২৫ ফেব্রুয়ারি সব জেলায় পদযাত্রা করবে বিএনপি

আগের সংবাদ

একুশে পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : ভাষার জন্য কারাবরণ করতে হয় বঙ্গবন্ধুকে

পরের সংবাদ

একুশে বইমেলা : উদ্যোক্তা, প্রকাশক ও ক্রেতার অর্থনীতি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এখন চলছে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি যা শীত-বসন্তে অনুষ্ঠিত হয় এবং এই মাসের অন্যতম আকর্ষণ বইমেলা যার আয়োজক বাংলা একাডেমি। এ বছরের বইমেলার প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।’ এই মাসের প্রথম দিন ১ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাজধানীর বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে মাসব্যাপী এ আয়োজনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের ত্যাগকে জাগরূক রাখতে এই মেলার নামকরণ করা হয় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’। সে কারণে পুরো ফেব্রুয়ারি মাস ধরে এর আয়োজন। ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জনপ্রিয় প্রকাশক চিত্তরঞ্জন সাহা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের বটতলায় কলকাতা থেকে আনা কিছু বই নিয়ে মেলার সূচনা করেন। চিত্তরঞ্জন সাহার মুক্তধারা প্রকাশনী ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনী হিসেবে সুনাম অর্জন করেছে, তার দেখাদেখি অন্যরাও উৎসাহী হন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত স্বল্পপরিসরে মেলা চলতে থাকে, ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক বাংলা একাডেমিকে বইমেলার সঙ্গে সমন্বিত করেন। তারই উদ্যোগে ১৯৭৯ সাল থেকে বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি বইমেলার ব্যবস্থাপনায় অংশীদার হয়ে ওঠে, ১৯৮৩ সালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কাজী মনজুরে মওলা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বইমেলার আয়োজনের দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু এরশাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের তোড়ে সে বছর মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি, ১৯৮৪ সাল থেকে পুরো উদ্যমে মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এবং বাংলা একাডেমি চত্বরে জায়গা না হওয়ায় ২০১৪ সাল থেকে বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৬৫টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৮৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩৬টি ইউনিট অর্থাৎ মোট ৬০১টি প্রতিষ্ঠানকে ১০১টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মেলায় ৩৮টি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এবার বইমেলার আঙ্গিকগত ও বিন্যাসে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এবার একটু সরিয়ে বাংলা একাডেমির মূল প্রবেশপথের উল্টো দিকে অর্থাৎ মন্দির গেটটি মূল প্রবেশপথ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এখন আসা যাক এই মেলাকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি প্রকৃতি নিয়ে যা এই লেখার মূল বিষয়। বইমেলাকে কেন্দ্র করে লেখকের প্রত্যাশা থাকে পাঠককে নতুন বই উপহার দেয়ার, পাঠকও প্রিয় লেখকের নতুন লোখা পাঠের জন্য অধিক আগ্রহে থাকে, তাই অমর একুশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর অসংখ্য নতুন বই প্রকাশিত হয়। মেলায় অংশগ্রহণ করেন উদ্যোক্তা সংস্থা, লেখক-লেখিকা, পাঠক ও প্রকাশক যার সঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের একটি যোগসূত্র রয়েছে। এসব অংশীদারের নিজস্ব একটা ব্যবসায়িক দিক রয়েছে শিল্প সংস্কৃতি চর্চার অন্তরালে। এবার বাংলা একাডেমি যে ৬০১টি প্রতিষ্ঠানকে ১০১টি ইউনিট বরাদ্দ দিয়েছে তা থেকে প্রাপ্তি কত সে প্রশ্নটি আসাই প্রাসঙ্গিক অর্থাৎ এই প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব আয় কত হয়েছে তা জানা না গেলেও অঙ্কটি যে অর্ধকোটি কিংবা তার কাছাকাছি যে হবে এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এই রাজস্ব আয়ের খাতটি বাংলা একাডেমির মতো একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার জন্য খুবই প্রয়োজনীয় সার্বিক দিকের উন্নয়নের বিবেচনায়। এ ছাড়াও এই বাড়তি আয় সরকারের রাজস্ব আয়ের ভাণ্ডারে আরো একটি নতুন সংযোজন। আবার যারা স্টল বরাদ্দ নিয়ে তাদের বই প্রদর্শনের আয়োজন করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে, যার মধ্যে রয়েছে পূর্বে আলোচিত প্রকাশক, লেখক, ব্যবসায়ী যাদেরও দিন শেষে আয়-ব্যয়ের একটি হিসাব রাখতে হয় এই মেলাকে ঘিরে। এই বই মেলা নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে যার সঙ্গে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা জড়িত তথা বেকারত্বের অবসান ঘটায়। সেই হিসেবে একুশে বইমেলা বই বিক্রেতা, প্রকাশক, ছাপাখানা, বই বাইন্ডিং ইত্যাদি খাতের সঙ্গে জড়িতদেরও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করে। মেলাকে ঘিরে কয়েক মাস আগে থেকেই বই ছাপার কাজ শুরু হয় নীলক্ষেত, কাঁটাবন, আরামবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ছাপাখানাগুলোতে যদিও পুরান ঢাকার বাংলাবাজারই এর আসল ঠিকানা। এখানেই গড়ে উঠেছে শত শত ছাপাখানা, তৈরি হয়েছে বাঁধাইখানাও। ছাপা, বাঁধাই ও নান্দনিক মোড়ক লাগানোর পর বই চলে যায় অমর একুশে গ্রন্থমেলায়। প্রিন্টার্স মালিকরা জানান, বছরের বেশির ভাগ সময় বসে থাকলেও বইমেলার কারণে ব্যস্ততা বেড়ে যায়, প্রতিদিন প্রায় ৫০-৬০ সেট করে বই ডেলিভারি দিতে হয়। সব মিলিয়ে কাজের চাপ অনেক বাড়ে। অন্যান্য মাসের চেয়ে শ্রমিকরাও নিয়মিত বেতনের চেয়ে ১০-১৫ হাজার টাকা বাড়তি আয় করেন মেলার কয়েক মাস আগে থেকেই। বই বাজার নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটানো অনুপ্রাণন প্রকাশনীর প্রকাশক জানান, তার প্রতিষ্ঠান থেকে গত ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি মাস পর্যন্ত ৭১টি বই প্রকাশ হয়েছে। এ মেলা শেষ হলেই আমরা নতুন করে পাণ্ডুলিপি নেয়ার কাজ শুরু করব। মে-জুন থেকেই প্রকাশ শুরু হয়, মেলা উপলক্ষে প্রায় ৩০ শতাংশ বই প্রকাশিত হয় নতুন। সারা বছরই আমাদের কাজ চলতে থাকে, বইমেলা উপলক্ষে ছাপাখানা ও বাঁধাইখানায়ও কাজের চাপ বাড়ে। ফলে এখানে খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ হয়, মজুরিও দিতে হয় তুলনামূলক বেশি, ঘণ্টা হিসেবে, দৈনিক হিসেবে, মাসিক হিসেবে নানাভাবে শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়।
এবারের বইমেলায় বেচা কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে জানা যায়, গতবার শুরু থেকেই ভালো বিক্রি হয়েছিল, এবার প্রথমদিকে তেমন না হলেও আশা করা যায় শেষ সময়ে বিক্রি বাড়বে, তবে আমার মনে হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পাঠকরা বই কেনা কমিয়ে দিয়েছেন, আবার কাগজ ও কালির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ডিসেম্বর থেকে বইয়ের মূল্য বৃৃদ্ধি পেয়েছে। এটাও বই বিক্রি কম হওয়ার কারণ হতে পারে। কাগজ ও কালি দেশে তৈরি হলেও উপকরণ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আর আমদানি খরচ পূর্বের তুলনায় অনেক বেড়েছে। বইমেলায় স্টল ভাড়া এবং বিক্রেতা হিসেবে যারা আছে সব ক্ষেত্রেই ব্যয় আগের তুলনায় বেশি। তবে আশা করি, কাগজ ও কালির মূল্য বৃৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সরকার জোরালো ভূমিকা রাখবে। বই মানুষকে মনের খোরাক জোগায়। সুস্থ ও সুন্দর জাতি গড়ে তুলতে বইয়ের কোনো তুলনা নেই। তাই মূল্য বৃদ্ধির প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে বই শিল্পকে। এই দিক থেকে ভাষার মাসের গুরুত্ব অপরিসীম, যেমন বিজ্ঞাপন ব্যবসা, দৈনিক পত্রিকা থেকে শুরু করে অনলাইন নিউজ পোস্টার ও বইমেলাকেন্দ্রিক বুলেটিন ছাপানো হয় কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় পণ্য হিসেবে বই ক্রেতার বহুরূপিতা যেমন কেউ ছাত্র-ছাত্রী, কেউ গবেষক, কেউ শৌখিন ক্রেতা, কেউ আবার কবি সাহিত্যিক, কেউ আবার শিশু শ্রেণির এবং কেউ আবার প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিনিধি যারা নিজের প্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগারকে সমৃদ্ধ করার জন্য ক্রেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়। একটি তথ্যে দেখা যায় যে, ২০২০ সালের বইমেলায় ৮০ কোটি টাকার উপরে বই বিক্রি হয়েছিল এবং বর্তমান বছরে এই অঙ্কটি মূল্যস্ফীতির কারণে বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে হয়। বিশেষত আমাদের মতো বই পাঠের চর্চাবিমুখ মানুষের দেশে। সেই বইগুলো বইপ্রেমিক মানুষের বাসার সৌন্দর্য বর্ধনের উপকরণও বটে, যা বইমেলারই অবদান। প্রতিদিনই মেলায় নতুন বই আসছে, যা মেলার নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে প্রচার করা হয়ে থাকে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মীরা তাদের বিধিবদ্ধ দায়িত্বের অংশ হিসেবে বিশেষ ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে তাদের নির্ধারিত চ্যানেলগুলোতে সংবাদের অংশ হিসেবে প্রচার করছে। এই ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি বৈদেশিক অঙ্গনে অনেক প্রসারিত হয়েছে।
যারা সাহিত্য সমালোচক তারা বলছেন মানসম্মত সাহিত্য এবং সাহিত্যিকের সংখ্যা ক্রম অবনতিশীল বিধায় আগ্রহে ও পেশায় দুটোতেই কেমন একটা স্থবিরতা পরিলক্ষিত হয় সৃৃষ্টিশীল কাজে। বিষয়টি এমন যে সাহিত্য সৃষ্টি বা সাহিত্যিক হওয়া একটা ব্যক্তিগত আগ্রহের ব্যাপার, যা একটি অনুকূল পরিবেশ পেলে প্রস্ফুটিত হয় যার ধারাবাহিকতা অনেক দিন পর্যন্ত চলে। এটি কোনো অনুকরণের বিষয় কিংবা শৌখিন বিষয় নয়। এই জায়গাটিতেই সংকট রয়েছে। কেউ যদি এটাকে পেশা হিসেবে নিতে চায় তবে আর্থিক দৈন্যতার সম্মুখীন হতে হবে এটাই বাস্তব। বিশেষত প্রতিযোগিতামূলক বাজার অর্থনীতির যুগে যেখানে জ্ঞানচর্চার ফসলের বাজার সংগঠিত নয় আবার সামাজিক স্বীকৃতিও সহজেই ধরা দেয় না। যার ফলশ্রæতিতে ভাষা ও সংস্কৃতির চর্চাও ক্ষীণ হয়ে আসছে প্রজন্ম শূন্যতার কারণে। মনের খোরাকের জন্য যে সাহিত্য প্রয়োজন সে জায়গাটিতে খাদ্য নিরাপত্তার অভাব রয়েছে, যার ফলে অস্থিরতা বা অসন্তোষ বা অস্বস্তি এখন প্রায় সব পরিবারেই নিত্যদিনের সাথী, যা মনের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। এ ধরনের একটি আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক কিংবা কবি সৃষ্টি, বিশেষত ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী গ্রন্থমেলাকে কেন্দ্র করে কতটুকু অবদান রাখবে তা ভেবে দেখার বিষয়। যারা জনপ্রিয়তা চায় তাদের জন্য এ ধরনের মেলা সাহিত্য কেনাবেচার একটি ক্ষেত্র হতে পারে কিন্তু ভালো সাহিত্য বা সৃজনশীল সাহিত্য সৃষ্টি কতটুকু সম্ভব হবে তাও দেখার বিষয়। বাংলা একাডেমি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও তাদেরও অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে এই মেলার আয়োজন করতে হয়, বিশেষত দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে। কারণ অতীতের অনেক জীবনহানির ঘটনা এই মেলাকে কেন্দ্র করেই সংঘটিত হয়েছে, যা আমাদের একুশের চেতনাকে বিনষ্ট করেছে। মুক্তবুদ্ধির চর্চা, সৃজনশীল প্রকাশনার চর্চা, সৃজনশীল সাহিত্য ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রে এই মেলায় আগতদের জীবনের ঝুঁকি যে বাড়িয়ে দেয় তা আমাদের মনে রাখতে হবে অতীতের ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। তাই আমাদের মতাদর্শগত বিরোধগুলো রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করতে হবে, গ্রন্থমেলা কোনোভাবেই তার ক্ষেত্র হতে পারে না বা ক্ষেত্র হতে দেয়া যায় না। তাহলে ঘোষিত প্রাণের মেলা কথাটির কোনো গুরুত্বই থাকে না, যদিও এর মধ্যে অনেক আবেগ রয়েছে যা দিয়ে সত্যিকার অর্থে জীবন চলে না। এখন যারা সাধারণ মানুষ কিংবা ছাত্রছাত্রী তাদের কাছে এসব কথার অর্থ নিরর্থক বলে মনে হতেই পারে।

ড. মিহির কুমার রায় : কৃষি অর্থনীতিবিদ ও গবেষক; ডিন, সিটি ইউনিভার্সিটি।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়