দুদক মামলা : আদালতে হাজিরা দিলেন আব্বাস দম্পতি

আগের সংবাদ

শিল্প খাতে বাড়ল গ্যাসের দাম > সবচেয়ে বেশি বাড়ছে ক্ষুদ্রশিল্পে, মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে : বিশেষজ্ঞদের অভিমত

পরের সংবাদ

সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা : ‘রোডম্যাপ করলেই পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা নেই’

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রোডম্যাপ করলেই যে চুক্তি বাস্তবায়িত হবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই জানিয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির অধিকাংশ ধারা বস্তাবায়ন হওয়ায় পার্বত্য অঞ্চলে উন্নয়ন হচ্ছে। তবে সমতলের মতো পাহাড়ে উন্নয়ন হচ্ছে না, ধীরগতিতে চলছে উন্নয়নের কাজ। তিনি শান্তি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন ও পাহাড়ে সমতলের ধারায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কেউ বলতে পারবে না যে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে সশস্ত্র প্রতিবাদ হয় নাই, সশস্ত্র প্রতিবাদ হয়েছে। যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছে সশস্ত্রভাবে, তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির বিষয়টি সব সময় বিচারের দাবি রাখে। আমরা জানি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ যদি না হয় প্রতিরোধ যোদ্ধাদের স্বীকৃতি আরো বিলম্বিত হবে। আমরা চাই প্রতিরোধ যোদ্ধারা যে কাজ করেছে সে কাজের স্বীকৃতি যেন রাষ্ট্রীয়ভাবে দেয়া হয়।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় দীপংকর তালুকদার এসব কথা বলেন।
নেপালে শান্তি চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে দীপংকর তালুকদার বলেন, আমরা বলছি না যে শান্তি চুক্তির পুরো বাস্তবায়ন হয়েছে। যেখানে রোডম্যাপ করার পরে ২০০০ সালে তাদের পুরো বাস্তবায়নের কথা ছিল তা বস্তবায়িত হয়নি। তার মানে রোডম্যাপ করলেই যে চুক্তি বাস্তবায়িত হবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নাই। অনেকে বলছেন যে, সরকারের আন্তরিকতা নাই। বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, সামাজিক বিন্যাস এগুলোর সঙ্গে নেপালের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সামাজিক বিন্যাস এক এবং অভিন্ন নয়। সেই ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ঠিকই বলেছেন, শান্তি চুক্তির ৭২টা ধারার মধ্যে ইতোমধ্যে ৬৫টি ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে। আর ৬৫টি ধারা বস্তবায়িত হওয়ার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম অবহেলিত এলাকা ছিল সেখানে অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে যে উন্নয়নের ধারা শুরু হয়েছে এটা এখনো সমতল ভূমির তুলনায় অপ্রতুল। তাই এই যে অর্থমন্ত্রণালয় যে নতুন সার্কুলার জারি করেছে তা পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য শিথিল করা যায় কিনা ভেবে দেখা দরকার। এ সময় তিনি রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের অবকাঠামো, বিল্ডিং নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
দীপংকর তালুকদার বান্দরবানের ম্রæ গ্রামে পরপর কয়েকবার অগ্নিসংযোগের বিষয়টি তুলে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। যাতে এই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির গ্রামগুলোতে আর এ ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা না ঘটানো হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। দীপংকর উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বরণের পর কে কোথায় ছিলেন। আমরা যারা ছাত্রলীগ করেছি, যুবলীগ করেছি আমাদের হাত তখন অত প্রশস্ত ছিল না, বেশিরকম দায়িত্ব দেয়ার মতো আমাদের সক্ষমতা ছিল না। তারপরেও আমাদের পক্ষে যতখানি সম্ভব করার চেষ্টা করেছি। আমরা সূর্যের আলো জ¦ালাতে পারিনি কিন্তু আমরা প্রদীপের আলো জ¦ালানোর চেষ্টা করেছি। 
গতকাল মঙ্গলবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মীর মোস্তাক আহমদ রবি বলেন, বিএনপি জামায়াত জোট ও স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠী দেশের সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করে খুব একটা সুবিধা করতে না পেরে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রসহ লবিস্ট নিয়োগ করেছে। তারা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এরা রাষ্ট্রদ্রোহী। এদের বিরুদ্ধে কেন মামলা হবে না? ভিপি নূর ও মান্নারা যতসব অবান্তর ও অবাস্তব কথা বলে চলেছে, যা সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারে। এদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা করা যেতে পারে।
আর এক শ্রেণির ধর্ম ব্যবসায়ী ধর্মের নামে নোংরা রাজনীতি করতে চায়। সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টি করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নœ করতে চায়। এসব ধর্ম ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদদের কঠোরভাবে দমন করতে হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ বলেন, বিশ্বব্যাংক ভুয়া দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঋণ বন্ধ করে দেয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার নিজস্ব বুদ্ধিমত্ত্বা ও আত্মপ্রত্যয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন, যা আজ বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি বিএনপিসহ তথাকথিত ‘সুশীল ব্যক্তিদের’ রটানো গুজব ‘বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো হয়ে যাবে, অর্থনীতি ধ্বসে পড়বে’ এমন সব কথাবার্তা প্রসঙ্গে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ দেশ পরিচালনা ও সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়নি হবেও না। তিনি আরো বলেন, এখন বিএনপি গুম, খুনের অভিযোগ করে। অথচ তারাই ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা কর ইনডেমনিটি দিয়ে খুনিদের বিচার বন্ধ করেছিল। তারাই গ্রেনেড হামলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল। দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা করেছিল। ভোট বন্ধ করার জন্য তরা আগুন সন্ত্রাস করে বহু মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে।
শরিফুল ইসলাম শিমুল বলেন, বিএনপির অনেক বড় বড় নেতা, এমনিক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ইদানিং স্বাধীনতা বিরোধী অসাংবিধানিক কথাবার্তা বলে চলেছেন। তারা দেশ সংস্কারের কথা বলছেন। মির্জা ফখরুলের পাকিস্তানে চলে যাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, বিএনপি জামায়াতসহ স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠী দেশের উন্নয়ন দেখতে পারে না। তারা বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা করেন এবং বিদেশিদের দারস্ত হচ্ছেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আরো আলোচনা করেন- এমপি তামান্না নুসরাত (বুবলী), শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন, নেছার আহমেদ, শামীমা আক্তার খানম, কাজী কেরামত আলী প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়