আশালতা : নজরুলের উত্থান-পতনময় জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য নাম

আগের সংবাদ

বর্ষায় জলাবদ্ধতার আশঙ্কা চট্টগ্রাম নগরবাসীর : চসিক-চউক ব্যস্ত দোষারোপে

পরের সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে বাউফলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ : আহত ২০

প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : বাউফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপনকে কেন্দ্র করে পুলিশ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও এমপির অনুসারীদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ লাঠিচার্জ ও ২০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান, পুলিশ ও সাংবাদিকসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে ওই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে পৌর শহরের মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার একটি শোভাযাত্রা নিয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে আসেন। এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় জনতা ভবন থেকে স্থানীয় এমপি আ স ম ফিরোজের অনুসারীরা শোভাযাত্রা বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। পুলিশ দুপক্ষের সংঘাত এড়াতে উপজেলা চেয়ারম্যানকে তার শোভাযাত্রাটি সামনের দিকে না নিয়ে উপজেলা চত্বরে অবস্থানের অনুরোধ করেন। কিন্তু এক পর্যায়ে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীরা সামনের দিকে এগিয়ে গেলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যানসহ উভয়পক্ষের প্রায় ১০ জন এবং এক সাংবাদিক আহত হন। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তাদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ফেস্টুনের সঙ্গে থাকা লাঠির আঘাতে ওসিসহ ৯ পুলিশ আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ এবং পরে শর্টগানের ২০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল আমিনসহ পুলিশের একটি দল রাস্তায় টহল দিয়ে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ তাদের নিয়ন্ত্রণে নেন।
বাউফল থানার ওসি মো. আল মামুন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা জানান, উপজেলা চেয়ারম্যানের বুকে এবং আঙুলে কাটা দাগ রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, পূর্বঘোষিত বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের শোভাযাত্রায় অংশ নিতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় জনতা ভবনে সমবেত হন। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শোভাযাত্রাটি বের করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান এই সংঘাতের সৃষ্টি করেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আওয়ামী লীগ কার্যালয় জনতা ভবন থেকে সমবেত নেতাকর্মীদের নিয়ে আ স ম ফিরোজের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে পাবলিক মাঠ পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রার প্রাক্কালে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আ স ম ফিরোজ বলেন, যারা কোনো দিন জয়বাংলা স্লোগান দেয়নি, যারা বঙ্গবন্ধু এবং প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করে তাদেরকে নিয়ে একটি চক্র আওয়ামী লীগের পূর্বনির্ধারিত শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। তিনি ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। এসময় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শান্তিপ্রিয় এবং মানুষের ভালোবাসার দল। দুষ্টলোকের কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না।
বেলকুচিতে দুগ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৫ : হেলাল উদ্দিন, সিরাজগঞ্জ থেকে জানান, সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দেয়া ও ব্যানারে এমপির নাম না থাকাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল মমিন মণ্ডল এবং সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেগম আশানুর বিশ্বাসের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধলে উভয়পক্ষের ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বেলকুচি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। তবে দলীয় ব্যানারে এমপির নাম না থাকাকে কেন্দ্র করে ব্যানার ছিড়ে ফেলা ও হামলার ঘটনায় স্থানীয় এমপির ওপর ক্ষুব্ধ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতাকর্মীরা।
বেলকুচি থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানীয় এমপি ও দলীয় নেতাকর্মীরা জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন শেষে দলীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেয়ার প্রস্তুতিকালে দলীয় কার্যালয়ে টানানো ব্যানারে এমপির নাম না থাকাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ হয়। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি। উভয় গ্রুপকেই দলীয় কার্যালয় থেকে সরিয়ে দেই। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়