দুদক মামলা : আদালতে হাজিরা দিলেন আব্বাস দম্পতি

আগের সংবাদ

শিল্প খাতে বাড়ল গ্যাসের দাম > সবচেয়ে বেশি বাড়ছে ক্ষুদ্রশিল্পে, মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে : বিশেষজ্ঞদের অভিমত

পরের সংবাদ

বইমেলার বাকি পক্ষকাল চলছে জোর প্রস্তুতি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শরীফা বুলবুল : মাসব্যাপী বইমেলা শুরুর আগে কেমন থাকে, তাই দেখতে এসেছিলেন ঢাকা সিটি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জুনায়েদ ফারদীন জিসান। গত দুই বছর করোনা থাকায় বইমেলায় আসা হয়নি। এবার প্রতিদিনই আসার ইচ্ছা এই তরুণের। শীতের মিষ্টি রোদে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মাণাধীন প্যাভিলিয়নের সামনে বসা জিসানের হাতে ক্যামেরা, চোখমুখে রাজ্যের বিস্ময়, এত বড় আয়োজন!
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কথা হলো এই বিস্ময় তরুণের সঙ্গে। স্বপ্ন তার মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হবেন। কিন্তু বইয়ের সঙ্গে সখ্যতা ছোটবেলা থেকেই। যে কারণে বইমেলার প্রতি এতটাই অনুরাগ।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং বাংলা একাডেমি অংশ ঘুরে দেখা গেছে, উদ্যানজুড়ে স্ট্রাকচার নির্মাণের পাশাপাশি ত্রিপলের ছাউনি দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে কেউ বাঁশের খুঁটির জন্য গর্ত খুঁড়ছে, কোথাও চলছে বাঁশ কাটার কাজ, ইট টানতে ব্যস্ত কেউ, কেউ করছে হাতুড়ি-পেরেকের ঠোকাঠুকি। একটানা চলছে নির্মাণ, সাজগোজের এই কর্মযজ্ঞ। কারণ মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রায় আসন্ন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘পড়ো বই, গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ শিরোনামে ২০২৩ সালের বইমেলা শুরু হতে যাচ্ছে। এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেজন্য চলছে স্টল নির্মাণের এমন জোর প্রস্তুতি। সে হিসেবে বইমেলার জন্য এখনো বাকি ১৫ দিন (পক্ষকাল)।
জানতে চাইলে বাংলা একাডেমির প্রশাসন, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক ও অমর একুশে বইমেলা-২০২৩ এর পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, বইমেলার স্ট্রাকচার নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতেই এগিয়ে চলছে। এ বছর ছয় শতাধিক স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্যাভিলিয়ন সংখ্যা ৩৫টি। নতুন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১২টি। যা বরাদ্দ হয়েছে তা অনেকটাই চূড়ান্ত ধরে নিতে হবে।
তবে এবারের বইমেলার ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে বিশেষ পরিকল্পনাও করা হয়েছে। প্রথমত, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা প্রাঙ্গণের পুনর্বিন্যাস। পরিসর না কমিয়ে একটু গোছানোভাবে সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে। যেন একনজরে পুরো বইমেলার চিত্রটা দেখা যায় সেভাবেই সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে। যে কারণে বিন্যাসে একটু রদবদল করা হয়েছে। তার ওপর মেট্রোরেলের স্টেশনের কারণে গেটের ক্ষেত্রে কিছুটা সংকুচিত করা হয়েছে। মূল গেট হিসেবে রমনা কালি মন্দিরের গেটটাকে প্রধান গেট হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বইমেলার মূল অনুষঙ্গ হলো বই। তাই বইকে ঘিরেই হচ্ছে সব পরিকল্পনা। এবার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট অংশে কোনো প্রকাশনার প্যাভিলিয়ন বা স্টল রাখা হয়নি। ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের দিকের অংশে গতবারের মতো এবারো গেট থাকবে। তবে সেদিকে এবার প্রকাশনা প্যাভিলিয়ন বা স্টলের পরিবর্তে খাবারের দোকান, নামাজের স্থান, শৌচাগার রাখা হয়েছে। মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, এবারের বইমেলায় বিশেষ জোর দেয়া হচ্ছে ডিজিটাল

দিকনির্দেশনার দিকে। মেলায় আগত পাঠক-বইপ্রেমীরা যাতে খুব সহজেই বইয়ের স্টলসহ মেলার নানা স্থানগুলোয় পৌঁছে যেতে পারেন, সেজন্য নানা ডিজিটাল বোর্ডের ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে। অন্যান্যবারের মতো আলাদা করে কোনো বুথ তৈরি করা হবে না। ডিজিটাল নির্দেশনাতেই থাকবে সব।
মেলার বিন্যাসের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, মেলার বিন্যাস খুব সুন্দর এবং গোছানোই হচ্ছে। হাঁটাচলা করতে সুবিধা হবে। ভিড়ের দিনগুলোতেই এ বিন্যাসের ভালো ফল পাওয়া যাবে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাজ করতে আসা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বইমেলার স্টল নির্মাণকে ঘিরে তারা এখন খুব ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। সকাল থেকে তাদের কাজ শুরু করতে হয়। সন্ধ্যার পরও কাজ চলে।
আসলাম নামের এক শ্রমিক বলেন, ষোলো বছর ধরে বইমেলার স্টল নির্মাণের কাজ করছি। ভালোই লাগে বইমেলার স্টল নির্মাণের কাজ করতে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়