উপাচার্য ড. মশিউর রহমান : সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে অপসংস্কৃতি রুখতে হবে

আগের সংবাদ

সংস্কারের বিরূপ প্রভাব বাজারে : আইএমএফের শর্ত মেনে গ্যাস-বিদ্যুতে ভর্তুকি প্রত্যাহার করায় সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়েছে

পরের সংবাদ

পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক গাড়ি

প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বর্তমান বিশ্বের অনেক দেশই বৈদ্যুতিক গাড়ির দিকে ঝুঁকছে। গত এক দশকে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণশিল্পে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে টেসলা, রিভিয়ান, এনআইওর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রচলিত দ্রুতগতির গাড়ি প্রস্তুতকারক ভলভো, জিএম, নিসান এবং ফোর্ড ও বাজারে এনেছে বৈদ্যুতিক গাড়ির পসরা। নরওয়ে, জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলোতেও দ্রুত বাড়ছে বৈদ্যুতিক গাড়ি কেনার হার। বর্তমানে চীনে বৈদ্যুতিক গাড়ি কেনায় ৫ বছর আগের হিসাবে সুবিশাল বাজার রয়েছে, যার হার প্রায় ২৮ শতাংশ। আসলে বৈদ্যুতিক গাড়ি বা বাহন এমন এক ধরনের পরিবহন, যা এক বা একাধিক বৈদ্যুতিক মোটর দ্বারা চলে এবং রিচার্জেবল ব্যাটারিতে সঞ্চিত শক্তি ব্যবহার করে পরিচালিত হয়। ইউরোপ-আমেরিকাসহ সারা বিশ্বেই বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বাড়ছে এবং নানাভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে। ভারতে বৈদ্যুতিক গাড়ির জগতে বিশ্ববিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টাটা তিন বছর আগেই এসেছে। বাংলাদেশও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কার্বন নিঃসরণ কমাতে ব্যাটারি তথা বিদ্যুৎচালিত গাড়ি বাজারে আনার কাজ শুরু করেছে।
বৈদ্যুতিক গাড়ির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি পরিবেশবান্ধব। তাই এটি ব্যবহারে পরিবেশের কম ক্ষতি হয়। তাই বৈশ্বিক উষ্ণতা, জ¦ালানির মূল্যবৃদ্ধি, কালো ধোঁয়া নির্গমন এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির কাছে আরও অনেক সমস্যার সমাধান রয়েছে। বিশ্বের মধ্যে বাষুদূষণের শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার অবস্থান সবার ওপরের দিকে। তাই ঢাকার মতো শহরের জন্য বৈদ্যুতিক গাড়ি বড় সুবিধা হতে পারে। পরিবেশের সুরক্ষার কথা চিন্তা করলে প্রচলিত জ¦ালানিচালিত গাড়ির চেয়ে বৈদ্যুতিক গাড়ি অনেক ভালো। তবে বৈদ্যুতিক গাড়ির কিছু নেতিবাচক দিকও আছে। ভোক্তাদের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গ্যাসচালিত গাড়ির তুলনায় বৈদ্যুতিক গাড়ির দাম ১০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি। যদিও গতানুগতিক গাড়ির তুলনায় বৈদ্যুতিক গাড়ির অন্য সব খরচ সীমিত ও এটি পরিবেশবান্ধব, তবে এর এককালীন ক্রয়মূল্য অনেক বেশি।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সরকার নতুন একটি অটোমোবাইল নীতিমালা প্রণয়ন করেছে, যার লক্ষ্য পরিবেশবান্ধব যানকে পরিবহন ব্যবস্থায় বেশি করে অন্তর্ভুক্ত করা। ২০৩০ সাল নাগাদ অন্তত ১৫ শতাংশ নিবন্ধিত বৈদ্যুতিক গাড়ির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা-২০২০-এর খসড়ায় আরো বলা হয়েছে, জ¦ালানিসাশ্রয়ী যানবাহন (ইইভি) প্রস্তুতের পেছনে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর অবকাশের (ট্যাক্স হলিডে) সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটিও ইতোমধ্যে এসব গাড়ির নিবন্ধন দিতে শুরু করেছে। তবে বৈদ্যুতিক গাড়ি ক্রয়ের সময় ব্যাটারির বিষয়ে একটু সচেতন হতে হয়। বৈদ্যুতিক গাড়িতে ব্যাটারি থাকে। ব্যবহার করার ফলে গাড়ির ব্যাটারি প্যাকটি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয় এবং ব্যয়ের ক্ষেত্রে এটি এক বিরাট বড় ধাক্কা। প্রতিনিয়ত চার্জ দেয়ার ফলে ব্যাটারিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তখন ব্যাটারি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়। তবে সময়ের প্রয়োজনে বাড়ছে পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা ও আগামীতে এরাই রাস্তা দখল করবে।

মো. জিল্লুর রহমান : ব্যাংকার ও লেখক
সতিশ সরকার রোড, গেণ্ডারিয়া, ঢাকা।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়