প্রধান শিক্ষককে পিটুনি : আ.লীগ নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি

আগের সংবাদ

ভোক্তা অধিদপ্তরের মতবিনিময় সভা : আমদানি স্বাভাবিক না থাকলে বাজার নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে

পরের সংবাদ

কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা : হুমকির মুখে বরিশাল শহর রক্ষা বাঁধ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম কে রানা, বরিশাল থেকে : বরিশালের সৌন্দর্যের প্রধান আকর্ষণ কীর্তনখোলা নদী ও নদী তীরবর্তী পাঁচ কিলোমিটার এলাকা। অথচ প্রভাবশালী মহলের কারণে নদীর তীরের পুরোটাই ক্রমশ বেদখল হয়ে যাচ্ছে। অবৈধ বিভিন্ন স্থাপনা, দোকান-পাটসহ মাদকের অভয়ারণ্য এখন কীর্তনখোলা নদীর লঞ্চঘাট থেকে দক্ষিণে কেডিসি হয়ে ত্রিশ গোডাউন পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটারের বেশি এলাকা।
এখানে প্রায় ৮-১০ হাজার বস্তিঘরে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতার রাজত্ব বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে অভিযোগের আঙুল নৌ পুলিশ ও মেরিন বিভাগের কর্মকর্তাদের দিকেও। তাদের আশ্রয়ে এখানে অবৈধ ঘরবাড়ি দোকানপাট গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
সরজমিন গিয়ে নগরীর ডিসিঘাট থেকে মুক্তিযোদ্ধা পার্ক হয়ে কেডিসি থেকে বের হতে গিয়েই ভ্রমণে আসা দুজন অতিথির কটাক্ষ শুনতে হলো শহররক্ষা বাঁধের উপর অনেকগুলো ছাগলের খোয়াড় নিয়ে। এখানে বাঁধে ভাঙন ধরেছে। একটু এগোলে চোখে পড়ে নদীরক্ষা বাঁধের পায়ে

চলা পথে গড়ে ওঠা অসংখ্য অবৈধ ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও হাঁস-মুরগি-ছাগলের ঘর। নদীর কিনারে খুঁটি গেড়ে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন দোকান, রান্নাঘর, এমনকি গোয়ালঘরসহ আরো অনেক কিছু। শুধু তাই নয় নৌ পুলিশ, কোস্ট গার্ড, মেরিন বিভাগের কয়েকটি জেটি ছাড়াও রিভার ফায়ার স্টেশনও তৈরি হয়েছে নদী দখল করেই। আর এ সুযোগ নিয়েই জেটির পিলার বরাবর নদী দখল করে নিচ্ছে একটি মহল। এসব কারণে ভাঙন দেখা দিয়েছে বাঁধের কয়েকটি স্থানে। প্রশাসনের নৌবহর বা জেটির বিষয়টি জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এটিকে এড়িয়ে গিয়ে দোকানপাট ও পায়ে চলা পথ আটকে দেয়া নিয়ে প্রশ্ন করলে স্থানীয় বাসিন্দারা তেড়ে এসে বলেন, যা বলার স্থানীয় কাউন্সিলরকে বলুন। এ পাশটা ১০নং ওয়ার্ড আর মুক্তিযোদ্ধা পার্কেও, উত্তর পাশটা আওয়ামী লীগ নেতার নিয়ন্ত্রণে। সব মিলিয়ে কীর্তনখোলা নদী তীরবর্তী এই এলাকায় উত্তরাংশে দোকানপাটসহ প্রায় তিন হাজার ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করছেন আওয়ামী লীগ নেতা।
১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহীদুল্লাহ কবির বলেন, অবৈধ ঘরবাড়ি দোকানপাট দেখে আমিও বিরক্ত। জনপ্রতিনিধি হওয়ার কারণে আমি তো উচ্ছেদ করতে পারি না। তাই নিজেই কয়েকবার বিআইডব্লিউটিএর কাছে এ নিয়ে অভিযোগ করেছি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতাকে পাওয়া না গেলেও স্পিডবোট ঘাটে তার অনুসারীদের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানালেন, নদী তীরবর্তী এই এলাকায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিআইডব্লিউটিএর। নৌ পুলিশ, কোস্ট গার্ড, মেরিন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস যৌথভাবে এই এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে। যে কারণে র‌্যাব ও পুলিশের হাতে এখানে মাদকসহ বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়লেও নৌ পুলিশের ভূমিকা নীরব। বিআইডব্লিউটিএর উচ্ছেদ অভিযান সব সময় লঞ্চঘাট থেকে এই স্পিডবোট বা ডিসিঘাট পর্যন্ত সীমাবদ্ধ।
এদিকে সিটি করপোরেশন ও বিআইডব্লিউটিএর আওতায় বলে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তবে বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি আসার পর থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়নি। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে আমাদের উচ্ছেদ অভিযান খুব শিগগিরই পুনরায় শুরু হবে। তার আগে
সবাইকে নোটিস দেয়ার কাজ চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়