২৫ ফেব্রুয়ারি সব জেলায় পদযাত্রা করবে বিএনপি

আগের সংবাদ

একুশে পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : ভাষার জন্য কারাবরণ করতে হয় বঙ্গবন্ধুকে

পরের সংবাদ

শীতজনিত রোগ প্রতিরোধে চিকিৎসা ও সতর্কতা জরুরি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শীতজনিত রোগ বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। এর মধ্যে রয়েছে সর্দি-জ¦র, কাশি ও নিউমোনিয়া। শিশু বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ঠাণ্ডা থেকে শিশুদের সুরক্ষা দিলে সুরক্ষিত থাকবে তারা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য ধরে গতকাল ভোরের কাগজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন মাসে শীতকালীন ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে ১০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন্সে (এআরআই) ১০৬ জন ও ডায়রিয়ায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১৪ নভেম্বর থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে ৮৪ হাজার ৬০৯ জন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্ত হন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন ৪ লাখ ৫ হাজার ৩৩১ জন। এছাড়া এআরআই ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৮৩ জন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৪৯৬ জন। এতে স্পষ্ট হয়, শীত কিছুটা কমে এলেও শীতকালীন রোগের প্রকোপ বেড়েছে, যা অত্যন্ত আতঙ্কের। রাজধানীসহ জেলা-উপজেলার হাসপাতালগুলোতে এ ধরনের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার কারণে এখন সকাল-বিকালে হালকা শীতল বাতাসে শিশু রোগাক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুর রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন, ব্রংকিউলাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, শীতকালীন ডায়রিয়া ও রাইনো ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ কারণে হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগী বাড়ছে। এ সময় এ রোগ থেকে মুক্ত থাকার জন্য ঠাণ্ডা অনুযায়ী গরম কাপড় ব্যবহার, যতটা সম্ভব ঠাণ্ডা পরিবেশ এড়িয়ে চলা জরুরি। যেসব বাচ্চা স্কুলে যায়, তাদের মধ্যে অ্যাজমার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে বেশি। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা বলছেন, অভিভাবকরা তাদের শিশু সন্তানদের ঠাণ্ডা বাতাস থেকে দূরে রাখবেন। সেই সঙ্গে ধুলাবালি থেকেও যতটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে। ঘরের মধ্যে ঠাণ্ডা বাতাস যেন না ঢোকে, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। আইসিডিডিআরবির তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর পাঁচ বছরের নিচে প্রায় ২৪ হাজার ৩০০ শিশু নিউমোনিয়ায় মারা যায়। সে হিসাবে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় প্রতিদিন মারা যায় ৬৭ শিশু। এর মধ্যে ৫২ শতাংশ শিশু কোনো চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতেই মারা যায়। কাজেই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্কতা প্রচার করতে হবে। শিশুদের ব্যাপারে অভিভাবকদের অধিকতর সতর্ক থাকা প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, নিউমোনিয়ার ঝুঁকিতে থাকা দেশের মধ্যে বাংলাদেশ পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে ৫৪ শতাংশ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হলেও বাংলাদেশে এই সংখ্যা মাত্র ৩৭ শতাংশ। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে প্রায় লাখ মানুষ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়, যার মধ্যে পাঁচ বছর বয়সের আগে প্রায় ২০ হাজার শিশুর মৃত্যু ঘটে। সময়মতো যথাযথ চিকিৎসা নিলে এই রোগ থেকে মুক্তি মেলে। সরকারি হাসপাতালে যেসব বৃদ্ধ ও শিশু ভর্তি হচ্ছে, তারা বেশির ভাগই দরিদ্র। তাদের বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ ও সময়মতো চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র, খাদ্য ও ওষুধসহ বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা প্রয়োজন। শীতজনিত রোগ প্রতিরোধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এবং রোগীর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায় থেকেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়