কুমিল্লাকে হারের স্বাদ দিল রংপুর

আগের সংবাদ

বাংলাদেশ-ব্রাজিল বাণিজ্য বাড়ানোয় জোর প্রধানমন্ত্রীর

পরের সংবাদ

রংপুর মেডিকেলে একদিনে ভর্তি ৫ : শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধের সংখ্যা বাড়ছে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

হাসান গোর্কি, রংপুর থেকে : পৌষের বিদায় বেলায় রংপুর অঞ্চলে শীত যেন আরো জেঁকে বসেছে। মৃদু ও মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। কনকনে শীত আর শিরশিরে বাতাসে চরম বিপাকে শীতার্ত মানুষরা। গত দু-তিনদিন ধরে একই অবস্থা বিরাজ করছিল। গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে সূর্য কিছু সময়ের জন্য উঁকি দিলেও তেমনটা উষ্ণতা ছিল না। সকাল এবং সন্ধ্যার হিমেল হাওয়া ঘন কুয়াশায় জবুথবু অবস্থা পুরো জেলায়। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছিন্নমূল মানুষদের দুর্দশাও বেড়েছে। ভোর আর সন্ধ্যায় গ্রামে গ্রামে জটলাবেঁধে আগুন পোহানোর মাধ্যমে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে অনেকেই।
গত শুক্র ও শনিবার রাতেও রংপুর নগরীর অনেক স্থানে খড়কুটোর সঙ্গে কাঠ জ¦ালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে মানুষজনদের। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের উষ্ণতা নিতে গিয়ে কোথাও কোথাও অগ্নিদগ্ধের ঘটনাও ঘটছে।
অগ্নিদগ্ধ হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ জন রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনকে বার্ন ইউনিটে এবং বাকি চারজনকে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কারো কারো শরীরের ৭০-৮০ শতাংশ, কারো আবার ৪০-৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে। ভর্তি হওয়া ৫ জনের সবাই নারী।
গতকাল শনিবার দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. এম এ হামিদ পলাশ।
হাসপাতালের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীনরা হলেন- কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর ফাতেমা বেগম (৬০), একই জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার আয়েশা (৬৫), লালমনিরহাটের আদিতমারির সফুরা বেগম (৫০) এবং দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলার বুললি আক্তার (৩০)। এছাড়া বার্ন ইউনিটে নীলফামারীর রহিমা বেগম (৬২) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিভাগীয় প্রধান ডা. এম এ হামিদ পলাশ জানান, চিকিৎসাধীন বেশির ভাগ রোগীই শীতের তীব্রতা থেকে উষ্ণতা পেতে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। প্রতি শীত মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিদগ্ধের এমন ঘটনা ঘটে। বর্তমানে বার্ন ইউনিটসহ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, গত ডিসেম্বর মাসে ৩৪ জন রোগী বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছিল। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মোট ২৫ জন অগ্নিদগ্ধ রোগী। ডিসেম্বরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আফরোজা (৩৭) ও পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার নছিমন বেওয়া (৬৮) নামে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে ৫ জনকে এবং চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ১৭ জনকে। এছাড়া গত মাসে বহির্বিভাগে ৪১ জনকে চিকিৎসা দেয়া হয়।
এদিকে গতকাল শনিবার রংপুরে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন শুক্রবার এ এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আরো কয়েকদিন দেশের উত্তর ও পশ্চিমাংশে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ সময় তাপমাত্রা ৬ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করতে পারে। একই সঙ্গে স্থানভেদে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা বিরাজমান থাকবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়