পদ্মা সেতু : মোটরসাইকেল চলাচল চেয়ে হাইকোর্টে রিট

আগের সংবাদ

আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ : বিশ্বকাপে অপ্রতিরোধ্য টাইগ্রেসরা

পরের সংবাদ

নেপালে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ৬৮

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় অন্তত ৬৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমানটি গতকাল রবিবার রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পোখারায় যাওয়ার পর অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। বিমানে মোট ৭২ আরোহীর মধ্যে ৪ জন ছিলেন ক্রু। বাকি ৬৮ জন যাত্রীর মধ্যে অন্তত ১৫ জন বিদেশি নাগরিক। খবর রয়টার্স, কাঠমান্ডু পোস্ট।
গতকাল সকালে কাসকি জেলার পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং পুরনো বিমানবন্দরের মাঝামাঝি এলাকায় দুই ইঞ্জিনের এটিআর ৭২ বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়ে। এ সময় বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনার পরপরই মরদেহ উদ্ধারের খবর আসতে থাকে। সন্ধ্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৮ জন হয়েছে বলে জানায় দেশটির সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।
হিমালয় কোলের দেশ নেপালের পশ্চিমাঞ্চলীয় পোখারা এলাকা জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। কাঠমাণ্ডু থেকে অনেক পর্যটক আকাশপথে সেখানে যান নিয়মিত। স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ছোট একটি বিমান অবতরণের সময় হঠাৎ কাত হয়ে সরাসরি মাটির দিকে নেমে আসতে থাকে।
জানা গেছে, দুই ইঞ্জিনের এটিআর ৭২ বিমানগুলো যৌথভাবে তৈরি করে এয়ারবাস এবং ইতালির লিওনার্দো কোম্পানি। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের এ ধরনের ৬টি বিমান রয়েছে। দুর্ঘটনার শিকার হওয়া বিমানটি ১৫ বছরের পুরনো ছিল।
ইয়েতি এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র সুদর্শন বার্তাউলা বলেছেন, ওই ফ্লাইটের ৭২ আরোহীর মধ্যে ৬৮ জন যাত্রী, বাকিরা ক্রু। যাত্রীদের মধ্যে ১৫ জন ছিলেন বিদেশি নাগরিক। তাদের ৫ জন ভারতীয়, ৪ জন রুশ, দুজন দক্ষিণ কোরীয় এবং আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনার একজন করে ছিলেন।
কর্মকর্তারা জানান, পাহাড়ি এলাকায় যেখানে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে সেখানে কয়েকশ উদ্ধারকর্মী কাজ করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ছবি ও ভিডিওতে পাহাড়ি এলাকায় বিমানের জ্বলন্ত ধ্বংসস্তূপের কাছে আগুন নেভাতে দেখা যায় উদ্ধারকর্মীদের। দূর থেকেও কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায় ওই এলাকায়। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কৃষ্ণ ভাণ্ডারি বলেন, বিমানটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আরো মৃতদেহ মিলবে বলে আমরা ধারণা করছি।
দুর্ঘটনার পরপরই প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল প্রচণ্ড মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন। রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোকে দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা চালাতে নির্দেশ দেন তিনি। তবে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে দুর্গম একটি গিরিখাদে পড়ায় সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে বলে উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন।
নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র জগন্নাথ নিরুলা বলেন, বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়ার সময় ওই এলাকার আকাশ পরিষ্কার ছিল। স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে পোখারা বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটির সর্বশেষ সংকেত পাওয়া যায়। এরপর সেটি বিধ্বস্ত হয়।
দুর্ঘটনার পরপরই সেখানে পৌঁছান অরুণ তামু নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা। তিনি বলেন, বিমানটির অর্ধেকটা পড়ে পাহাড়ের মধ্যে। বাকিটা পড়ে সেতি নদীর খাড়িতে।
বিমানটি যখন মাটির দিকে নেমে আসছিল, সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা খুম বাহাদুর ছেত্রী। ঘটনাক্রমে তখন তিনি ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার বর্ণনায়, ‘আমি দেখলাম প্লেনটা দুলছে, বাম আর ডানদিকে হেলে যাচ্ছে বারবার। হঠাৎ নাক নিচের দিকে দিয়ে ওটা নামতে শুরু করল। তারপর ওই পাহাড়ের ওপরের খাদের মধ্যে হারিয়ে গেল।’
নেপালে বিমান দুর্ঘটনা একেবারে বিরল নয়। গত এক যুগে নেপালে অন্তত ৮টি বিমান দুর্ঘটনা হয়েছে যাতে যাত্রী ও ক্রু মিলে ১৬৬ জন নিহত হয়েছে। ২০১৮ সালের ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে নামার সময় বাংলাদেশের ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হলে ৫১ জনের প্রাণ যায়। এরপর পোখারারটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়