মহাখালীতে অভিযান : তিন রেস্টুরেন্টকে তিন লাখ টাকা জরিমানা

আগের সংবাদ

শ্রমবাজারে সম্ভাবনার হাতছানি : সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় সংকট দেখা দিলেও ইউরোপে সম্ভাবনার হাতছানি

পরের সংবাদ

৫ জেলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড ১৮ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : হত্যা মামলায় মেহেরপুরে কৃষক লীগ নেতাসহ ৮ জনকে এবং খুলনায় ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অপরদিকে সুনামগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে একজনকে মৃৃত্যুদণ্ড এবং পৃথক ধর্ষণ মামলায় ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, জয়পুরহাটে স্ত্রী হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড এবং নাটোরে স্ত্রী হত্যায় স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। কাগজ প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
মেহেরপুর : মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ধলা গ্রামের এনামুল হক নইলি হত্যা মামলায় উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আতিয়ার রহমানসহ ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার করে জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ রায় দেন।
দণ্ডিত আসামিরা হলেন- গাংনীর রামকৃষ্ণপুর ধলা গ্রামের ছফিতুল্লাহর ছেলে উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান, একই গ্রামের মহব্বত আলীর ছেলে ছামিদুল ইসলাম, রহমতুল্লাহর ছেলে শাহার আলী, সাহার আলীর ছেলে টিপু সুলতান, গোলাম মোস্তফার ছেলে আব্দুল খালেক, আহাম্মদ আলীর ছেলে আক্তারুজ্জামান আক্তার, জামান আলীর ছেলে আব্দুল মান্নান এবং আজিত বকসের ছেলে জিল্লুর রহমান।
জানা গেছে, শত্রæতা জের ধরে ২০১৭ সালের ২৯ জুলাই গাংনীর ধলা গ্রামে ঈদগাহ মাঠের কাছে রামকৃষ্ণপুর ধলা গ্রামের আক্কাচ আলীর ছেলে এনামুল হক নইলির উপর হামলা চালানো হয়। হামলায় তিনি মারাত্মক আহত হন। চিকিৎসার জন্য তাকে প্রথমে মেহেরপুর হাসপাতালে পরে রাজশাহীতে রেফার করা হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত নইলির ভাই আজমাইল হোসেন টুটুল বাদী হয়ে আতিয়ার রহমান, ছামিদুল ইসলাম, শাহার আলী, টিপু সুলতান, আব্দুল খালেক, আক্তারুজ্জামান আক্তার, আব্দুল মান্নান ও জিল্লুর রহমানকে আসামি করে গাংনী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত কর্মকর্তা গাংনী থানার এসআই মাহাতাব উদ্দিন এবং পরে সিআইডির এসআই হাসান ইমাম তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। খুলনা : খালিশপুর থানা এলাকার শেখ আজিজুল ইসলাম হত্যা মামলায় ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাহমুদা খাতুন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শেখ মশিউর, মো. আসলাম হোসেন লিটন, মো. সুইট, আশ্রাফুল, মো. সহিদ ও মো. মিন্টু। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী আবুল কালাম আজাদ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃৃৃত্যুদণ্ড এবং এবং ধর্ষণের দায়ে তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সুনামগঞ্জের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার গলহা গ্রামের মৃত বিধ্যাধর রায়ের ছেলে বিনয় রায়, তাহিরপুর উপজেলার উজান তাহিরপুর গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে আবিদ হোসেন রিমন (২৪) এবং দোয়ারাবাজার উপজেলার তেরা গ্রামের কলমদর আলীর ছেলে সামছু মিয়া ওরফে সামছুদ্দিন মিয়া (৪০), একই গ্রামের ওয়ারিছ আলীর ছেলে রফিক মিয়া ওরফে রফিক আলী।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে বিনয় রায়ের সঙ্গে ময়না রায়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই বিনয় যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন। ওই বছরের ৩০ জুলাই যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে মারপিট করেন বিনয়। আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই মারা যান ময়না। এ ঘটনায় নিহতের বোন বাদী হয়ে মামলা করেন।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উজানতাহিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্রীকে বাড়িতে একা পেয়ে ধর্ষণ করেন রিমন। এছাড়া ২০১৪ সালের মার্চ মাসে সন্ধ্যায় দোয়ারাবাজার উপজেলার ঘিলাতলী গ্রামে মায়ের সামনে ধানক্ষেতে মেয়েকে ধর্ষণ করেন রফিক আলী ও সামছুদ্দিন মিয়া। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার রমিজা আক্তার বাদী হয়ে দোয়ারাবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন।
নাটোর : নাটোরের লালপুরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আব্দুল জব্বার নামে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার নাটোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শরীফ উদ্দীন এই রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুল জব্বার লালপুর উপজেলার মোহরকয়া পশ্চিম পাড়া এলাকার ইসাহাক আলীর ছেলে।
২০২০ সালের ১৭ জুলাই দ্বিতীয় বিবাহ করা নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে আব্দুল জব্বার তার স্ত্রী স্মৃতি খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহ বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দেন। পরদিন সকালে মরদেহ উদ্ধারের পর স্মৃতির বাবা তসলিম আলী বাদী হয়ে আব্দুল জব্বারের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন। সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে গতকাল আব্দুল জব্বারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত।
জয়পুরহাট : জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে লাইলি বেগম নামে এক প্রসূতি নারীকে হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ মামলায় দুজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এ রায় দেন জয়পুরহাটের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক আব্বাস উদ্দীন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জুয়েল হোসেন (৪৫) জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার রসুলপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।
২০০৫ সালে ক্ষেতলাল উপজেলার রসুলপুর গ্রামের দাহার আদর্শ (গুচ্ছগ্রাম) গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে জুয়েলের সঙ্গে লাইলির বিয়ে হয়। বিয়ের পর জুয়েল ও তার বাবা-মা যৌতুকের জন্য লাইলিকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। ২০০৭ সালের ২৪ জুলাই সকালে লাইলির মৃত্যুর সংবাদ পায় তার পরিবার। তিনি ওই সময় ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়