কুমিল্লাকে হারের স্বাদ দিল রংপুর

আগের সংবাদ

বাংলাদেশ-ব্রাজিল বাণিজ্য বাড়ানোয় জোর প্রধানমন্ত্রীর

পরের সংবাদ

সীতাকুণ্ডে এক বছরে ভরাট অর্ধশতাধিক পুকুর

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মুহাম্মদ ইউসুফ খাঁন, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) থেকে : পুকুর ও জলাশয় ভরাটের আইন লঙ্ঘন করে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পৌরসদরে গত এক বছরে অর্ধশতাধিক পুকুর ভরাট করা হয়েছে। কলেজ রোডের বড়বাজার নামক স্থানে প্রায় একশ বছরের পুরনো একটি পুকুর ভরাট চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসন নীরব থাকায় অবাধে পুকুর ভরাট চলছে।
সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড মহাদেবপুর গ্রামের মহাদেবপুর মৌজার কলেজ রোডের পুকুরটির আয়তন প্রায় ৫৯ শতক। যুগ যুগ ধরে পুকুরটি স্থানীয়রা নিত্যকাজে ব্যবহার করে আসছেন। সরজমিন কলেজ রোড বড়বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শতবর্ষী ওই পুকুরটিতে রাতের আঁধারে ট্রাকে করে বালু ফেলে ধীরে ধীরে ভরাট করা হচ্ছে পুকুরটি। এ সময় পুকুর পাড়ে কেটে ফেলা গাছপালার ঢাল পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পুকুরটি নিয়ে দুটি পক্ষের বিরোধ রয়েছে। এ নিয়ে আদালতে উভয়পক্ষে মামলাও চলমান আছে। তবে শতবর্ষী পুকুরটির উপর বহুতল ভবন তুলতে ও বেশি দামে প্লট বিক্রি করতে পুকুরটি ভরাট করছে কলেজ রোডের বাসিন্দা গৌতম অধিকারীসহ কয়েকজন এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এজন্য ট্রাকে ট্রাকে রাতে বালু ফেলা হচ্ছে পুকুরে। ইতোমধ্যে প্রভাবশালী একটি গ্রুপকে পুকুর ভরাটের দায়িত্বও দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়। প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০ অনুযায়ী কোন পুকুর, জলাশয়, নদী, খাল ইত্যাদি ভরাট করা বেআইনি। আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী, প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন বা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার, ভাড়া, ইজারা বা হস্তান্তর বেআইনি। কোনো ব্যক্তি এ ধারা লঙ্ঘন করলে আইনের ৮ ও ১২ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একই সঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী যে কোনো ধরনের জলাশয় ভরাট সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
তবে এসব আইনের কোন তোয়াক্কা নেই সীতাকুণ্ডে। গত ১ বছরে কেবল পৌরসদরেই ভরাট করা হয়েছে অর্ধ শতাধিক বড় বড় দিঘি ও পুকুর। সীতাকুণ্ডের উত্তর বাজারের দাশ পাড়ায় একটি প্রাচীন পুকুর ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে সীতাকুণ্ড চক্ষু হাসপাতালের বহুতল ভবন ও মার্কেট।
একই এলাকায় ভূঁইয়া টাওয়ারের পেছনে আরেকটি পুকুর ভরাট করা হয়েছে। গত কয়েক মাস আগে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে পুকুর ভরাটের কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও তা মানেননি মালিকরা।
পুকুরটির মালিকানা দাবি করে সীবলী সালেম ভোরের কাগজকে বলেন, পুকুরের জায়গাটি আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি। বদিউল আলম, এস এম মুরাদ, গৌতম অধিকারীসহ একটি পক্ষ জোরপূর্বক ভরাট করে এটি দখলের পাঁয়তারা করছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি।
সীতাকুণ্ড সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) আশরাফুল আলম বলেন, কয়েকদিন আগে বিষয়টি আমার নজরে আসলে আমি নিষেধ করি। পুকুর ভরাট বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, পুকুরটি পরিদর্শন করেছি। ভরাটের কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়