কুমিল্লাকে হারের স্বাদ দিল রংপুর

আগের সংবাদ

বাংলাদেশ-ব্রাজিল বাণিজ্য বাড়ানোয় জোর প্রধানমন্ত্রীর

পরের সংবাদ

অবৈধ দখলে হুমকির মুখে বাঁকখালী নদী : ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে নির্মাণ হচ্ছে বহুতল ভবন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সৈয়দুল কাদের, কক্সবাজার থেকে : বাঁকখালী নদী যেন এখন আবাসিক এলাকা। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যানার টানিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন। দেখলে মনে হয় বঙ্গোপসাগর ও বাঁকখালী নদীর তীরে গড়ে উঠেছে আর একটি শহর। নদী দখল করে নির্বিঘেœ বহুতল ভবন নির্মাণ হলেও যেন দেখার কেউ নেই। এতে বাঁকখালী নদী এখন হুমকির মুখে। এসব বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য নদী দখল করে কাটা হয়েছে প্যারাবনের অসংখ্য গাছ। এই অবৈধ আবাসন এলাকায় দেয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ সংযোগ। নদীর জমি পরিমাপ করলেই বেরিয়ে আসবে কোনো দখলবাজ কত জমি দখল করেছে।
নির্ভরযেগ্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাটে কক্সবাজার মৌজার বিএস ১নং খাস খতিয়ানের বিএস ২২৬২ দাগে নদী শ্রেণির ৫৪ একর ০৪ শতক, ২২৬২/২২৭০ দাগে খাল শ্রেণির ১ একর ৬৬ শতক, ১০০০১ দাগে বালুচর শ্রেণির ১ একর ৫১ শতক, ১০০০২ দাগে নদী শ্রেণির ৬৬ একর ৪০ শতক এবং ১০০০৩ দাগে বালুচর শ্রেণির ২২ একর ৯০ শতক জমির অধিকাংশ প্রকাশ্যে দখল করে প্যারাবন ধ্বংস করে ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
পেশকার পাড়ায় বসবাসরত আইনজীবী নজরুল ইসলাম জানান, ২০২২ সাল ছিল বাঁকখালী দখলের মহোৎসবের বছর। একাধিকবার প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এই নদীর জমিতে প্রায় দুই শতাধিক প্লট তৈরি করে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন ভবনে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড। বাঁকখালী নদী দখল করে যারা আবাসন গড়ে তুলেছেন এর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ ও ১৯৯৭ মহানগরী, বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরের পৌর এলাকাসহ দেশের সব প্রকার পৌর এলাকার খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড আইন, ২০০০ বাংলাদেশ পানি আইন,২০১৩ জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন, ২০১৩, বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ ইমারত নির্মাণ আইন, ইসিএসহ বিভিন্ন আইন ও বিধিমালা অনুসারে- নদীর জোয়ার-ভাটা বন্ধে দেয়া বাঁধ অপসারণ, প্যারাবন নিধন বন্ধ, বালি উত্তোলন করে নদী কেন্দ্রিক বিভিন্ন ছড়া ভরাট বন্ধ, জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ এবং অপসারণের ক্ষমতা প্রশাসনের রয়েছে। এই দখলদারদের কেন উচ্ছেদ করা হচ্ছে না তা আমার জানা নেই।
পরিবেশবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’-এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, নদী এবং প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় জোয়ার-ভাটায় বাঁধ দিয়ে জলাশয় ভরাট ও প্যারাবন ধ্বংসের কর্মকাণ্ড বছরের পর বছর অব্যাহত রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে মানববন্ধন, সভা, স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কিন্তু জেলা প্রশাসন ও ভূমি প্রশাসন আজ পর্যন্ত কোনো উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেনি। এতে দখলদাররা অপরাধ কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত হচ্ছে। গত এক বছরে বাঁকখালী নদী ও নদী তীরের ১০০ একর জমি দখল করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহীন ইমরানকে হোয়াটসঅ্যাপএ বার্তা দিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি নোট করেছেন বলে ফিরতি বার্তায় জানিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়