সাভারে সাংবাদিকের গাড়িতে দুর্বৃত্তদের হানা

আগের সংবাদ

তিন কলেজের শিক্ষার্থীর সংঘর্ষ সায়েন্স ল্যাবে : ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা

পরের সংবাদ

তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে অসংখ্য ডুবোচর : দশমিনায় নৌচলাচল বন্ধের আশঙ্কা

প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বিপুল কর্মকার, দশমিনা (পটুয়াখালী) : দশমিনা উপজেলার তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে অসংখ্য চর জেগে ওঠায় স্থানীয় নৌ-রুট বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উপজেলার পশ্চিমে চরবাঁশবাড়িয়া ও দক্ষিণে চরফাতেমার মধ্যে তেঁতুলিয়ার বুক চিরে জেগে উঠেছে চরআজমাইন, দশমিনার হাজির হাট লঞ্চঘাট ও চরবাঁশবাড়িয়ার অংশে জেগে উঠেছে চর আদিব। চরহাদীর উত্তর-পূর্ব পাশে জেগে উঠেছে লালচর, পশ্চিমে জেগে উঠেছে চরকাউয়া ও চরশাহজালালের পশ্চিমে বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে জেগে উঠেছে চরসামাদসহ অসংখ্য ছোট বড় চর। চর জেগে ওঠার কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নদীতে আটকে থাকতে হয় যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোকে। দীর্ঘ সময় আটকে থাকে পণ্যবাহী জাহাজ ও কার্গো। চর জেগে ওঠার কারণে এক সময়ের খড়স্রোতা নদী দুটোর নাব্য হ্রাস পেয়ে নদী-তীরবর্তী জেলে পল্লীসহ নৌ-চলাচলে নেমে এসেছে অনিশ্চয়তা। শুকনো মৌসুমে পানি কমে গেলে নদী দুটির অবস্থা আরো প্রকট আকার ধারণ করে। উপকূলীয় দশমিনা, গলাচিপা, বাউফল ও কলাপাড়ার মানুষ বাণিজ্যিক ও যাতায়াত মাধ্যম হিসেবে নদীপথকে বেছে নেয়।
জানা যায়, দশমিনা উপজেলা থেকে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক ছোট বড় যাত্রীবাহী লঞ্চ ঢাকা, বরিশাল ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করে।
বিলাসবহুল অ্যাডভেঞ্চার-১১ লঞ্চের সুপারভাইজার নয়ন হোসেন জানান, তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর বুকে জেগে ওঠা চরের কারণে পাঁচ ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় লঞ্চ চালিয়ে গন্তব্য স্থানে পাড়ি জমাতে হচ্ছে। এছাড়া ভাটার সময় ডুবোচরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লঞ্চ আটকে থাকে। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। নদী দুটোতে চর জেগে ওঠার কারণে আগের নৌ-রুট প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া নদীর ৮০ শতাংশ এলাকাজুড়ে অসংখ্য ভাসমান ও ডুবোচর থাকায় বাঁশের লগি দিয়ে পানি মেপে লঞ্চের গতিপথ নির্ধারণ করতে হচ্ছে। এ কারণে যেকোনো মুহূর্তে নৌ-দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
নদী দুটোর গভীরতা হ্রাস পাওয়ায় এক সময়কার ইলিশ আশ্রম-খ্যাত তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদী তার সুপ্রাচীন ঐতিহ্য হারাচ্ছে। ড্রেজিং না করার ফলে প্রতি বছরই শত শত টন পলি এসে নদীর তলদেশে জমা হওয়ায় তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে ড্রেজিং না করালে দশমিনা, বাউফল, গলাচিপা ও ভোলার লালমোহন, চরফ্যাশনের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হয়ে অনিশ্চয়তা নেমে আসতে পারে উপকূলীয় হাজার হাজার জেলে পরিবারে।
দশমিনা উপজেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মো. নুরুল হক হাওলাদার বলেন, নদী দুটিতে অতি দ্রুত ড্রেজিং না করালে উপকূলীয় এলাকার ১০ হাজার জেলে বেকার হয়ে অনিশ্চয়তা নেমে আসতে পারে তাদের পরিবারে। পটুয়াখালী নদীবন্দর কর্মকর্তা (উপ-পরিচালক) মো. মামুন অর রশিদ বলেন, লঞ্চ কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে নদী ড্রেজিংয়ের জন্য আবেদন করলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এসএম শাহজাদা বলেন, পায়রা সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর সংযোগ চ্যানেল থাকায় বর্তমান সরকার নদী দুটো দ্রুত ড্রেজিংয়ের আওতায় আনবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়