নিউমার্কেটে সংঘর্ষ : তিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পেছাল

আগের সংবাদ

নামমাত্র প্রস্তুতিতে পাঠদান : বই পায়নি অনেক শিক্ষার্থী > বই, সহায়িকা ছাড়াই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ > নোট-গাইড ছাপার তোড়জোড়

পরের সংবাদ

নেপালে বিমান বিধ্বস্ত : দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নেপালের পোখরায় ইয়েতি এয়ারলাইন্সের একটি বিমান অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হওয়ায় ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে। গত রবিবার সকালে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ৯এন-এএনসি এটিআর-৭২ বিমানটি কাঠমান্ডু থেকে স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৩৩ মিনিটে পোখরার উদ্দেশে রওনা দেয়। উড্ডয়নের ২০ মিনিটের মধ্যে পোখরা বিমানবন্দরে অবতরণের সময় আগুন ধরে যায়। পুরাতন ও নতুন বিমানবন্দরের মাঝামাঝি সেতি নদীর তীরে গিরিপথে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত বিমানটিতে মোট ৬৮ জন যাত্রী এবং চারজন ক্রু ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ৫৩ জন নেপালি, ৫ জন ভারতীয়, ৪ জন রাশিয়ান এবং ২ জন কোরিয়ান নাগরিক ছিলেন। এছাড়া আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্সের একজন করে নাগরিক ছিলেন বিমানটিতে। এই সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত দুর্ঘটনায় সবাই নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। নেপালের বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় বলছে, যান্ত্রিক ত্রæটির কারণে এই বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় আমরা শোকাহত। নেপালে বিমান দুর্ঘটনা নতুন নয়। গত তিন দশকে দেশটিতে ২৭টি বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। ১৯৯২ সালের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পরে এটিই নেপালে সবচেয়ে মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনা। এভিয়েশন সেফটি নেটওয়ার্কের তথ্যানুযায়ী, সেই বছর পাকিস্তানি এয়ারবাস এ৩০০ কাঠমান্ডুতে অবতরণ করতে গিয়ে একটি পাহাড়ে বিধ্বস্ত হয়। ওই বিমানটি ১৫ বছরের পুরনো ছিল। গত এক যুগে নেপালে অন্তত ৮টি বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। যাতে যাত্রী ও ক্রু মিলে ১৬৬ জন নিহত হয়েছেন। ২০১৮ সালের ১২ মার্চ নেপালের কাঠমান্ডু ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশের ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান। সেই দুর্ঘটনায় বিমানের মোট ৫১ জন যাত্রী এবং ক্রু নিহত হন। আহত হন ২০ জন। সর্বশেষ গত বছর ২৯ মে পোখরা থেকে পশ্চিমের শহর জমসমে যাওয়ার পথে ২২ জন যাত্রী নিয়ে তারা এয়ারের একটি বিমান নিখোঁজ হয়। পরে পাহাড়ের একটি খাঁজে ভেঙে পড়া বিমানটির সন্ধান পাওয়া যায়, যেখানে যাত্রীদের সবাই নিহত হয়েছেন। বিশ্বের সর্বোচ্চ ১৪টি পর্বত শৃঙ্গের ৮টি রয়েছে নেপালে, যার মধ্যে হিমালয় অন্যতম। এসব দুর্গম এলাকা, খারাপ আবহাওয়া, নতুন বিমানের জন্য বিনিয়োগের অভাব এবং কার্যকরী বিমানগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকমতো নজর না দেয়ায় নেপালে বিমান দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে। দুর্ঘটনা তদন্তের জন্য ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে নেপাল সরকার। আমরা চাই এ দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। প্রতিটি জীবনই অত্যন্ত মূল্যবান। যান্ত্রিক ত্রæটির কারণে বিমান দুর্ঘটনা মোটেও কাম্য নয়। বিমান কর্তৃপক্ষ এর দায় এড়াতে পারে না। বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে শেষ মুহূর্তে বৈমানিকের কী কথা হয়েছিল, সেটি শুনলেই অনেক কিছু জানা যাবে। এছাড়া ব্ল্যাকবক্সের তথ্য বিশ্লেষণ করলেও প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। যদি বিমানের সমস্যা থাকে, রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যা থাকে, সেটিও তদন্তের মাধ্যমে উদ্ঘাটন করা দরকার। পুরনো বা যান্ত্রিক ত্রæটির কারণেই যদি এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে তবে দায়ীদের অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়