নিউমার্কেটে সংঘর্ষ : তিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পেছাল

আগের সংবাদ

নামমাত্র প্রস্তুতিতে পাঠদান : বই পায়নি অনেক শিক্ষার্থী > বই, সহায়িকা ছাড়াই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ > নোট-গাইড ছাপার তোড়জোড়

পরের সংবাদ

বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব মোকাবিলা প্রসঙ্গে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বৈশ্বিক মন্দার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত গেøাবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টসে ধারণা করা হয়েছে এ বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়ে ১.৭ শতাংশে নামবে, যা প্রায় ৩ দশকের মধ্যে তৃতীয় দুর্বলতম প্রবৃদ্ধির গতি এবং এটি গত বছর জুন মাসের পূর্বাভাসের চেয়ে ১.৩ শতাংশ কম। বৈশ্বিক মন্দার কারণ হিসেবে সংস্থাটি করোনা মহামারি এবং বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের কথা উল্লেখ করেছে। বিশ্বব্যাপী উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, আর্থিক অবস্থার অবনতি এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ বৈশ্বিক মন্দাকে করেছে ত্বরান্বিত। বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এ বছর বিশ্বব্যাপী শুধু অর্থনৈতিক মন্দারই পূর্বাভাস দেয়নি, ভয়াবহ খাদ্য সংকটেরও আভাস দিয়ে রেখেছে।
বিশ্বব্যাংক রিপোর্টে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই বৈশ্বিক মন্দা তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ীভাবে আঘাত করতে চলেছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক সুদের হার বৃদ্ধি এবং প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের দুর্বল প্রবৃদ্ধির কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো বিরূপভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিবেশের প্রভাবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান জ¦ালানি খরচ এবং সরবরাহের সীমাবদ্ধতার কারণে শিল্প উৎপাদনের দিক থেকে ইতোমধ্যে আমরা পিছিয়ে পড়েছি।
২০১৯ সাল থেকে ক্রমবর্ধমান আমদানির ব্যয় আমাদের বাণিজ্য ঘাটতিকে প্রায় দ্বিগুণ করেছে। যার প্রভাব আমাদের রিজার্ভে বেশ ভালোভাবেই পড়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী গত জুনের শুরু থেকে বাংলাদেশি টাকার ১৮ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়েছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৮ বিলিয়ন কমেছে, যা ডিসেম্বরে মুদ্রাস্ফীতিকে ৮.৭ শতাংশে ঠেলে দিয়েছে।
এ ঘাটতি আরো বড় হতে পারত যদি তৈরি পোশাকের চাহিদা এবং বৈশ্বিক বাজারে ক্রমবর্ধমান শেয়ারের জোরালো বৃদ্ধি না হতো। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী আসন্ন এই অর্থনৈতিক মন্দার ধ্বংসাত্মক প্রভাব ঠেকাতে বাংলাদেশে কতটা প্রস্তুত?
বর্তমান সরকার বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব ঠেকাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ ইতোমধ্যেই গ্রহণ করেছে। সরকার জ¦ালানি খরচ কমাতে ব্ল্যাকআউট, বিলাসবহুল যানবাহন এবং পণ্য ক্রয় করা কঠিন করে তোলার জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। গৃহীত পদক্ষেপগুলোর সঙ্গে আমাদের আরো বেশকিছু প্রয়োজনীয় কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। আমাদের দেশের আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদনে বিশেষ নজর দিতে হবে। কমিয়ে ফেলতে হবে সরকারি ও বেসরকারি খাতে অপ্রয়োজনীয় খরচ। পরিকল্পিতভাবে কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন এক টুকরো আবাদি জমিও যেন পতিত না থাকে। বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান দুটি সূচক হচ্ছে পোশাক খাত ও প্রবাসী আয়। এ দুটি খাতের ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে। প্রবাসীরা যাতে তাদের রেমিট্যান্স সহজেই দেশে পাঠাতে পারে সেই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে খরচের হার কমিয়ে সঞ্চয়ী হতে হবে। সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপ ও জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই পারবে বৈশ্বিক মন্দার ভয়াবহ প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে।

মৃদুল কান্তি ধর : শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়