের মাঝে নিত্যপণ্যের বাজার জোগান ও সরবরাহ ঠিক রাখতে ইফতার সামগ্রী বিতরণের পরিবর্তে নগদ অর্থ বিতরণ করা হলে পণ্যের সরবরাহ ও জোগানে ঘাটতি হবে না। বাজারের দোকানগুলোতে মূল্য তালিকা না থাকলে, কেউ অতি মুনাফা করলে বা হয়রানি করলে, অবৈধভাবে মজুত করলে ভোক্তা অধিদপ্তরের হটলাইন নম্বর ১৬১২১, জেলা প্রশাসন ও ক্যাবের নম্বরে জানানোর আহ্বান জানানো হয়। অন্যদিকে পবিত্র মাহে রমজান এলেই দেশের কিছু ধনাঢ্য ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতা করে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করে থাকেন। কিন্তু পুরো রমজান মাসজুড়ে সাধারণ দরিদ্র মানুষ যেন ইফতার ও সেহেরী সাশ্রয়ী মূল্যে খেতে পারেন তার জন্য কিছু করার আহ্বান জানানো হয়েছে। গতকাল সকালে দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ বাজার, টেরিবাজার ও বক্সিরহাট বাজারে অনুষ্ঠিত বাজারভিত্তিক প্রচারণা কর্মসূচিতে উপরোক্ত আহ্বান জানানো হয়।
কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম ও ক্যাব যুব গ্রুপের উদ্যোগে গণঅবস্থান ও বাজারভিত্তিক প্রচারণার অংশ হিসাবে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন। ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় গণঅবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, ক্যাব মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ জানে আলম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ব্যবসায়ীরা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, ডলার ও এলসির সংকটসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা একবার সয়াবিন, একবার পেঁয়াজ, একবার ডাল, আটা-ময়দা এভাবে প্রতিটি পণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছেন। গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীর এধরনের কারসাজি ও অতিমুনাফা এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের কালক্ষেপণে সরকারের সব অর্জনকে ¤øান করে দিচ্ছে। পাশাপাশি ভোক্তাদের অধিক পরিমাণ পণ্য না কেনারও আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে চট্টগ্রাম নগরীর চৌমুহনী বাজারে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য নাগরিক উদ্যোগ, চট্টগ্রামর উপদেষ্টা ও চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন প্রচারণা চালান। এসময় তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে ভোগ্যপণ্যের কোনো সংকট নেই। পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে এবং সরবরাহও স্বাভাবিক রয়েছে। তাই এ ধারা যে কোনো মূল্যে ধরে রাখতে হবে। বিশেষ করে ক্রেতারা যদি দুই দিনের বেশি ইফতারির পণ্য ক্রয় না করেন তাহলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের সব অপকর্ম বিফলে যাবে।

তিনি বলেন, আমরা সচরাচর দেখতে পাই রমজান আসলে ক্রেতাদের মাঝে একসঙ্গে বাজার করার একটা প্রবণতা থাকে। ক্রেতারা মনে করেন একসঙ্গে বাজার করলে সম্ভবত তিনি জিতে যাবেন, কারণ পরবর্তীতে পণ্যের দাম বাড়লে সেটা তার গায়ে লাগবে না। এ ধরনের মনোবৃত্তির কারণে সবাই একসঙ্গে বাজার করতে শুরু করেন। এর ফলে বাজারে একটা বিশাল চাপ পড়ে। যে কারণে অনেক সময় স্বাভাবিক সরবরাহেও বিঘœ ঘটে। তাই কোনোভাবেই একসঙ্গে বাজার করে রাখা সমীচীন নয়। এর ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে উৎসাহিত হয় এবং বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে ক্রেতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
সাবেক এই চসিক প্রশাসক ক্রেতাদের মাঝে মাইকে উৎসাহমূলক প্রচারণার পাশাপাশি প্রচারপত্রও বিলি করেন। এসময় তিনি চৌমুহনী বাজারের বিভিন্ন দোকানে দুই ধরনের দাম প্রত্যক্ষ করেন। উপস্থিত ব্যবসায়ীরা এসময় সুজনকে সিন্ডিকেটের হাত থেকে বাঁচাতে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান এবং এ সংক্রান্ত তথ্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জানানোর অনুরোধ জানান। সুজন এসময় ব্যবসায়ীদের কাছে ব্রয়লার মুরগির অত্যধিক দামের কারণ জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন। তারা বলেন, এ মৌসুমে কোনোভাবেই প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৭০ টাকার উপরে থাকার কথা নয়। কিন্তু মুরগির বাচ্চার আমদানিকারক এবং মুরগির খাদ্য করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সিন্ডিকেট করে রাখায় বাজারে ব্রয়লার মুরগির এই উচ্চমূল্য।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়