সাভারে সাংবাদিকের গাড়িতে দুর্বৃত্তদের হানা

আগের সংবাদ

তিন কলেজের শিক্ষার্থীর সংঘর্ষ সায়েন্স ল্যাবে : ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা

পরের সংবাদ

পলিথিন আর চটে ঢাকা মূল্যবান দলিল : ৫৫ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া নেই সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে

প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি : দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে জরাজীর্ণ অফিস ও স্টোর রুম। টিনের চালে হাজার হাজার ফুটো। সামান্য বৃষ্টি হলেই দৌড়াদৌড়ির ওপর থাকতে হয় অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। পলিথিন আর চট দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে মূল্যবান দলিল ও কাগজপত্র। প্রতি বছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করলেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি পীরগাছা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে। অথচ দলিল লেখকরা হলফনামার নামে প্রতি বছর প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের ষড়যন্ত্র ও অনীহার কারণে সরানো যাচ্ছে না পীরগাছা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম। পীরগাছা উপজেলা পরিষদের ভেতর এ অফিসের কার্যক্রম চালানোর দাবি জোরালো হলেও নীরব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, ১৯৬৭ সালে নির্মিত পীরগাছা উপজেলার পাকার মাথা রাজবাড়িতে টিনশেড ঘরে মাসিক ৬ হাজার টাকায় ভাড়ায় চলছে পীরগাছা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম। এর পাশেই খোলা আরেকটি টিনশেড ঘরে বসেন দলিল লেখকরা। দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে অফিসটিতে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। হয়নি সংস্কার। ঘরের চালের টিনগুলোতে হাজার হাজার ফুটো। অবকাঠামো মরিচা ও ঘুণে ধরে জরাজীর্ণ হয়ে আছে। পলিথিনে ঢেকে রাখা হয়েছে মূল্যবান কাগজপত্র, ভলিউম বই ও দলিল। বৃষ্টির পানি পড়ে অনেক কাগজপত্র নষ্ট হয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বৃষ্টির পানি পড়া ও জায়গার অভাবে ২০১০ সালের আগের সব দলিল ও বালাম বই রংপুর জেলা কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। বেশ কয়েক বার সাব-রেজিস্ট্রি অফিস অন্যত্র সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হলেও দলিল লেখকদের বাধার কারণে সরানো যাচ্ছে না। ফলে রেজিস্ট্রেশনবিহীন দলিল লেখক সমিতির নামে চলছে রমরমা ব্যবসা। কথিত ওই সমিতির ১০০ সদস্য প্রতি মাসে হলফনামার নামে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। দলিল লেখকরা প্রতি দলিলে ৩০০ টাকা হলফ ও ৫০ টাকা খরচ বাবদ দিয়ে প্রতি দলিলে জমি দাতা ও গ্রহিতাদের কাছ থেকে আদায় করছেন ২ হাজার টাকা। সেই হিসাবে গত ২০২২ সালে জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ হাজার ৭০টি হলফনামা বিক্রি করে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে। একটি চিরকুট লিখে দিয়ে হলফের নামে ২ হাজার টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন কয়েকজন দলিল লেখক। যা পরবর্তীতে গোটা উপজেলাজুড়ে হইচই ফেলে দেয়। এসব টাকার বড় একটি অংশ জেলা সাব-রেজিস্ট্রার পান বলে দলিল লেখকরা প্রকাশ বলে বেড়ান। দলিল করতে আসা হযরত আলী ও রফিকুল ইসলাম বলেন, ৩০০ টাকার হলফনামা দিয়ে সমিতির নামে নেয়া হচ্ছে ২ হাজার টাকা। কেউ ঠিকমতো হিসাব দেন না। বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে তারা টাকা আদায় করেন।
অপর ব্যক্তি হামিদুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম বলেন, বেশ কিছু উপজেলা পরিষদের ভেতরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম চালানো হলেও পীরগাছায় ব্যতিক্রম। এখানে উপরের নির্দেশে সব চলে। তাই অফিস সরছে না। এ ব্যাপারে দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, অন্য জায়গায় আরো বেশি নেয়। সাব-রেজিস্ট্রার তিথি রাণী মণ্ডল বলেন, অফিসের অবস্থা খুবই নাজুক। পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে মূল্যবান দলিলপত্র।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়