আরো এক মামলায় রফিকুল মাদানীর বিচার শুরু

আগের সংবাদ

নাশকতার শঙ্কায় সতর্ক আ.লীগ : ষড়যন্ত্র ঠেকাতে নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশ ক্ষমতাসীন দলের, ‘পাল্টা কর্মসূচি’তে অস্বস্তি বিএনপির

পরের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১০ : ডিস ব্যবসার আড়ালে সন্ত্রাসের রাজত্ব চালাতো কালা জরিপ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : একসময়ে জমির দালালি করলেও ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত ১৫ বছর ধরে ডিস ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন মো. জরিপ মিয়া ওরফে কালা জরিপ (৪০)। এ ব্যবসার আড়ালে একটি সন্ত্রাসী বাহিনীও গড়ে তোলেন তিনি। এই বাহিনীকে ব্যবহার করেই অবৈধ ভূমি দখল, চাঁদাবাজি ও মাদকের কারবারসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন জরিপ মিয়া। দখল করা জমিতে গড়ে তোলা হাসনাবাদ সুপার মার্কেটে রয়েছে তার টর্চার সেল। সেখানেই নিয়মিত মদের আসর ও নারীদের নিয়ে ফুর্তি চলত। প্রায়ই ওই টর্চার সেলে এনে নারীদের নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনাও ঘটিয়েছেন কালা জরিপ। চাঁদাবাজি, ভূমি দখল, মাদক, মারামারি, ধর্ষণ ও হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ২২টি মামলা থাকা সত্ত্বেও তাকে দমানো যায়নি। মামলার স্বাক্ষীদের বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখিয়ে আদালতে যেতে দিতেন না তিনি। কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ধরে টর্চার সেলে নিয়ে করতেন নির্যাতন।
র‌্যাব-১০ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। রাজধানী কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকার হাসনাবাদ সুপার মার্কেটে অভিযান চালিয়ে কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী জরিপ ওরফে কালা জরিপ ছাড়াও তার ৩ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- মো. আনিসুর রহমান (৩৮), মো. জাহিদ ওরফে বাবু (৪৫) ও ঝুমুর আক্তার (২৬)। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি করে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন, গুলি, টেজার গান, এয়ার পিস্তল, রাম দা, ছোরা, চাকু, স্টিলের পাইপ, কাঠের লাঠি, ৫৮০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৪ বোতল বিদেশি মদ, গাড়ি, ৭টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
ফরিদ উদ্দিন বলেন, জরিপের সহযোগী আনিসুর রহমানের একটি এসএস ওয়ার্কশপ রয়েছে। তিনি এ ব্যবসার আড়ালে জরিপের সঙ্গে মাদক ব্যবসাসহ সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। আনিসুরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক ও হত্যামামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। জরিপের অন্যতম সহযোগী মো. জাবিদ ওরফে রহিম দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা এলাকায় গার্মেন্ট ব্যবসা করেন। হাসনাবাদ সুপার মার্কেটের টর্চার সেলে প্রায় সময়ই নারীদের নিয়ে ফুর্তি করতেন কালা জরিপ ও জাবিদ। সেখানে অভিযানের সময় কালা জরিপের নারী সহযোগী ঝুমুর আক্তারকেও আটক করা হয়।
টর্চার সেলে মাদকদ্রব্য ও নারীদের সরবরাহ করতেন আনিসুর রহমান। আর মিরপুর থেকে নিয়মিত জাবেদ এসে জরিপের আসরে যোগ দিতেন। সেখানে রাতভর মদ্যপান ও অসামাজিক কার্যকলাপ চালাতেন তারা। অভিযানে জাবেদের পাজেরো জিপ তল্লাশি করে তার লাইসেন্স করা একটি পিস্তল পাওয়া যায়। এ ছাড়াও পিস্তল সদৃশ একটি অবৈধ এয়ার গান পাওয়া যায়, যার কোনো লাইসেন্স নেই।
তিনি বলেন, র‌্যাবের তদন্তে ওঠে এসেছে, জরিপ নিজেই একজন বড় সন্ত্রাসী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে আসছিলেন। হাসনাবাদ সুপার মার্কেটটি তার কথিত সম্পত্তি। এটাও তিনি দখল করে রেখেছেন। তার সন্ত্রাসী বাহিনীতে ২২ জন সদস্য যুক্ত থাকার তথ্য ও নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। জরিপের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ২২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি মামলা বিচারাধীন। তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কিনা- জানতে চাইলে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, তিনি অপরাধী, এটাই তার পরিচয়। তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আমরা পাইনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়