৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে সংসদ অধিবেশন

আগের সংবাদ

চ্যালেঞ্জ অনেক, প্রত্যয়ী আ.লীগ : অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা > সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরা ও অপপ্রচারের জবাব দেয়া

পরের সংবাদ

টলিউড : বছরটা যাদের…

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

করোনা মহামারি কাটিয়ে বাংলা ছবির পরিস্থিতি ভালো না খারাপ, সে বিতর্ক চলতেই থাকবে। মন্দের ভালো ২০২২ সালে টলিউডে ভালো পারফরম্যান্সের কমতি নেই। কেউ নতুন, কেউ বা একটু পরিচিত। ২০২৩ সালে টলিউড বাজি ধরতে পারে- এমন পাঁচ
তরুণ অভিনেতাকে বেছে নিল ভারতীয় গণমাধ্যম

সত্যম ভট্টাচার্য
কে : ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ ছবির ভূপতির চরিত্রে অভিনয়ের পর তিনি আপাতত ইন্ডাস্ট্রির ‘তুরুপের তাস’। স্কুলে নৃত্যনাট্যের অভিজ্ঞতা। তবে অভিনয়ের হাতেখড়ি সরস্বতী পূজায় পাড়ার নাটকে। ২০০৯ সালে নাটকের দল ‘হিপোক্রিটস’-এ যোগ সত্যমের। এখনো গণপরিবহনেই যাতায়াত করেন। সাত বছর সম্পর্কে রয়েছেন।
কেন : ইন্ডাস্ট্রিতে কাটিয়ে ফেলেছেন এক যুগ। ‘হেমলক সোসাইটি’ দিয়ে তার যাত্রা শুরু। তারপর ঝুলিতে ‘গুমনামী’, ‘নিরন্তর’-এর মতো ছবি। ‘ছোট’ চরিত্রের পর ‘বল্লভপুর’-এ প্রথমবার মুখ্য ভূমিকা তাকে আরও পরিচিতি দিয়েছে। নাটকের অভিজ্ঞতায় ভর করে এই ছবিতে দ্বৈত নয়, বরং তিন-তিনটি চরিত্রে ধরা দিয়েছেন। অভিনয় দক্ষতা পর্দায় ঢেকে দিয়েছে তার তথাকথিত ‘অনায়কোচিত’ চেহারা। টলিপাড়ার প্রযোজক-পরিচালকরাও এই তরুণ অভিনেতাকে নিয়ে ভাবছেন। ‘বল্লভপুরের রূপকথা’র পর জীবন কতটা বদলেছে? সত্যমের উত্তর, ‘ভাই-বোনদের মধ্যে চিরকাল পড়াশোনায় একটু পিছনের সারিতেই ছিলাম। কোনো দিনই পরিবারের গর্বের কারণ ছিলাম না। এখন সেটা বদলেছে।’ আগামী : আপাতত নতুন নাটকের (‘তবে তাই’) মহড়ায় ব্যস্ত। পাশাপাশি চলছে চিত্রনাট্য বাছাইপর্ব। কিন্তু কী জানেন, ‘বল্লভপুর’ এরপরে সত্যমের কাছে ছবির প্রস্তাব আসা কমে গেছে! সত্যমের কথায়, ‘আসলে অনেকেই হয়তো ভেবে নিচ্ছেন, আমি মুখ্য চরিত্র বা বড় পর্দা ছাড়া এখন কাজ করব না। অভিনেতার কাছে চরিত্রটাই শেষ কথা।’

শোলাঙ্কি রায়
কে : পরিচয় নিষ্প্রয়োজন। ‘ইচ্ছেনদী’ ও ‘গাঁটছড়া’র মতো সিরিয়াল তাকে পৌঁছে দিয়েছে বাঙালির ড্রয়িংরুমে। ২০২২ সালে ক্যারিয়ারের নতুন মোড়ে শোলাঙ্কি রায়। গত বছরেই দুটি ছবি করেছেন। যিশু সেনগুপ্তের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন ‘বাবা বেবি ও’ এবং ‘শহরের উষ্ণতম দিনে’ (ছবিটি এখনো মুক্তি না পেলেও ২০২২ সালে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে)। শুটিংয়ের ব্যস্ততা না থাকলে অবসর কাটে বই পড়ে এবং ছবি এঁকে। মনে করেন, মা-বাবা তার কাজের সবচেয়ে বড় ‘সমালোচক’।
কেন : ‘বাবা বেবি ও’ ছবিতে শোলাঙ্কির পরিণত অভিনয় দর্শক পছন্দ করেছেন। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘দুই মাধ্যমের দর্শকের থেকেই খুব ভালো প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। তাই দায়িত্ব আরো বেড়েছে।’ ওটিটি, ছোট পর্দা এবং বড় পর্দা- তিন মাধ্যমেই কাজ করছেন। তাই ২০২৩ তার ক্যারিয়ারে আরো সুযোগ হাজির করতে পারে। নতুন বছরে ওয়েব সিরিজে একটু বেশি মনোনিবেশ করতে চাইছেন। বললেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, দর্শক ভালো কাজ দেখেন। তাই এ বছর ছবি এবং ওয়েব সিরিজে একটু বেশি কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে।’
আগামী : বেশ কয়েকটি ছবির অফার ছিল। চরিত্র পছন্দ না হওয়ায় রাজি হননি। শোলাঙ্কির কথায়, ‘আমি একটু ধীরে চলো নীতি মেনে চলি। কারণ, ১০টি ছবি করলেও যেন সেগুলো নিয়ে কথা বলতে পারি, সেটা মাথায় রেখে চলি।’ মুক্তির অপেক্ষায় ‘শহরের উষ্ণতম দিনে’ ছবিটি।

সুহোত্র মুখোপাধ্যায়
কে : ২০২২ সালটা তার ক্যারিয়ারে আক্ষরিক অর্থেই ‘সহকারী’। একাধিক গোয়েন্দার সহকারীর চরিত্রে দর্শক দেখেছেন সুহোত্র মুখোপাধ্যায়কে। তালিকায় রয়েছে ব্যোমকেশ বক্সী, একেন বাবু এবং ‘পাগলাটে’ গোয়েন্দা ‘গোরা’। হাওড়ার কদমতলার ছেলে। বিসিএ নিয়ে পড়াশোনা। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। স্কুল ও বাবার অফিসের অনুষ্ঠানে নাটকের অভিজ্ঞতা। সুহোত্রর কথায়, ‘প্রথাগত চাকরি কোনো দিনই পছন্দ ছিল না। অন্য কিছু করতে চাইতাম। প্রথম অডিশনে প্রশংসিত হওয়ার পর মাথায় অভিনয়ের পোকা নড়ে।’
কেন : ইন্ডাস্ট্রিতে আগমন ২০১৫ সালে। ছোট পর্দার জন্য তৈরি সেই ছবির নাম ‘অন্য বসন্ত’। তবে বিশ্বাস করেন ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়েছিল ওয়েব সিরিজ ‘মোহমায়া’। বিগত কয়েক বছরে ওয়েব সিরিজে অভিনয় করলেও ২০২২ সালে বড় পর্দায় পা রেখেছেন। কমিক চরিত্র থেকে শুরু করে সিরিয়াস চরিত্র দর্শকের তরফে পেয়েছেন ভালো নম্বর। তাই আগামী দিনে পরিচালকরা সুহোত্রর ওপর বাজি ধরতেই পারেন। ২০২২ নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া, ‘কাজের দিক থেকে এখন পর্যন্ত আমার কাছে সবচেয়ে সফল বছর। কিন্তু সেটা নিয়ে বেশি ভাবতে চাই না। ২০২৩-এ এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই।’
আগামী : মুক্তি পাবে একেনবাবুর নতুন ছবি। শুরু হবে ‘গোরা’র দ্বিতীয় সিজনের কাজ। আরও একটি সিরিজে তিনি মুখ্য চরিত্রে (এখনো নাম চূড়ান্ত হয়নি)। এছাড়া একাধিক প্রজেক্ট নিয়ে কথাবার্তা চলছে।

মধুরিমা বসাক
কে : ‘এক্স= প্রেম’ ছবির অদিতি। ২০২২ সালে নজর কেড়েছেন দর্শকের। নবদ্বীপের মেয়ে। ইচ্ছে ছিল মডেলিংকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করার। কিন্তু কলেজে ছাত্রাবস্থায় সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় গিয়ে ভুল ভাঙে। মধুরিমার কথায়, ‘ওখানে গিয়ে প্রতিযোগীদের দেখে বুঝলাম, না খেয়ে আমি থাকতে পারব না!’ অগত্যা মডেলিং কে ‘টা টা’ করে ‘ওয়েলকাম’ করলেন অভিনয়কে। শুরুটা রবি ওঝা প্রোডাকশনের ‘রইল ফেরার নিমন্ত্রণ’ সিরিয়াল দিয়ে। তারপর কয়েক বছর বিভিন্ন ধারাবাহিকে ক্যামিয়ো চরিত্রের পর ক্যারিয়ারে গতি আনে ‘রাঙা মাথায় চিরুনি’ সিরিয়াল। কিন্তু মধুরিমার বিশ্বাস, “বিগত দু’বছরে ‘শ্রীময়ী’ বা ‘মোহর’-এর মতো সিরিয়ালের জন্যই আরো বেশি করে দর্শকের নজরে এসেছি।” প্রেম করছেন? লাজুক কন্যার উত্তর, ‘মাঝামাঝি কোনো একটা জায়গায় রয়েছি। কারণ সিঙ্গেল বললে অনেকে প্রেম নিবেদন করে বসবেন। আবার সম্পর্কে আছি বললে গসিপ বাড়বে।’
কেন : অসম্ভব ফোটোজেনিক। সনাতনী বা আধুনিক- দু’রকম চরিত্রেই তাকে মানায়। এক সময় সিরিয়ালে সংলাপ পেতেও তাকে রীতিমতো লড়াই করতে হতো। মধুরিমার গলায় আক্ষেপ, ‘হয়তো তখন সত্যিই অভিনয়টা পারতাম না! তবে শেখার কোনো কমতি ছিল না।’ সিরিয়াল থেকে পাওয়া পরিচিতি পূর্ণতা পেয়েছে ক্যারিয়ারের প্রথম ছবিতে। সঙ্গে ছিল পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘গাইডেন্স’। ইতোমধ্যেই তিনটি ছবির প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু ‘না’ বলেছেন চরিত্র পছন্দ হয়নি বলে। মধুরিমার কথায়, ‘ছবি করতেই হবে- এমন কোনো লক্ষ্য আমার নেই। ছবিটি আমার জীবনে বা ক্যারিয়ারে কোনো প্রাপ্তি যোগ করছে কিনা, সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
আগামী : নতুন সিরিয়ালের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পাশাপাশি কিছু ছবি নিয়েও একপ্রস্ত কথা এগিয়েছে।

অনিন্দ্য সেনগুপ্ত
কে : ২০২২ সালের আবিষ্কার। ‘এক্স= প্রেম’ ছবিতে দেখা গিয়েছে তাকে। অভিনয় করেছেন ‘খোলাম কুচি’, ‘হস্টেল ডেজে’-এর মতো ওয়েব সিরিজেও। স্কুলজীবনের শেষে পরিবারের পাশে দাঁড়াতেই কাজ শুরু। সংবাদমাধ্যমে সঞ্চালকের ভূমিকায় কাজ করতে করতেই নাটকের সঙ্গে পরিচয়। উত্তর কলকাতায় ছেলেবেলা কাটানো অনিন্দ্য বললেন, ‘২০১৯ সালে চিন্তাভাবনা করে অভিনয় করব বলেই চাকরি ছাড়ি। সিদ্ধান্তটা যে সঠিক ছিল, সেটা ভেবে ভালো লাগে।’ ২০২২ সালে ফুটবল বিশ্বকাপে বাংলা ধারাভাষ্যকারের দায়িত্বও সামলেছেন। ওহ, হ্যাঁ, তরুণীদের জন্য একটা জরুরি তথ্য অনিন্দ্য বিবাহিত।
কেন ভবিষ্যতের মুখ : টলিপাড়ার তরুণ তুর্কি। মহিলা অনুরাগীদের সংখ্যা অগণিত। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের, ‘কাল আমার বাড়ি আয়, স্ক্রিপ্ট শোনাব’ কথাগুলো এখনো মনে রেখেছেন। বললেন, ‘২০২২ আমার কাছে সফল। কারণ আমার প্রতিটি কাজ দর্শকের পছন্দ হয়েছে। আশা করছি, ২০২৩ আরো ভালো কাটবে।’ অভিনয় সাবলীল। বহুমুখী প্রতিভা। কাজের মাধ্যমে নিজস্ব অনুরাগী বৃত্ত তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। ক্যারিয়ারের শুরুতেই সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ। ফলে নতুন প্রস্তাবের কমতি নেই।
আগামী : সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘অতি উত্তম’ মুক্তির অপেক্ষায়। এছাড়া রয়েছে ইন্দ্রাশিস আচার্য পরিচালিত ‘নীহারিকা’। ফেব্রুয়ারিতে নতুন ছবির শুটিং শুরু করবেন। আরো নতুন কিছু প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনা চলছে।

:: মেলা ডেস্ক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়