মাদকবিরোধী অভিযান : রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৭০

আগের সংবাদ

রাজশাহীর জনসভায় শেখ হাসিনা : আ.লীগ কখনো পালায় না

পরের সংবাদ

বিএসএফ ও ইনসান পাগল ধস্তাধস্তি : মেহেরপুরে চাষিদের মাঝে আতঙ্ক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মর্তুজা ফারুক রুপক, মেহেরপুর থেকে : ঘটনাটি চলতি জানুয়ারি মাসের ১৭ তারিখের। মেহেরপুরে চুয়াডাঙ্গা মাঠসংলগ্ন ৯৫নং মেইন পিলারের কাছে। মানসিক ভারাসাম্যহীন ইনসান আলী নামে এক কৃষকের সঙ্গে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক সদস্যের ধস্তাধস্তি হয়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ইনসান আলী জীবন বাঁচাতে ওই বিএসএফ সদস্যের রাইফেল কেড়ে নিয়ে পার্শ¦বর্তী সরিষা ক্ষেতে ফেলে দিয়ে নিজ বাড়িতে পালিয়ে আসে।
ঘটনাটি বর্ণনা করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ। পরে রাইফেলটি ওই দিনই উদ্ধার করে পতাকা বৈঠকের মাধমে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করেন চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির সদস্যরা।
তবে ঘটনার ১১ দিন পার হলেও সীমান্তজুড়ে এখনো কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সীমান্তবর্তী ফসলি জমিতে যেতে ভয় পাচ্ছে কৃষকরা। সীমান্ত শান্ত রাখতে বিজিবির পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। কৃষকদের নিজ জমিতে যেতেও পড়তে হচ্ছে বাধার মুখে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে কাজ শেষ করে কৃষকদের বাড়ি ফেরার নির্দেশ দিচ্ছেন বিজিবি সদস্যরা। এতে আতঙ্কিত মেহেরপুর সীমান্তের জয়পুর, আনন্দবাস, নাজিরাকোনা ও পার্শ¦বর্তী হুদাপাড়ার কৃষকরা। অনেকেই কাজ থাকলেও যেতে ভয় পাচ্ছেন জমিতে। ভরা বোরো মৌসুমে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে এ এলাকার কৃষকদের। শুধু বাংলাদেশি কৃষকরাই না, থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ভারতীয় অংশেও। সেখানেও ভারতীয় কোনো কৃষককে তাদের জমিতে আর কাজ করতে দেখা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশি কৃষকরা।
আগে দুদেশের কৃষকরা অনেকটা মিলেমিশেই কাজ করতেন। কিন্তু এ ঘটনার পর থেকে মারধর ও ধরে নিয়ে যাওয়ার আতঙ্কে সীমান্তবর্তী জমিতে কাজ করতে যেতে ভয় পাচ্ছেন কৃষকরা।
জয়পুর গ্রামের কৃষক লুতফর রহমান রহমান জানান, বিএসএফ ও ইনসান পাগলের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনার পর আমরা সবাই আতঙ্কিত। প্রথম দিকে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে দিত না বিজিবি। এখন সামান্য কাজ করার সুযোগ পেলেও মনে মনে বেশ আতঙ্কিত। লুতফর রহমানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মহিউদ্দিন, রমজানসহ এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক বলেন, এখন বোরো আবাদের মৌসুম। মাঠে প্রচুর কাজ। আর আমাদের সব জমি রয়েছে সীমান্ত এলাকায়। সেখানে গিয়ে ঠিকমতো কাজ করতে পারছি না। যেটুকু পারছি তাও খুব আতঙ্কে করতে হচ্ছে।
জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলী বলেন, আমরা শান্তিপূর্র্ণ সমাধান চাই। তা না হলে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। অনেকেই নিজ জমিতে যেতে পারছে না। বিজিবির পক্ষ থেকে সাবধানে কাজ করার কথা বললেও আনুষ্ঠানিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আতঙ্ক কাটবে না। এ ঘটনাটি আরেকটু উসকে দিয়েছে ভারতীয় কয়েকটি মিডিয়া। ঘটনার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে চোরচালানকারী ও দুষ্কৃতি আখ্যা দিয়েছে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে। তাতেই আতঙ্ক বেশি ছড়িয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
চুয়াডাঙ্গা বিজিবি-৬ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ইসতিয়াক বলেন, আমরা সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে কাজ করছি। আমরা সব সময় পাশে আছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়