কাগজ প্রতিবেদক : ঢাকায় মক্কার পবিত্র জমজমের পানি বিক্রি আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানিয়েছেন, জমজমের পানি বিক্রি নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে অংশীজনদের সঙ্গে পবিত্র জমজম কূপের পানি খোলা বাজারে বিক্রি সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। সভায় অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, উপপরিচালক আতিয়া সুলতানা, সহকারী পরিচালক এবং ঢাকা জেলা কার্যালয়ের প্রধান আব্দুল জব্বার মণ্ডলসহ বিক্রেতা, ব্যবসায়ী ও ক্যাবের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, আমার মতে, অবৈধভাবে জমজমের পানি বিক্রি হচ্ছে এবং এটাকে এখানে বাণিজ্যিকীকরণ করা হয়েছে। এখন এ নিয়ে করণীয় নির্ধারণ করবে মার্কেট কমিটি। তারা আগামী বুধবারের মধ্যে আমাদের জানাবেন যে, এ বিষয়ে কী করা যায়। তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নেব। জমজমের পানি বিক্রি আপাতত বন্ধ থাকবে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা সেখানে কাজ করবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ বিক্রি করলে, প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা মালিক সমিতি ও ব্যবসায়ীদের লিখিত মতামত নেব। তারপর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। বিশ্বাসের কথা বলে জমজমের পানি বিক্রি করা যাবে না, উৎস জানতে হবে। ভোক্তার ডিজি বলেন, আমার যতটুকু ধারণা, ছোট বোতল এখানেই রিফিল (পূর্ণ) হয়। আমরা গোয়েন্দা সংস্থাকে এই বিষয়ে কাজে লাগাব। যেখানেই তথ্য পাব সেখানেই অভিযান চালাব। আমার মনে হয় এটি করা দরকার। কারণ, একটা দেশের ভাবমূর্তির বিষয় এটা। আর ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণার বিষয় তো আছেই। সভায় বিক্রেতারা জানান, তারা একটি দুটি করে বোতল হাজিদের কাছ থেকে কিনতেন। শুধু বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে তারা কিনে বিক্রি করতেন।
এর আগে রবিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানে দেখা যায়, প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ জন আতর-টুপি-গোলাপজল ব্যবসায়ী জমজম কূপের এ পবিত্র পানির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি লিটার জমজমের পানি বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে তিন হাজার টাকায়। মার্কেটের প্রায় সব দোকানেই ২৫০ মিলি লিটারের জমজমের পানি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা খুচরা দরে বিক্রি করা হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, জমজমের পানির পাঁচ লিটারের বোতল সৌদি আরব থেকে আনা হয়। কেউ এটা একসঙ্গে বিক্রি করেন, আবার কেউ খুচরা বিক্রি করেন। খুচরা ২৫০ মিলি লিটারের বোতলেও বিক্রি হয়। স¤প্রতি এ নিয়ে দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই পানির উৎস জানতে মাঠে নামে প্রতিষ্ঠানটি।