উগ্র মৌলবাদের বিরুদ্ধে গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের কর্মসূচি

আগের সংবাদ

গৃহায়ণ ও রাজউকের ১১ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে

পরের সংবাদ

বিপিএলে মাশরাফির অন্যরকম সেঞ্চুরি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ক্রিকেট মাঠে বল হাতে সব সময় নিজকে উজাড় করে দিয়েছেন নড়াইলের ছেলে মাশরাফি বিন মর্তুজা। তার চেষ্টায় আজ দেশের ক্রিকেট সফলতার চূড়ায় পৌঁছেছে। একজন অধিনায়ক হিসেবে যে কোনো ম্যাচে তিনি দলের প্রাণভোমরা। মাশরাফির অনুপ্রেরণায় অনেকে এখন তারকা ব্যাটার-বোলার হয়েছেন। জাতীয় দলের হয়ে খেলা ছাড়ার পর থেকে ঘরোয়া লিগে নিয়মিত খেলে যাচ্ছেন সাবেক এই অধিনায়ক। নড়াইল এক্সপ্রেস নামে পরিচিত এই ক্রিকেটারের বলের ধার এখনো কমেনি। এবার দেশের জনপ্রিয় ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টেও আলো ছড়াচ্ছেন তিনি। এই পেসার এবার ছুঁয়েছেন নতুন মাইলফলক। চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে বিপিএলে একশ ম্যাচ খেলার উচ্চতায় পৌঁছেছেন মাশরাফি। সতীর্থ মুশফিকুর রহিম সবার আগে পৌঁছেছেন এই মাইলফলকে। এরপর এনামুল হক বিজয় ঢুকেছেন এলিট ক্লাবে। ইমরুল কায়েস গত পরশু খুলনা টাইগার্সের ম?্যাচ দিয়ে শততম ম্যাচ খেলেছেন। এছাড়া ২০১২ সালে শুরু হওয়া বিপিএলের প্রথম আসর থেকেই খেলছেন মাশরাফি।
শততম ম্যাচের মধ্যে অধিনায়ক হিসেবেই ৯৫টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি- যা বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। নড়াইল এক্সপ্রেস নামে পরিচিত এই ক্রিকেটার অধিনায়ক হিসেবে ৬১টি ম্যাচে জয় ও ৩৪টিতে হেরেছেন। এখানেই তার কীর্তি শেষ, তা নয়। বিপিএলে অধিনায়ক হিসেবে ৪ বার চ্যাম্পিয়নও হয়েছেন মাশরাফি। ঢাকা গø্যাডিয়েটর্সের হয়ে পরপর দুই মৌসুম ও পরবর্তীতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও রংপুর রাইডার্সের জার্সিতে শিরোপার স্বাদ পান দেশসেরা অধিনায়ক। একজন সফল ক্রিকেটার হিসেবে এখন পর্যন্ত বিপিএলের ১০০ ম্যাচে ৯৬ উইকেট ও ৫৩৯ রান করেছেন মাশরাফি। অধিনায়ক হিসেবে সফলতার পাশাপাশি বোলার মাশরাফিও বেশ সফল। ৯৬ ইনিংসে ৯৬ উইকেট পেয়েছেন। সেরা বোলিং ১১ রানে ৪ উইকেট। ৬.৯৭ ইকোনমিতে মিলেছে এ সাফল?্য। উইকেট সংখ?্যায় তার চেয়ে এগিয়ে আছেন কেবল রুবেল হোসেন (৯৭) ও সাকিব আল হাসান (১২৬)।
এদিকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মাশরাফির অভিষেক হয়েছিল ২০০৬ সালের নভেম্বরে। খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সে ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ৪৩ রানের বড় ব্যবধানে। জীবনের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মাশরাফির অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো। মাশরাফি সে ম্যাচে ব্যাট হাতে ৩৬ রানের একটি অসাধারণ ইনিংস খেলেছিলেন। ৩১ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় তার ইনিংসটি সাজানো ছিল। শুধু তাই নয়, বল হাতেও বেশ উজ্জ্বল ছিলেন নড়াইল এক্সপ্রেস। চার ওভারে ২৯ রান দিয়ে নিয়েছেন এক উইকেট। ব্যাট-বলে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে সে ম্যাচে পেয়েছিলেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। সেই ধারাবাহিকতায় এরপর এক দশকেরও বেশি সময় ধরে জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। খেলেছেন ৫৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, নিয়েছেন ৪২টি উইকেট। বল হাতে তার সবচেয়ে বড় সাফল্য ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। সে ম্যাচে চার ওভার বল করে ১৯ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট।
এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাত, স্কটল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, কেনিয়া, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি করে উইকেট নিয়েছিলেন, কিন্তু আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সে ম্যাচের মতো এত ভালো সাফল্য আর পাননি। বোলিংয়ের পাশাপাশি দুর্দান্ত ব্যাটিংও করেন মাশরাফি। অভিষেক টি-টোয়েন্টিতে তার ৩৬ রানের ইনিংসটিই সেরা। এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৩ ও ৩০ রানের দুটি ইনিংস খেলেছিলেন।
তবে ব্যক্তিগত সাফল্যের চেয়ে অধিনায়ক মাশরাফির সাফল্য অনেক বেশি উজ্জ্বল ছিল। এ স্থানে তাকে উঠে আসাটা তার জন্য সহজ হয়নি। সার্জনের চাকুর নিচে শুয়েছেন ৮ বার। তারপরও অদম্য ইচ্ছাশক্তির বলে আজ তিনি বিশ্ব ক্রিকেটের একটি উদাহরণ। বাংলাদেশের গৌরবের বিষয়। যা থেকে অনুপ্রেরণা পান অনেকেই।
১৯৮৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব করেছেন ১৩ জন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন হাবিবুল বাশার সুমন। তার সময়েই বাংলাদেশ ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি জয় পেয়েছিল।
তাই তাকে বাংলাদেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়কও বলা হয়। কিন্তু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের মধ্য দিয়ে হাবিবুল বাশারের চেয়ে কম ম্যাচে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়ে জয়ের দিক দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে যান ক্যাপ্টেন ‘কুল’। সেটা যেমন মোট জয়ের দিক দিয়ে, তেমনি জয়ের শতকরা হারের দিক দিয়েও। যাহোক, আত্মবিশ্বাসের কারণেই মাশরাফি বাকিদের চেয়ে আলাদা। বাংলাদেশের হয়ে ২০১০ সালে ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম আত্মপ্রকাশ করেন মাশরাফি। তার অধিনায়কত্বে দুর্দান্ত এক দল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। দেশ-বিদেশে সতীর্থদের নিয়ে যে সাফল্য মাশরাফি অর্জন করেছেন তা ক্রিকেট বিশ্ব কখনো ভুলবে না। অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে তিনি নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়