মির্জা ফখরুল : বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গণবিরোধী

আগের সংবাদ

সতর্ক-সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি : আমানত সুদের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার > নীতি সুদহার বাড়ল > রেপো সুদহার বেড়েছে ২৫ বেসিস পয়েন্ট

পরের সংবাদ

আওয়ামী লীগের যৌথসভায় শেখ হাসিনা : ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সতর্ক থাকার নির্দেশনা নেতাদের

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৫, ২০২৩ , ১:২৪ পূর্বাহ্ণ

ঝর্ণা মনি : আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তৃণমূলকে শক্তিশালী করার জন্য দলীয়প্রধান শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদ সদস্যরা। দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে দলীয় সভাপতির নির্দেশনা চেয়েছেন তারা। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতাদের আরো বেশি সক্রিয় হওয়ার অনুরোধও করেছেন। জবাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন সরকারপ্রধান। গতকাল শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, উপদেষ্টা পরিষদ ও জাতীয় কমিটির যৌথ সভায় এই নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, যৌথ সভায় জেলা থেকে আসা জাতীয় কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে প্রায় ২০ জন বক্তৃতা করেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোনো নেতা বক্তব্য দেননি। বক্তৃতায় লবিস্ট নিয়োগ করে সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দূতাবাসগুলোকে আরো বেশি সক্রিয় হওয়ার দাবি জানিয়েছেন নেতারা।
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে। এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সবাইকে জবাব দিতে হবে। এসব অপপ্রচারের তথ্যভিত্তিক জবাবসহ টানা তিন মেয়াদে সরকারের উন্নয়ন-সাফল্য তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানোর তাগিদ দিয়ে দলীয়প্রধান বলেন, অভ্যন্তরীণ কোন্দল জাতীয় নির্বাচনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, এজন্য তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সব দ্ব›দ্ব-কোন্দল মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন-সাফল্য তুলে ধরতে হবে। পাশাপাশি বিএনপির শাসনামলের চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, সরকার অনেক কাজ করেছে। এর সুফল জনগণ পাচ্ছে। জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই।
দুর্নীতির তথ্য দিন, ব্যবস্থা নেব : এর আগে সূচনা বক্তব্যে দুর্নীতি নিয়ে সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শুধু মুখে দুর্নীতির কথা বললেই হবে না, সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ দিলে সরকার ব্যবস্থা নেবে। কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে আমাকে তথ্য দিন, আমি ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, এখন এমন লোকজনের কাছ থেকে আমাকে শুনতে হচ্ছে, যারা নিজেরাই দুর্নীতিগ্রস্ত। যাদের আমলে দুর্নীতিতে বাংলাদেশ পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবসা করতে গিয়ে গরিব মানুষের ওপর এমন চাপ যে, সুদ দিতে দিতে তাদের অনেক সময় বাড়িঘর ছেড়ে এলাকা থেকে চলে যেতে হয়েছে অথবা আত্মহত্যা করতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৪ বছরে সরকার দেশের অনেক উন্নয়ন করেছে। করোনার পর বিশ্বমন্দার মাঝে মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করতে নানা খাতে ভর্তুকি দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কথা চিন্তা করতে হবে। নিজস্ব উৎপাদনের মাধ্যমে নিজেদের চাহিদা মেটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। মন্দার কারণে সরকার অনেক হিসাব-নিকাশ করে চলছে। সরকারের সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি

বলেন, গরিব মানুষের টাকা দিয়েই তারা দেশে নাম-টাম করে। বেশ ভালোই আছে এবং প্রচুর অর্থসম্পদের মালিক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগও করেছেন। এ টাকাগুলো কোথা থেকে এলো? এগুলো গরিবের রক্তচোষা টাকা। এটা বাস্তব কথা।
জনগণকে দেয়া অঙ্গীকার অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সব সময় জাতির কল্যাণে কাজ করে এবং দেশের মানুষ এর সুফলও পাচ্ছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব সময় আমরা জনগণকে দেয়া অঙ্গীকার অনুযায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নির্বাচনী ইশতেহারকে স্মরণ রেখে জাতীয় বাজেট প্রণয়ন করেছি। আওয়ামী লীগ জনগণকে যে কথা দেয়, সে কথা রাখে। ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশের যে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে, তা অনেকেই মেনে নিতে পারছে না। নানা ধরনের কথা রটায়। এত উন্নতি করার পরও একটা শ্রেণি আছে, যাদের কোনো কিছুই ভালো লাগে না।
সরকারপ্রধান বলেন, একটা পরিবর্তন এসেছে মানুষের জীবনযাত্রায়। রাস্তাঘাট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার আমরা প্রভূত উন্নতি করেছি। তারপরও এসব উন্নতিও অনেকে দেখেও না দেখার ভান করে। স্বীকার করতে চায় না, করতে চাইবেও না। প্রতিটি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে আমরা ঘর করে দিচ্ছি। আমাদের কথা ছিল, প্রতিটি ঘরে ঘরে আমরা আলো জ্বালাব, তাও আমরা পেরেছি। দেশে এরই মধ্যে দারিদ্র্যের হার অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে করোনা ভাইরাস মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে এই হার আরো ৩ থেকে ৪ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হতো।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ‘ভেঙ্গেছে দুয়ার এসেছ জ্যোতির্ময়’ শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনটিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রচিত বইটি সম্পাদনা করেছেন এসএসএফের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান। বইটি প্রকাশ করেছে জয়ীতা প্রকাশনী এবং বইটির প্রকাশক ইয়াসিন কবীর জয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়