আইনমন্ত্রী : মানবাধিকারের উন্নতি হওয়ায় র‌্যাব নতুন নিষেধাজ্ঞায় পড়েনি

আগের সংবাদ

পাহাড়ে সন্ত্রাসী-জঙ্গি একাকার : স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর যোগসাজস, দুর্গম হওয়ায় অভিযান চালানো কঠিন

পরের সংবাদ

ময়নাতদন্ত সম্পন্ন : দুই আনসারের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা, অপমৃত্যু মামলা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি : নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় অগ্রণী ব্যাংকের শাখা কার্যালয়ে দুই আনসার সদস্যের মরদেহ উদ্ধারের পর গতকাল বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তাদের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। তবে পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। এদিকে গতকাল সকালে এ ঘটনায় রায়পুরা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। বিকালে মরদেহ দুটো ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে গত বুধবার ব্যাংকের কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ভেতর থেকে ব্যাংকের নিরাপত্তায় থাকা দুজন আনসার সদস্যদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তারা হলেন- রঞ্জু মিয়া (৪০) ও তৌহিদুল আলম (২৪)। দুজনই ব্যাংকটির রাত্রিকালীন নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। রঞ্জু টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি উপজেলার দড়িচন্দ্রবাড়ি গ্রামের মো. মজিবর রহমানের ছেলে, আর তৌহিদুল ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার পূর্ব সদরদী গ্রামের সিদ্দিক ফকিরের ছেলে।
জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, দুই আনসার সদস্যের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও নিশ্চয়তার জন্য ভিসেরা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংকের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় ব্যাংকের ভেতরে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্যাংকটির কর্মকর্তারা কাজ শেষে কর্মস্থল ত্যাগ করার পর ওই দুই আনসার সদস্য মূল দরজা ও কলাপসিবল গেট তালাবদ্ধ করে বাইরে যান। সন্ধ্যা ৭টার পর স্থানীয় বাজার থেকে আলু, মরিচসহ কাঁচাবাজার ভর্তি একটি ব্যাগ নিয়ে আবার তারা ব্যাংকে ঢোকেন। এ সময় মূল গেটের কলাপসিবল ও দরজা তালাবদ্ধ করে বাজারের ব্যাগ হাতে দুজনই রান্নাঘরে ঢোকেন। অল্প সময়ের মধ্যেই সেখান থেকে বেরিয়ে কার্যালয়ের ভেতরেই রাত আনুমানিক ৮টা পর্যন্ত দুজনকেই অস্থিরভাবে পায়চারি করতে এবং সিগারেট খেতে দেখা যায়। পরে তারা তাদের কক্ষে (স্টোররুম) ঢুকে যান। সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ অনুযায়ী রাত ৮টার পর তারা আর ওই স্টোররুমের বাইরে বের হননি। ধারণা করা হচ্ছে, ওই কক্ষে ঢোকার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তাদের বিশ্রামের জন্য বরাদ্দ থাকা ওই কক্ষে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় পরে কী হয়েছে, তা জানা যায়নি।
উপজেলার আদিয়াবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সেলিম মিয়া জানান, তাদের দুজনের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন দেখতে পায়নি। তবে মুখে ফেনা ছিল। আর ধারণা করা যাচ্ছে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে তারা শেষ কোথায় কী খাবার খেয়েছিলেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নরসিংদী অগ্রণী ব্যাংকের জোনাল প্রধান শাহজাহান খান জানান, স্থানীয় এক নারী প্রতিদিন সকালে ব্যাংকের কার্যক্রম শুরুর আগে এসে আনসার সদস্যদের ডেকে তুলতেন। এরপর কার্যালয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রান্না করেন। প্রতিদিন দুপুরে তার রান্না করা খাবার খান ব্যাংকটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। প্রতিদিনের মতো গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে ওই নারী এসে ডাকাডাকি করছিলেন। কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ পাচ্ছিলেন না। ব্যাংকটির কয়েক কর্মকর্তাও এসে ভেতর থেকে দরজা আটকানো দেখতে পান। দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকির পরও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ রায়পুরা থানার পুলিশকে খবর দেয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্যাংকের কার্যালয়ে এসে কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন পুলিশ সদস্যরা। পরে বিশ্রামের জন্য ব্যবহৃত চৌকির ওপর থেকেই একজন শোয়া ও অন্যজন বসা অবস্থায় দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নরসিংদীর পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম জানান, মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে বিষয়টা এখনো পরিষ্কার না আমরা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
এ ঘটনায় রায়পুরা থানায় অপমৃত্যুর মামলাও হয়েছে বলে জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়