উগ্র মৌলবাদের বিরুদ্ধে গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের কর্মসূচি

আগের সংবাদ

গৃহায়ণ ও রাজউকের ১১ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে

পরের সংবাদ

বাণিজ্যমেলার পর্দা নামছে কাল : আকর্ষণীয় ছাড়ে ক্রেতা টানছে ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নির্ধারিত সময়েই পর্দা নামছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৭তম আসরের। ব্যবসায়ীদের আবেদন সত্ত্বেও এবারের মেলার সময়সীমা বাড়ানো হচ্ছে না। দ্বিতীয়বারের মতো রাজধানীর পূর্বাচলে স্থায়ী ভেন্যু বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত মেলা শেষ হচ্ছে কাল মঙ্গলবার। আয়োজক সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ব্যবসায়ীরা সবসময় মেলা বাড়ানোর আবেদন করে থাকেন। যেহেতু নির্ধারিত সময়ে মেলা শুরু হয়েছে তাই সময় বাড়ানো হবে না। কেউ যদি সঠিক সময়ে ব্যবসা শুরু করতে না পারে এটা তাদের ব্যর্থতা। তাই নির্ধারিত সময়েই মেলা শেষ হবে। মঙ্গলবার মেলায় সমাপনী অনুষ্ঠান। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিথি থাকবেন।
প্রত্যাশার চেয়ে মেলায় এবার দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বেশি ছিল দাবি করে আয়োজক সংস্থার ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তা বলেন, যদি দর্শনার্থীদের আগমণ ও উপস্থিতি বিবেচনা করি তাহলে বলব এবার প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ছিল। গত দুই দিন প্রায় ৩ লাখ করে দর্শনার্থী এসেছেন। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, দর্শনার্থী বেশি থাকলেও তেমন কেনাকাটা করেনি। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অনেক বেশি কেনাকাটা করবে এটা প্রত্যাশা করাও ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং বিক্রি বাড়াতে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় (ডিআইটিএফ) বিভিন্ন পণ্যের ওপর বিশাল ছাড় দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মেলায় দেখা গেছে, বেশিরভাগ প্যাভিলিয়ন তাদের পণ্য ছাড় অথবা পাইকারি মূল্যে বিক্রি করছে। মেলার প্রায় শেষদিকে আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট, বিশেষ অফার, উপহার এবং লটারি দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করছে। সব শ্রেণির ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করতে অনেক কোম্পানি মাসিক কিস্তি (ইএমআই) সুবিধাও দিচ্ছে। আবার একটি পণ্য কিনলে একইরকম আরেকটি পণ্য ফ্রি দিচ্ছে কোনো কোনো স্টল। সব বয়সি মানুষের সরব উপস্থিতি চোখে পড়ে মেলায়।
রান্নার সামগ্রী, প্রসাধনী, জামাকাপড় ও গহনাসহ বিভিন্ন পণ্য কিনতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। বেশিরভাগ পোশাক ও কসমেটিকস সামগ্রীর প্যাভিলিয়নগুলোতে ভিড় দেখা গেছে। আসবাবপত্র, খাদ্য ও পানীয় এবং ইলেকট্রনিক্স প্যাভিলিয়নেও ভিড় লক্ষ্য করা যায়। প্রসাধনী, শীতের পোশাক, গৃহস্থালির তৈজসপত্র, গহনা, হস্তশিল্প, দুগ্ধজাত পণ্য, খাদ্য ও মুদি, উপহার সামগ্রী, খেলনা, স্টেশনারি ও প্লাস্টিক পণ্যের বিক্রি গত কয়েকদিনে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়নের বিক্রয়কর্মী ও মালিকরা।
৩০-৪০ শতাংশ ছাড় দিয়েছে জামদানি ওয়ার্ল্ড। মেলা শেষ হওয়ার আগে গ্রাহকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং বিক্রি বাড়াতে দুরন্ত সাইকেলগুলোতে ১০-৫০ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়। ইরানি স্টোরের ম্যানেজার বিল্লাল হোসেন জানান, তারা বিভিন্ন ধরনের পণ্য যেমন মশলা, গার্মেন্টস আইটেম, জুতা এবং চামড়ার আইটেম নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, আমরা সমস্ত ধরনের পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছি।
বিভিন্ন ধরনের অফার দেয়া জুয়েলারি প্যাভিলিয়নগুলোতে দেখা গেছে সব বয়সী নারীদের উপচে পড়া ভিড়। ঝুমকা জুয়েলারি স্টলের বিক্রেতা আসমা খাতুন জানান, গত কয়েকদিনে ক্রেতার সংখ্যা বাড়ায় তারা খুশি।
ফার্নিচার কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য ভেদে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় দিচ্ছে। পারটেক্স, হাতিল, নাভানা, আক্তার, রিগ্যাল, ব্রাদার্স এন্ড ডেল্টাসহ নামী আসবাবপত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কাঠের তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাট, আলমারি, ওয়ারড্রব, দরজা, সোফা, ড্রয়িং টেবিল, ড্রেসিং টেবিল, টি-টেবিল নিয়ে এসেছে। আরএফএল এবং আকিজসহ বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী সংস্থাগুলো তাদের পণ্যের উপর ৩০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। আরএফএল-এর প্যাভিলিয়ন ইনচার্জ আজিজুল ইসলাম বলেন, তারা পণ্যের উপর ১০-৫০ শতাংশ ছাড় দেয়ার পর গ্রাহকদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন।
গত ১ জানুয়ারি মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি ঢাকার ২৭তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। এবারের বাণিজ্য মেলায় ১০টি দেশের ১৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকছে।
তবে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চলে। এবার মেলায় প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। মেলার টিকেট অনলাইনে কিনলে ৫০ শতাংশ ছাড়ের সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও মেলায় প্রায় এক হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাসহ বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য ১৭টি প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন ও স্টল রয়েছে। দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য দুটি হলের বাইরে মিলে মোট ৩৩১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়