আইনমন্ত্রী : মানবাধিকারের উন্নতি হওয়ায় র‌্যাব নতুন নিষেধাজ্ঞায় পড়েনি

আগের সংবাদ

পাহাড়ে সন্ত্রাসী-জঙ্গি একাকার : স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর যোগসাজস, দুর্গম হওয়ায় অভিযান চালানো কঠিন

পরের সংবাদ

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী : সংস্কৃতিচর্চা দেশকে কখনো পথ হারাতে দেয় না

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, সংস্কৃতিচর্চা দেশকে কখনো পথ হারাতে দেয় না। উগ্রবাদ-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে নির্মূল কমিটির যে অগ্রযাত্রা, সেই অগ্রযাত্রায় আমরা ভবিষ্যতে এই সংগঠনের পাশে থাকব। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহযোগী সংগঠন ‘জাগরণ সাংস্কৃতিক স্কোয়াড’র প্রথম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের পর আমরা দেখেছি রাজাকারদের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা উড়ছে। এরপর শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় এবং নির্মূল কমিটির সহযোগিতায় রাজাকারদের বিচার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নির্মূল কমিটির জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে যে লড়াই তাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। উদ্বোধনী অধিবেশনে সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউটের সাম্মানিক সভাপতি, নাট্যজন বীর মুক্তিযোদ্ধা রামেন্দু মজুমদার, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শিক্ষাবিদ শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি চলচ্চিত্রনির্মাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ, ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ এবং ফরিদা পারভীন ফাউন্ডেশনের সভাপতি সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। নির্মূল কমিটির আইটি সেলের সভাপতি শহীদ সন্তান আসিফ মুনীর অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে নির্মূল কমিটির সাংস্কৃতিক স্কোয়াডের শিল্পীরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন নরওয়ের লোকসংগীত গবেষক, লেখক ও আলোকচিত্রশিল্পী ওয়েরা সেথের। এরপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কে এম খালিদ বলেন, সংস্কৃতিক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের তৃণমূল পর্যায়ে সাংস্কৃতিক নানা কার্যক্রমের পাশাপাশি যাত্রাপালা পরিবেশন আরো ছড়িয়ে দিতে হবে। এ সময় তিনি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চকে যাত্রামঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করার জন্য সংশিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।
শাহরিয়ার কবির বলেন, বহু বাধাবিঘœ ও জেল-জুলুম-হত্যা মোকাবিলা করে গত তিন দশকে নির্মূল কমিটি ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনের বৃহত্তম নাগরিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে এবং বিস্তার লাভ করেছে পাঁচটি মহাদেশে। আমরা নির্মূল কমিটির সাংস্কৃতিক স্কোয়াডকে শক্তিশালী

সাংগঠনিক কাঠামোর ওপর দাঁড় করাতে চাই, যাতে স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে বাঙালির হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রসারে এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
নরওয়ের লোকসংগীত গবেষক, লেখক ও আলোকচিত্রশিল্পী ওয়েরা সেথের বলেন, এই বাঙালির সংগীত ও সংস্কৃতি যদি না থাকত, এই সাংস্কৃতিক চেতনা যদি মনের গভীরে না থাকত- তবে বাংলাদেশ হতো না। এখানকার ভাষা জানতাম না। শুধু সুর জানতাম। এই সুর হৃদয় থেকে আসে। যেখান থেকে আপনাদের জন্ম হয়েছে সেই হৃদয়ের সুর আপনারা হারিয়ে ফেলবেন না।
মুনতাসীর মামুন বলেন, সারাদেশে ৬৪টি জেলায় যেভাবে মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে সেভাবে ৬৪টি জেলায় মডেল সাংস্কৃতিক কেন্দ্র যেন নির্মাণ করা হয়- সরকারের কাছে আমাদের এই প্রস্তাব থাকবে।
রামেন্দু মজুমদার বলেন, বাঙালির আত্মাটা আছে লোকসংস্কৃতির মধ্যে, এটা আমরা ভুলে যাই। অবকাঠামোগতভাবে অনেক উন্নতি হয়েছে, কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের সংস্কৃতি।
নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের একটি সাংস্কৃতিক স্কোয়াড ছিল যেখানে শাহরিয়ার কবিরের লেখা ‘রূপান্তরের গান’ ভারতের বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হতো, যা মুক্তিযোদ্ধাদের দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল।
গোলাম কুদ্দুছ বলেন, বাংলাদেশ আজ নানা দিক থেকে সমৃদ্ধি অর্জন করলেও মনোজগতে উন্নতির দিক থেকে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। এর থেকে উত্তরণের জন্য নির্মূল কমিটির সাংস্কৃতিক স্কোয়াড গঠিত হয়েছে, যা অন্ধকারের মাঝে আলোর সঞ্চার করবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়