প্রণয় ভার্মাকে সংবর্ধনা : ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কূটচালে নষ্ট হওয়ার নয়’

আগের সংবাদ

গ্যাস সংকট কাটছে না সহসা : দৈনিক চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট > সরবরাহ ২৬৬ কোটি ঘনফুট > দুর্ভোগে রাজধানীর বাসিন্দারা

পরের সংবাদ

কে হচ্ছেন আবদুল হামিদের উত্তরসূরি : আলোচনায় সাতজনের নাম আসতে পারে নতুন চমকও

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

** আমির হোসেন আমু, ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ড. মসিউর রহমান, অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আ ক ম মোজাম্মেল হক, এ বি এম খায়রুল হক **

ঝর্ণা মনি : দেশের রাজনৈতিক আলোচনায় বিশেষ মাত্রা এনেছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে গত বুধবার। কে হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের উত্তরসূরি- এ নিয়ে সারাদেশে আলোচনার শেষ নেই। বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতির পদটি মূলত আলংকারিক হলেও সাধারণ মানুষ থেকে রাজনীতিবিদরা মনে করছেন, আগামী বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনের সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এ সময় রাষ্ট্রপতি পদে কে থাকবেন- তা-ও গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে কয়েকজনের নাম আলোচনায় থাকলেও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এখনো এ বিষয়টি তার সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেননি। আলোচিত নাম ছাড়াও সব মহলে গ্রহণযোগ্য, বিশ্বস্ত এমন কাউকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দিয়ে চমক দেখাতে পারেন শেখ হাসিনা, এমনটি মনে করছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই।
মূলত, এক বিশেষ পরিস্থিতিতে ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন মো. আব্দুল হামিদ। এর ৬ দিন পর সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দেশের ঊনিশতম রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। ২২ এপ্রিল ভারমুক্ত হন মো. আব্দুল হামিদ, বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় বিশতম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি আবারো বিনা আপত্তিতে পুননির্বাচিত হন তিনি। আগামী ২৩ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হচ্ছে তার।
পর পর দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি থাকার পর সংবিধান অনুযায়ী তার আর এ পদে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেই। সংবিধানের ৫০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বাংলাদেশের কোনো নাগরিক তার জীবনে দুইবারই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতে পারেন। এর ব্যতয় ঘটলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, সংবিধান সংশোধন করার কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ এর ৫(২) ধারা অনুযায়ী, ‘সরকারের সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষ কমিশনকে উহার দায়িত্ব পালনে সহায়তা প্রদান করিবে এবং এই উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি, কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে, যেরূপ প্রয়োজন মনে করিবেন সেইরূপ নির্দেশাবলি জারি করিতে পারিবেন।’ আর সংবিধানের ৪৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন সংসদ সদস্যদের ভোটে। রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে হলে সংসদ সদস্য হতে হয় না। তবে সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে একজন প্রস্তাবক ও একজন সমর্থক লাগে। সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
এদিকে ৩৫০ সংসদীয় আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের আসন ৩০২টি। প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির হাতে ২৬টি আসন। ওয়ার্কার্স পার্টির ৪, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ ও গণ ফোরামের ২টি করে, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন ও জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) ১টি করে আসন রয়েছে। বাকি ৩ আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী রয়েছেন। বিএনপির ৭ নেতাও সংসদ সদস্য ছিলেন। তবে তারা স¤প্রতি সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। ফলে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটার ৩৪৩ জন সংসদ সদস্য। ভোটের জন্য জাতীয় সংসদের একটি বৈঠক ডাকা হয়। আর একক প্রার্থী হলে আইন অনুযায়ী তিনি বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হন। সে ক্ষেত্রে সংসদের বৈঠকের প্রয়োজন হয় না। সংসদীয় ব্যবস্থা প্রবর্তনের পর দেশে এখন পর্যন্ত একবারই রাষ্ট্রপতি পদে ভোটাভুটির প্রয়োজন পড়েছিল।
আলোচনায় যারা : ইতোমধ্যে, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে ৬ জনের নাম নিয়ে দলের নেতাকর্মীরা আলোচনা করছেন। বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আমির হোসেন আমু, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনকারী ড. মসিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এ বি এম খায়রুল হকের নাম আলোচনায় রয়েছে। তবে এর বাইরে অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিও হতে পারেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের উত্তরসূরি- যা নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দূরদর্শী রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর। এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, নির্বাচনের আগে অনেকের নামই শোনা যায়। অনেক ধরনের গুজব শোনা যায়। সংবিধান অনুযায়ী, বর্তমান রাষ্ট্রপতির ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬০ থেকে ৯০ দিন আগে (পরবর্তী রাষ্ট্রপতির জন্য) নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়