প্রধান শিক্ষককে পিটুনি : আ.লীগ নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি

আগের সংবাদ

ভোক্তা অধিদপ্তরের মতবিনিময় সভা : আমদানি স্বাভাবিক না থাকলে বাজার নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে

পরের সংবাদ

রৌমারীতে শিক্ষককে পিটিয়ে পদ হারালেন আ.লীগ নেতা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের রৌমারীতে নরুন্নবী নামে এক প্রধান শিক্ষককে তুলে নিয়ে পেটানোর ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকনকে লীগের সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। গত শনিবার রাত ৯টায় রৌমারী প্রেস ক্লাবে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে ওই নেতাকে অব্যাহতি দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রা। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার উপজেলার ফুলকারচর নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নরুন্নবীকে মারপিট করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন। ঘটনাটি বিভিন্ন মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হয়। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষণ্নœ হয়। ফলে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশে রোকনুজ্জামান রোকনকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট ফেরদৌস আল মাহমুদ পলাশ, সহ-দপ্তর সম্পাদক সুমন মিয়া, সাবেক দপ্তর সম্পাদক রমেশ চন্দ্র সাহা চন্দন, সাবেক সহদপ্তর সম্পাদক মশিউর রহমান, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি হারুনর রশিদ, যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি ফজলুল করিম, দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি দুপুরে শিক্ষা অফিসে যান ফুলকারচর নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নরুন্নবী ও বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুর রশিদ। কাজ শেষে শিক্ষা অফিস থেকে নিচে নামার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা চত্বর থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ও তার লোকজন ওই প্রধান শিক্ষককে তুলে নিয়ে যান। প্রথমে তাকে উপজেলা চত্বরের পাশেই পলি পরিবহনের বাস কাউন্টারে নিয়ে আটকে রাখা হয় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে মোটরসাইকেলে ওই প্রধান শিক্ষককে নিয়ে যাওয়া হয় রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রার বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে। সেখানে ঘটনা খুলে বলতে থাকেন ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক নরুন্নবী। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে ওই প্রধান শিক্ষকের গালে এলোপাতাড়ি চড়থাপ্পর ও কিল ঘুষি মারতে থাকেন। তা দেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দ্রুত চেয়ার থেকে উঠে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে ধাক্কা দিয়ে অফিস কক্ষ থেকে বের করে দেন। পরে আহত ওই প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ওইদিন রাতেই ভুক্তভোগী শিক্ষক বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকনসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। ওই প্রধান শিক্ষককে মারপিটের সিসিটিভির একটি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে শিক্ষক সমাজে ক্ষোভসহ সারাদেশে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় শনিবার বিকালে ওই আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামানসহ দুজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০-১২ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়