কুমিল্লাকে হারের স্বাদ দিল রংপুর

আগের সংবাদ

বাংলাদেশ-ব্রাজিল বাণিজ্য বাড়ানোয় জোর প্রধানমন্ত্রীর

পরের সংবাদ

নাসির ঝলকে স্বস্তির জয় ঢাকার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০২৩ , ২:১৮ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) তৃতীয় ম্যাচে গতকাল খুলনা টাইগার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা ডমিনেটরস। ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় গতকাল প্রথমে ব্যাট করা খুলনার ব্যাটিং কোনো উত্তাপ ছড়াতে পারেনি। মিরপুরে সচরাচর যেমন মন্থর উইকেট দেখা যায়, তেমন উইকেটেই একের পর এক ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন উইকেটে থিতু হওয়ার পর। গতকাল পুরো ২০ ওভার ব্যাটিং করে ৮ উইকেটে ১১৩ করে থেমেছে খুলনা। ওই রান পেরোতেই শেষ ওভার পর্যন্ত খেলতে হয়েছে ঢাকাকে। অধিনায়ক নাসির হোসেনের অপরাজিত ৩৬ রানের ইনিংসের সৌজন্যে ৫ বল হাতে রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ঢাকা ডমিনেটরস। হোম অব ক্রিকেট মিরপুরের উইকেট স্লো, তার মধ্যে আবহাওয়ার কারণে উইকেট পর্যাপ্ত রোদ পায়নি। সবমিলিয়ে তাই প্রথম দিনের মতো গতকাল দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচটিও হয়েছে ম্যাড়ম্যাড়ে। ঘন কুয়াশার কারণে ম্যাচটি নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আধাঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়। রাতের ম্যাচের মতো দিনের ম্যাচের পুরোটাই গড়িয়েছে ফ্লাডলাইটের আলোতে। জমে যাওয়া ঠাণ্ডার সঙ্গে ঘন কুয়াশা সবমিলিয়ে পরিস্থিতি ক্রিকেটের জন্য আদর্শ ছিল না।
টস হেরে গতকাল ব্যাট করতে নেমে খুলনা শুরুতেই শারজিল খানকে হারায়। ৭ রানে তার বিদায়ের পর ব্যাট করতে নামা মুনিম শাহরিয়ারও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ৪ রান করে আরাফাত সানির শিকার হন তিনি। ওপেনার তামিম ইকবাল কিছুক্ষণ থিতু হয়েছিলেন। তবে লম্বা সময় মাঠে না নামা এই ব্যাটার অবশ্য ৮ রানের বেশি করতে পারেননি।
২৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছে খুলনা, তখন দলের হাল ধরেন অধিনায়ক ইয়াসির আলি। তাকে সঙ্গ দেন আজম খান। দুজন গড়েন ২১ রানের জুটি। এরপর আজমকে ১৮ রানে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন আরাফাত সানি। অপরপ্রান্তে থাকা ইয়াসিরকে তখন সঙ্গ দেন সাইফউদ্দিন। গড়েন ৩১ রানের পার্টনারশিপ।
১৫তম ওভারের শেষ বলে বাজে শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন ইয়াসির। বিদায় নেন ২৪ রান করে। সাইফউদ্দিনও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ২৮ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলে উইকেট হারান। শেষের দিকে নাহিদুল ইসলাম ও সাব্বির রহমানের ব্যাটে শতরান ছাড়ায় খুলনা। এরপরই আল আমিন ফিরিয়ে দেন নাহিদুলকে (৭)।
শেষ ওভারে ব্যাট করতে নেমে ২ বলে ১০ রান নেয়া ওয়াহাব রিয়াজ তৃতীয় বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন। শেষে সাব্বিরের অপরাজিত ১১ রানে ঢাকাকে ১১৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় খুলনা।
ঢাকার হয়ে ৪ ওভারে ২৮ রান খরচায় ৪ উইকেট তুলে নেন আল আমিন। দুইটি করে উইকেট নেন নাসির হোসেন ও আরাফাত সানি।
জবাব দিতে নেমে ঢাকাকে ভালো শুরু এনে দেন দুই উদ্বোধনী ব্যাটার আহমেদ শেহজাদ ও দিলশান মুনাবিরা। কিন্তু শেহজাদ রিটায়ার্ড হার্ড হয়ে সাজঘরে ফিরলে ধাক্কা খায় তারা। ঢাকার দলীয় ১৬ রানের সময় পল ফন মেকেরিনের বল হাতে লাগে শেহজাদের।
তারা প্রথম উইকেট হারায় দলীয় ৪৭ রানে এসে। ওয়াহাব রিয়াজের বলে সৌম্য সরকার ক্যাচ দেন আজম খানের হাতে। এর আগেই অবশ্য ঘটে এক নাটক। ষষ্ঠ ওভারে নাসুমের বলে সৌম্যকে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নেন ব্যাটার।
টিভি আম্পায়ার দেখে সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। এরপর নিজের ক্ষোভ জানিয়ে মাঠেই দাঁড়িয়ে থাকেন সৌম্য। আম্পায়াররা আবারো রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত বদলান। তারপর ক্ষোভ জানান তামিম ইকবাল। বেশ কিছুক্ষণ আম্পয়ারের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় তাকে। বিপিএলে ডিআরএস না থাকা নিয়ে বিতর্কই যেন আরেকটু উস্কে দিয়েছে এই ঘটনা।
সৌম্যকে হারানোর পর দ্রুত আরো দুই উইকেট হারায় ঢাকা। এরপর দলকে এগিয়ে দেন নাসির হোসেন ও উসমান গনি। এই দুজন মিলে গড়েন ৪৪ রানের জুটি। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে পল ফন মেকেরিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরত যান উসমান। ভেঙে যায় জুটি।
দলকে বাকি পথ টেনে নেন অধিনায়ক নাসির ও আরিফুল হক। ৪ চারে ৩৬ বলে ৩৬ রান করে অপরাজিত থাকেন নাসির হোসেন। জয়ের কৃতিত্বটা বোলারদেরও দিতে হয়। তাসকিন আহমেদ, আল আমিন হোসেনদের নিয়ে গড়া বোলিং আক্রমণই যে ঢাকার শক্তি, সেটি গতকাল টের পেয়েছে খুলনার ব্যাটসম্যানরা। দুই স্পিনার নাসির ও আরাফাত সানিও ভালো করেছেন। দুজনের ৮ ওভারে রান এসেছে মাত্র ৫৩, উইকেট ৪টি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
খুলনা টাইগার্স : ২০ ওভারে ১১৩/৮
ইয়াসির ২৪, সাইফউদ্দিন ১৯, আজম ১৮
আল আমিন ৪/২৮, সানি ২/২৪, নাসির ২/২৯
ঢাকা ডমিনেটরস : ১৯.১ ওভারে ১১৭/৪
নাসির ৩৬*, মুনাবিরা ২২, সৌম্য ১৬
সাইফউদ্দিন ২/২২, মিকেরেন ১/১৮,
ওয়াহাব ১/৩২।
ফল : ঢাকা ডমিনেটরস ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : নাসির হোসেন

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়