চট্টগ্রামে ফয়েস লেক বেসক্যাম্প উদ্বোধন

আগের সংবাদ

কাটবে যেসব সংকট : আইএমএফের ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ

পরের সংবাদ

জৌলুশ হারাচ্ছে বিপিএল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : একসময় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নাম শুনলেই ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে উত্তেজনা শুরু হতো। কারণ এই টুর্নামেন্টজুড়ে থাকত দেশি-বিদেশি তারকা ক্রিকেটার। কাইরন পোলাড, ক্রিস গেইল, ডেভিড ওয়ার্নার ও স্মিথদের চার-ছক্কার ফোয়ারা দেখে নয়ন জুড়াতো ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু বর্তমানে বিপিএলে এখন এসব আর চোখে পড়ে না। এবার এই টুর্নামেন্টের নবম আসরে কোনো বিনোদন পাচ্ছেন না ভক্তরা। কয়েকজন পাকিস্তানি ক্রিকেটার জমিয়ে তুলেছিল এবারের টুর্নামেন্ট। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের খেলা সম্ভব নয়। ফলে জৌলুশ হারাচ্ছে বিপিএল। এছাড়া ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে পাকিস্তানের ঘরোয়া ফ্রাঞ্জাইজি টুর্নামেন্ট পিএসএল। ওই টুর্নামেন্টের নিজেদের দেশের ক্রিকেটারদের সুস্থ এবং স্বাভাবিকভাবে পেতে চায় পিএসএল ফ্রাঞ্চাইজিগুলো। তাই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এরই মধ্যে নির্দেশ দিয়েছে, যেসব ক্রিকেটার বিপিএল খেলছেন, তারা যেন ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশে ফিরে যায়।
এদিকে এবার ২২ জন পাকিস্তানি ক্রিকেটার খেলছেন বিপিএলে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার দেশে ফিরে যাচ্ছেন ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে বিপিএলে খেলছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান, হাসান আলি, খুশদিল শাহ, আবরার আহমেদ, নাসিম শাহ। পিসিবির নির্দেশনা অনুযায়ী পিএসএল খেলতে তারা দেশে ফিরে যাবেন ৪ ফেব্রুয়ারি।
ফরচুন বরিশালে পাকিস্তানি ক্রিকেটার খেলছেন তিনজন। তারা হলেন- ইফতিখার আহমেদ, হায়দার আলি এবং মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র।
ইফতেখার ফিরে যাবেন ৪ ফেব্রুয়ারির। তবে ওয়াসিম জুনিয়র ফিরতি লেগের এক ম্যাচ বাকি রেখে দেশে ফিরবেন। ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খেলবেন তিনি।
রংপুর রাইডার্সে খেলছেন শোয়েব মালিক, মোহাম্মদ নওয়াজ এবং হারিস রউফ। তারা কবে ফিরবেন জানা যায়নি। সিলেট স্ট্রাইকার্সের দুই পাকিস্তানি মোহাম্মদ আমির ও ইমাদ ওয়াসিম দেশে ফিরবেন সিলেট পর্ব শেষ করেই। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সে খেলছেন উসমান খান। খুলনা টাইগার্সের হয়ে খেলছেন পাকিস্তানের সাবেক উইকেটরক্ষক ব্যাটার এবং সাবেক অধিনায়ক মঈন খানের ছেলে আজম খান। খেলছেন অলরাউন্ডার আমাদ বাট। তারা কবে ফিরবেন জানা যায়নি। তবে খুলনার পাকিস্তানি বোলার ওয়াহাব রিয়াজ ফিরে গেছেন রাজনৈতিক দায়িত্ব নেয়ার জন্য।

এদিকে ২০১২ সালে সর্বপ্রথম বিপিএল আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এখন পর্যন্ত বিপিএলের ৮টি আসর মাঠে গড়িয়েছে। তবে ধারাবাহিক ভাবে নয়, বিভিন্ন কারণে তিন বছর মাঠে গড়ায়নি এই ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। ২০১২ ও ২০১৩ সালে জাঁকজমকভাবে টানা দুই আসর অনুষ্ঠিত হওয়ার পর নানা বিতর্কে ২০১৪ বন্ধ ছিল বিপিএল। এরপর ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ সালের পর ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনা মহামারিতে স্থগিত ছিল এই টুর্নামেন্ট। তবে এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে আয়োজিত হচ্ছে বিপিএল। প্রথম আসর ছয় দল নিয়ে আয়োজিত হয়। এই আসরে ফাইনালে বরিশাল বার্নাসকে আট উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল ঢাকা গø্যাডিয়েটরস। প্রথম আসরে টুর্নামেন্টসেরার পুরস্কার জিতেছিলেন খুলনা ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলা সাকিব আল হাসান। আসরের সব ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল মিরপুরে। দ্বিতীয় আসরে সপ্তম দল হিসেবে বিপিএলে যোগ হয় রংপুরের নাম। এই আসরে আবারো শিরোপা জিতেছিল ঢাকা। এবার ফাইনালে তারা হারিয়েছিল চট্টগ্রাম কিংসকে। এই আসরে ঢাকার হয়ে খেলা সাকিব আল হাসানও আবারও জিতেছিলেন টুর্নামেন্টসেরার পুরস্কার। নানা কারণে ২০১৪ সালে বন্ধ থাকার পর ২০১৫ সালে মাঠে গড়ায় বিপিএলের তৃতীয় আসর। সম্পূর্ণ নতুন ছয় ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে আয়োজিত এই আসরে বরিশাল বুলসকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছিল কুমিল্লা। ২০১৬ সালে হয় বিপিএলের চতুর্থ আসর। এবার ফাইনালে রাজশাহী কিংসকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল ঢাকা ডাইনামাইটস। এ নিয়ে ভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির অধীনে তৃতীয়বার শিরোপা জেতে ঢাকা। পুরো আসর জুড়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করা খুলনা টাইটান্সের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জিতেছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার।
২০১৭ সালে নতুন মালিকানায় বিপিএলে পুনরায় যোগ দিয়েছিল সিলেট ফ্র্যাঞ্চাইজি। আর বরিশাল বুলসকে বিপিএল থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল গর্ভনিং কাউন্সিল। পঞ্চম আসরের শিরোপা জিতেছিল রংপুর রাইডার্স। এই নিয়ে সর্বোচ্চ চতুর্থবার অধিনায়ক হিসেবে বিপিএলের শিরোপা জিতেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। এই আসরে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন রংপুরের ক্রিস গেইল। ২০১৮ সালে ফাইনালে ঢাকা ডাইনামাইটসকে হারিয়ে দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুলেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। অধিনায়ক হিসেবে ফাইনাল হারলেও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ঠিকই উঠেছিল ঢাকার অধিনায়ক সাকিবের হাতে। ২০১৯ সালে বিপিএল টুর্নামেন্টে কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি ছিল না। সব দলের মালিকানায় ছিল বিসিবি। বঙ্গবন্ধু বিপিএল নামে এই আসরের ফাইনালে খুলনাকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল রাজশাহী রয়্যালস। আসরের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন রাজশাহী অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল।
২০২২ সালে ফের ফ্র্যাঞ্চাইজি সিস্টেমে ফিরে বিপিএল। এই আসরে ফরচুন বরিশাল ও কুমিল্লার দুর্দান্ত এক নাটকীয় ফাইনাল দেখেছিল ক্রিকেটপ্রেমীরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়