মির্জা ফখরুল : বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গণবিরোধী

আগের সংবাদ

সতর্ক-সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি : আমানত সুদের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার > নীতি সুদহার বাড়ল > রেপো সুদহার বেড়েছে ২৫ বেসিস পয়েন্ট

পরের সংবাদ

‘কার্যত ন্যাটোর সদস্য’ দাবি ইউক্রেনের

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়েছে। যে সত্যটি এতদিন গোপন ছিল তা গতকাল প্রকাশ্যে নিয়ে এলো ইউক্রেন। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকভ বলেই ফেলেছেন, ইউক্রেন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর ‘কার্যত’ (ডি ফ্যাক্টো) সদস্য হয়ে গেছে। ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান বা ইউক্রেনের এই সামরিক অবস্থানের কারণেই মূলত স্পর্শকাতরতা সৃষ্টি হয়েছিল মস্কোর। আর এই স্পর্শকাতরতা থেকেই ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পরিপ্রেক্ষিত গড়ে ওঠে।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার পাশাপাশি ২৮টি ইউরোপীয় দেশ নিয়ে গঠিত সামরিক জোটে ন্যাটোতে যোগ দিতে কয়েক বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। কিয়েভের এই পদক্ষেপ রাশিয়ার জন্য নিরাপত্তা হুমকি- এ কথা আগে থেকেই বলে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। এদিকে সংক্ষিপ্ত প্রক্রিয়ায় দ্রুততম সময়ে ন্যাটোর সদস্য হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে আসছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে সহযোগিতার প্রতিশ্রæতি সত্ত্বেও, এমনকি যুদ্ধ শেষের পরও ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্য করার বিষয়টি জোটের সদস্যরা বিবেচনা করবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। ন্যাটো চুক্তির অনুচ্ছেদ ৫ অনুযায়ী, জোটের কোনো সদস্যের ওপর সশস্ত্র হামলা সবার ওপর হামলা হিসেবেই বিবেচিত হবে।
সদস্য হওয়া নিয়ে করা মন্তব্যকে রাশিয়া এমনকি ন্যাটোও বিতর্কিত হিসেবে দেখবে না বলে মনে করেন ইউক্রেনের

প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, কেন এটা বিতর্কিত হবে? এটা সত্য, এটাই বাস্তবতা। আমি নিশ্চিত, অচিরেই আমরা সব প্রক্রিয়া মেনে ন্যাটোর সদস্য হব।
ইউক্রেনে হামলাকে পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে অস্তিত্বের লড়াই হিসেবে দেখে আসছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। তার অভিযোগ, পশ্চিমারা রাশিয়াকে দুর্বল করতে চায়। ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানকে আগ্রাসন বলে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো। কিয়েভকে অস্ত্র দিয়ে তারা সহায়তা করে আসছে। রাশিয়ার কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, ইউক্রেনে তারা ন্যাটোর বিরুদ্ধেই লড়ছেন।
এদিকে ইউক্রেন ও রাশিয়া- দুই দেশই এই বসন্তে নতুন করে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রেজনিকভ বলেন, ট্যাঙ্ক-যুদ্ধবিমানসহ ইউক্রেনের বহুল প্রতীক্ষিত অস্ত্র পাওয়ার বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। ইউক্রেনে ৭২টি ১৫৫ এমএম হাউইৎজার পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুর দিকে প্রতিবেশী দেশ বেলারুশ থেকে ইউক্রেনে প্রবেশ করে রুশ সেনারা। আর গত অক্টোবর থেকে বেলারুশে যৌথ সামরিক মহড়ার জন্য সেনা মোতায়েন করে আসছে মস্কো। ইউক্রেন যুদ্ধে বেলারুশও যোগ দেবে বলে সম্প্রতি জানিয়েছে রাশিয়া।
রাশিয়া-ইউক্রেন দ্ব›েদ্বর একক বা সবচেয়ে বড় ক্ষতি হচ্ছে ইউরোপের। যদিও রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার সূত্রপাত করেছে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান গত শুক্রবার হাঙ্গেরিয়ান টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তার পূর্বেকার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ইইউ তার নিষেধাজ্ঞা নীতি নিয়ে ভুল স্বীকার করার মতো সাহসী নয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের লাভ হলেও সার্বিকভাবে ক্ষতি হয়েছে ইউরোপের। ইউরোপের বড় দেশগুলোর অবস্থান পরিবর্তন করার জন্য হাঙ্গেরি যথেষ্ট সক্ষম নয়, তবুও রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাগুলো বারবার অকার্যকর হয়েছে। এই অবস্থান থেকে সরে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে হচ্ছে।
ভিক্টর অরবান এর আগে বলেছিলেন, ইউরোপ ও তার মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য রাশিয়াকে একঘরে করতে গিয়ে জ¦ালানির জন্য ৫ থেকে ১০ গুণ জরিমানা গুনতে বাধ্য হচ্ছে। তা মুদ্রাস্ফীতিকেও প্রভাবিত করেছে।
ইউক্রেন সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইউরোপে তীব্র জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। ব্লæমবার্গ রিপোর্ট করেছে যে ইউরোপ রাশিয়ার জ¦ালানি প্রত্যাখ্যান করে এক ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে পড়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র তার এলএনজি ইউরোপে বিক্রি করছে ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি দামে।
হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজ্জার্তোও বলেছেন, ইউরোপের মন্দার সুবিধাভোগী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়