আ.লীগ নেতা টিপু হত্যার প্রতিবেদন পেছাল

আগের সংবাদ

মাদকের বিরুদ্ধে ‘নতুন যুদ্ধ’ : তালিকায় ৯৩ শীর্ষ মাদক কারবারি, এক লাখ মাদকাসক্ত, জনসচেতনতা বাড়াতে প্রস্তুত অ্যাপ

পরের সংবাদ

ভক্তদের সুখবর দিলেন নাওমি ওসাকা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : অনেক দিন থেকে টেনিস কোট থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছেন জাপানের সাবেক তারকা নাওমি ওসাকা। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই টেনিস থেকে দূরে আছেন তিনি। এমনকি গত ১ জানুয়ারি নাম প্রত্যাহার করে নেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেন থেকে। কেন জাপানের এই তারকা টেনিস থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখছেন তিনি তা নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছিল। অবশেষে ভক্তদের সুখবর দিলেন ওসাকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে জানিয়েছেন মা হতে চলেছেন তিনি। এই জন্য ২০২৪ সালের শুরুর ভাগ পর্যন্ত টেনিসে তাকে দেখা যাবে না। টুইটারে পোস্টের সঙ্গে ওসাকা মা হতে যাওয়ার একটি স্ক্যানের ছবিও পোস্ট করেন।
সেখানে তিনি লিখেছেন, আমি জানি আমার সামনে অনেক কিছুই আছে। তবে একটা জিনিস নিয়ে আমাকে ভাবতে হচ্ছে, তা আমার সন্তান। সে যেন আমার ম্যাচ দেখে অন্যদের গল্প বলতে পারে। সে যেন বলতে পারে, এই যে খেলতে দেখছ না, ও আমার মা। আর ২০২৩ সালটা আমার অনেক কিছু শেখার বছর। আমি আশা করছি আপনাদের সবার সঙ্গে আমার আসছে বছরের শুরুর দিকে দেখা হবে। ২০২৪ সালের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন দিয়ে ফিরব আমি। সবাইকে ভালোবাসি।
এদিকে টেনিস কোটে আসার পেছনে ওসাকাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। ইচ্ছে করলেই ব্যয়বহুল এই টেনিস খেলা আয়ত্ত করা সম্ভব নয়। আর ওসাকার কাছে এটা তো দিনের বেলায় স্বপ্ন দেখার মতো ছিল। পাঠক একনজরে জেনে নেই তার টেনিসে আসার নেপথ্যের ইতিহাস। ওসাকা ১৯৯৭ সালে ১৬ অক্টোবর জাপানের চক কু স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তার মায়ের নাম ওসাকায় তামাকি ওসাকা এবং বাবা লিওনার্ড ফ্রান্সেস। তার মা জাপানের হক্কাইডোর বাসিন্দা, এবং তার বাবা হায়তির জ্যাকমেলের বাসিন্দা। মারি নামে ওসাকার একটি বড় বোন আছে। তিনিও একজন পেশাদার টেনিস খেলোয়াড়। পরিবারটি জাপানে থাকাকালীন দুটি মেয়েকে ব্যবহারিক কারণে তাদের মায়ের পরিবারের নাম দেয়া হয়েছিল। ওসাকার বাবা যখন নিউইয়র্কের কলেজছাত্র ছিলেন তখন হক্কাইডোতে গিয়েছিলেন তখন তার বাবা-মার পরিচয় হয়েছিল।
ওসাকার যখন তিন বছর বয়সে ছিল, তার পরিবার বসবাসের জন্য জাপান থেকে লং আইল্যান্ডের নিউইয়র্কের ভ্যালি স্ট্রিমে চলে এসেছিল। ওসাকার বাবা মেয়েদের টেনিস খেলা শেখাতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন ১৯৯৯ সালের ফরাসি ওপেনে উইলিয়ামস বোনদের খেলা দেখে। টেনিসের অভিজ্ঞতা না থাকলেও ওসাকার বাবার খেলাটি বেশি প্রিয় ছিল। তাই নানা বাধার মধ্যে হাল ছেড়ে দেননি লিওনার্ড ফ্রান্সেস। যুক্তরাষ্ট্রে অধিষ্ঠিত হওয়ার পরে তিনি ওসাকা এবং মারির কোচিং শুরু করেছিলেন। এরপর ২০০৬ সালে ওসাকার পরিবার ফ্লোরিডায় চলে গিয়েছিল। তখন এই টেনিস তারকার বয়স ছিল আট বা নয় বছর। সেখানে গিয়ে প্রশিক্ষণের আরো ভালো সুযোগ পায় ওসাকা। তিনি পেমব্রোক পাইনের পাবলিক কোর্টে অনুশীলন করেছিলেন। যখন তার বয়স ১৫ বছর, তিনি প্যাট্রিক টউমার সঙ্গে আইএসপি একাডেমিতে কাজ শুরু করেছিলেন। ২০১৪ সালে ওসাকা হ্যারলড সলোমন টেনিস একাডেমিতে চলে এসেছিলেন। পরে তিনি প্রো ওয়ার্ল্ড টেনিস একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ২০১৯ সালে ওসাকা বিশ্বের এক নম্বর নারী টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন। ২৫ বছর বয়সি এই তারকা যখন সেপ্টেম্বর মাসে টোকিও প্যান প্যাসিফিক টেনিস থেকে তলপেটের ব্যথা নিয়ে সরে দাঁড়ালেন, তখন অনেকেই উদ্বিগ্ন হয়েছিলেন। এ ব্যাপারে ওসাকা নিজে কোনো ব্যাখ্যা না দেয়ায় বিভ্রান্তিও বাড়ছিল। জাপানি এই টেনিস তারকা বেড়ে উঠেছেন যুক্তরাষ্ট্রে।
এই মুহূর্তে তিনি র‌্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ৪৭তম নারী টেনিস তারকা। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও ইউএস ওপেন মিলিয়ে এখনো পর্যন্ত চারটি গ্র্যান্ডস্লাম জিতেছেন ওসাকা। ২০১৮ ও ২০২০ সালে জিতেছেন ইউএস ওপেন। ২০১৯ ও ২০২১ সালে জিতেছেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। অর্থ ও বাণিজ্যবিষয়ক সাময়িকী ফোর্বসের হিসাব অনুযায়ী তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৫ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। তিনি এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী টেনিস তারকা। তবে তার বাণিজ্যিক সফলতা এখনো পুরোপুরিভাবে টেনিস কোটে প্রতিফলিত নয়। ২০২১ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেনে একটি ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে না এসে বিতর্ক ছড়িয়েছিলেন ওসাকা। কর্তৃপক্ষ তাকে নিষিদ্ধ করারও হুমকি দিয়েছিল। কারণ, ফ্রেঞ্চ ওপেনে ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলন করাটা একজন খেলোয়াড়ের চুক্তিরই অংশ। ওসাকা পরে টুর্নামেন্ট থেকেই নাম প্রত্যাহার করে নেন। তখন তিনি জানিয়েছিলেন ২০১৮ সালের ইউএস ওপেন থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছেন। যাইহোক মা হওয়ার পর ফের নতুন রূপে ওসাকা টেনিস কোট মাতাবেন এমনটাই প্রত্যাশা ভক্তদের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়