৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে সংসদ অধিবেশন

আগের সংবাদ

চ্যালেঞ্জ অনেক, প্রত্যয়ী আ.লীগ : অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা > সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরা ও অপপ্রচারের জবাব দেয়া

পরের সংবাদ

৫২ বছর ধরে সাঁকো ও নৌকায় পারাপার : দুর্ভোগে ২৫ গ্রামের মানুষ > সখীপুর-বাসাইল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আমিনুল ইসলাম হাবিব, সখীপুর (টাঙ্গাইল) থেকে : টাঙ্গাইলের সখীপুর-বাসাইল উপজেলার সীমান্তবর্তী দাড়িয়াপুর-গিলাবাড়ী সড়কের বরইতলা খেয়াঘাটে বংশাই নদীতে সেতু না থাকায় বাঁশের তৈরি সাঁকো ও নৌকায় পারাপারে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ২৫ গ্রামের মানুষ।
বরইতলা ঘাট দিয়ে যাতায়াতকারী লোকজন জানান, টাঙ্গাইল-৮ সংসদীয় এলাকার সখীপুর উপজেলার পশ্চিমাংশে দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন ও বাসাইল উপজেলার পূর্বাংশ কাউলজানী ইউনিয়নের গিলাবাড়ী-সুন্না বংশাই নদী দ্বারা বিভক্ত। এ দুটি উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে নিবিড় বন্ধন থাকলেও স্বাধীনতা-উত্তর ৫২ বছরেও বরইতলা ঘাটের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বংশাই নদী দুটি উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন করে রেখেছে। ফলে সখীপুর-বাসাইলের সীমান্তবর্তী দাড়িয়াপুরের বরইতলা ঘাট এলাকায় সেতু না থাকায় দুটি উপজেলার ২৫ গ্রামের মানুষ প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। নদী পারাপারে একমাত্র ‘সেতুবন্ধন’ নৌকা ও বাঁশের সাঁকো। ফলে প্রতি বছরই ঝুঁকি নিয়ে ওই নদী পারাপারে সাধারণ মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। অকালে হারাচ্ছে অসংখ্য তাজা প্রাণ। ২০০ গজ প্রশস্ত নদীর জন্য ঘুরতে হচ্ছে কমপক্ষে ৮-১০ কিলোমিটার।
সেতু না থাকায় সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর, চাকলাপাড়া, কৈয়ামধু, বেতুয়া, দেওবাড়ী, প্রতিমাবংকী, সিলিমপুর ও লাঙ্গুলিয়া, বাসাইল উপজেলার গিলাবাড়ী, কল্যাণপুর, বালিয়া, ডুমনীবাড়ী, সুন্না, বার্থা, কলিয়া ও কাউলজানীসহ কমপক্ষে ২৫ গ্রামের মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। জানা যায় বরইতলা ঘাটের উভয় পাশে রয়েছে দুটি উচ্চ বিদ্যালয়, চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তিনটি মাদ্রাসা, পাঁচটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও পাঁচটি সাপ্তাহিক হাটবাজার।
নদী পারাপারে নিয়মিত চলাচলকারী বাসাইল উপজেলার গিলাবাড়ী গ্রামের নদী ঘেঁষা ষাটোর্ধ্ব শিক্ষক খন্দকার ফরহাদ হোসেন বলেন, সময় মতো নৌকা না পেয়ে গভীর রাতে শোনা গেছে অনেক গর্ভবতী নারীর করুণ আর্তনাদ। আর নির্বাচন এলে নির্মাণের প্রতিশ্রæতি দেয়া হলেও প্রতীক্ষার শেষ হয়নি ৫২ বছরেও।
বাসাইলের গিলাবাড়ী গ্রামের নদীরপাড় ঘেঁষা কৃষক গোলাম রাব্বানী জানান, ওই নদীতে সেতু না থাকায় খাদ্যশস্য, শাকসবজি ও মুমূর্ষু রোগী নিয়ে সখীপুর যেতে ৩ কিলোমিটারের স্থলে ১০ কিলোমিটার বেশি পথ ঘুরতে হয়।
দাড়িয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা আলমাস উদ্দিন বলেন, গর্ভবর্তী নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে অনেক রোগীকে সময় মতো হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয় না। ফলে অনেক রোগীই দুর্ঘটনার শিকার হন।
দাড়িয়াপুর এস এ উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক সানোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা নৌকা ও বাঁশের সরু সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সময় গত ২০ বছরে অনেক শিক্ষার্থীর তাজা প্রাণ চলে গেছে ওই নদীতে।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, ইতিপূর্বে সেতুটি নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে সেতুটি নির্মাণের পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
টাঙ্গাইল-৮ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলাম বলেন, দুটি উপজেলার লাখো মানুষের প্রাণের দাবি এটি। সেতুটি নির্মাণে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত একনেকে অনুমোদন দেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়