আরো এক মামলায় রফিকুল মাদানীর বিচার শুরু

আগের সংবাদ

নাশকতার শঙ্কায় সতর্ক আ.লীগ : ষড়যন্ত্র ঠেকাতে নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশ ক্ষমতাসীন দলের, ‘পাল্টা কর্মসূচি’তে অস্বস্তি বিএনপির

পরের সংবাদ

পাবনার বেড়া ও সাঁথিয়া : গো-খাদ্যের দাম দ্বিগুণ বিপাকে খামারিরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পশু পালন ও দুধ উৎপাদনে খরচ বেড়েছে বেড়া ও সাঁথিয়ার খামারিদের। যাবতীয় খরচ মিটিয়ে আয় করতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। দুগ্ধ শিল্প রক্ষায় গো-খাদ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছেন খামারিরা। গত ৬ মাসে গরুর খাবারের দাম প্রায় দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পশু খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খামারি ও পশু পালনকারীরা।
ভুসি-ফিডসহ আনুষঙ্গিক পশুখাদ্য কিনতে না পেরে অনেকেই গরু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। লোকসানের আশঙ্কা থাকলেও আসন্ন কুরবানি ঈদে দাম পাওয়ার আশায় অনেক কষ্টে কেউ আবার টিকে ধরে আছেন গরুর খামার। এ অবস্থা চলতে থাকলে গরু লালন-পালন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হতে পারে বলে ধারণা করছেন খামারিরা।
পশু খাদ্যের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে- গম মোটা ভুসি প্রতিকেজি ৩০-৩২ টাকা ও চিকন ভুসি ৩৪-৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন মোটা ভুসি ৫৫-৬০ টাকা ও চিকন ভুসিও ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তিলের খৈল প্রতি কেজি ৪০-৪২ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৬৪-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ভুট্টা, চালের খুদ, খৈলের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। বাজারে ২০-২৫ টাকার ভুট্টা পাউডার এখন ৪০-৪৫ টাকা, ২০-২১ টাকার চালের খুদ ৩৫-৪০ টাকা, মাষকালাইয়ের ভুসি ৩০-৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫-৫০ টাকা, ৩০-৩৫ টাকা কেজির খৈল ৪৫-৫০ টাকা, ২৫ কেজি বস্তার মিক্স ফিড এক হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১১-১২শ টাকা হয়েছে।
উন্নত মানের ফিডের দামও বস্তাপ্রতি ১ হাজার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১,৪০০-১,৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি মণ খড়ের দাম বেড়ে ৪০০ থেকে ৫০০-৫৫০ টাকা হয়েছে।
সাঁথিয়া উপজেলার পাটগাড়ি গ্রামের গো-খামারি শাহিন খান বলেন, দাম বাড়লেও আশানুরূপ দুধের জন্য অতিরিক্ত টাকা দিয়েই খাবার কিনতে হচ্ছে। খরচ বেড়ে যাওয়ায় দুধ উৎপাদন করে তেমন লাভ হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, আমার খামারে ২টি বাছুরসহ ৫টি গরু আছে। প্রতিদিন দুবেলা ১৬ থেকে ২০ লিটার দুধ পাওয়া যায়। ভুসি ও খড় বাবদ দিনে ৭ থেকে ৮শ টাকা খরচ হয়।
দুধ বিক্রি করে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২শ টাকা আসে। দুই থেকে তিন মাস আগে এক লিটার দুধের উৎপাদন খরচ ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।
উৎপাদন খরচ বাড়লেও মিলে দুধের দাম খুব একটা বাড়েনি। বর্তমানে খুচরা বাজারে এক লিটার দুধ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হলেও মিলে তা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
একই গ্রামের খামারি ফজলু প্রামাণিক বলেন, আমার খামারে বাছুরসহ ৭টি গরু আছে। ৩টি থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ লিটার দুধ আসে। যা ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা আয় হয়। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা খরচ হয়।
তিনি বলেন, গো-চারণ ভূমি কম হওয়ায় মাঠে গরু চরানো যাচ্ছে না। মাঝে বাধ্য হয়ে কচুরি খাওয়াতে হয়েছে। এখন তাও আর নেই। কচুরি খাওয়ালে দুধের ঘনত্ব কমে উৎপাদন কমে যায়।
বেড়া উপজেলার বাঙ্গাবাড়িয়া-শানিলা গ্রামের খামারি খালেক হোসেন বলেন, আমি প্রতি বছর ২-১টা করে ষাঁড় গরু পালন করে কুরবানি ঈদে বিক্রি করে থাকি, কিন্তু এ বছর গো-খাদ্যের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় আর গরু কেনা হয়নি। গরু পালনে এখন পুরাই লোকসান।
পাটগাড়ি প্রাথমিক দুগ্ধ সমিতির সভাপতি মকলেনুর রহমান বলেন, এখানকার বেশির ভাগ খামারিই মিল্ক ভিটায় দুধ দেয়। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবং মিল্ক ভিটা থেকে কাক্সিক্ষত দাম না পাওয়ায় ব্যক্তি পর্যায়ে দুধ বিক্রি করছেন বেশি।
বেড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলায় বর্তমানে গো-চারণ ভূমি ও ঘাসের প্রোডাকশন কম, গো-খাদ্যের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। সরকার ভর্র্তুকি দিলে হয়তো কমে যেতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়