কাগজ ডেস্ক : করাচিতে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের প্রথম টেস্ট উভয় দলের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ড্র হয়। দ্বিতীয় টেস্টেও ব্যাটিং দাপট দেখাচ্ছে তারা। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথমদিনে ব্যাটিং দাপট দেখিয়ে ৬ উইকেটে ৩০৯ রান নিয়ে দিন শেষ করা কিউইরা দ্বিতীয় দিনে ৪৪৯ রানের বড় সংগ্রহ জড়ো করে। জবাবে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিন শেষে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৩ উইকেটে ১৫৪ রান।
প্রথমদিনে উইকেটরক্ষক ব্লান্ডেল অপরাজিত ৬২ বলে ৩০ এবং ইশ সোধি ২৯ বলে ১১ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন। দ্বিতীয় দিনের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে স্কোরবোর্ডে ৩১ রান যোগ করতেই আবরার আহমেদের বলে ৫১ রান করে সাজঘরে ফেরেন ব্লান্ডেল। এরপর ৩৪৫ রান তুলতেই আরো ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। সোধি ৩১ বলে ১১ ও সাউদি ৩৭ বলে ১০ রান করে আউট হলে ১০ম উইকেটে জুটিতে ১০৪ রান সংগ্রহ করেন ম্যাট হেনরি ও এজাজ প্যাটেল। প্যাটেল ৩৫ রানে আউট হলেও হেনরি অপরাজিত ছিলেন টেস্ট ক্যারিয়ারে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৬৮ রানে। হেনরির হার না মানা ইনিংসের সুবাদে ৪৪৯ রানে প্রথম ইনিংস শেষ হয় কিউইদের।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। ওপেনার ইমাম অপরাজিত আছেন ৭৪ রান নিয়ে। তার সঙ্গে অপরাজিত আছেন সৌদ ১৩ রান নিয়ে। করাচিতে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনে পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসে প্রথম ধাক্কা দেন প্যাটেল এবং হেনরি। পাকিস্তানের ওপেনার আবদুল্লাহ শফিককে এজাজ প্যাটেলের ক্যাচ বানিয়ে দলকে প্রথম উইকেট এনে দেন পেসার ম্যাট হেনরি। শফিক করেন ৩২ বলে ১৯ রান। এরপর প্যাটেলের বল কাট করতে গিয়ে ডেভন কনওয়ের হাতে ধরা পড়েন ওয়ানডাউনে নামা শান মাসুদ। তিনি ১১ বলে ২০ রান করেন। অধিনায়ক বাবর অবশ্য ২৪ রান তুলে রানআউটের শিকার হন। পাকিস্তান তৃতীয় উইকেটটা হারায় ৯৯ রানে। এরপর অবশ্য উইকেট হারায়নি পাকিস্তান। সৌদ শাকিলকে নিয়ে নিরাপদেই দিন শেষ করেছেন ইনাম-উল-হক। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের চেয়ে এখনো ২৯৫ রানে পিছিয়ে আছে দলটি।
এর আগে প্রথমদিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দারুণ জুটি গড়েন দুই কিউই ওপেনার কনওয়ে এবং লাথাম। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ১৩৪ রান। প্রথম সেশন শেষে ৭১ রান করে নাসিম শাহর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে লাথাম সাজঘরে ফিরলেও নিজের ১২তম টেস্টে চতুর্থ সেঞ্চুরির দেখা পান কনওয়ে। ১৫৬ বলে সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর ১৯১ বলে ১২২ রান করে আগা সালমানের বলে উইকেটকিপার সরফরাজ খানকে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। কেন উইলিয়ামসন ৯১ বলে করেন ৩৬ রান। উইলিয়ামসন ফিরলে বেশি রান করতে পারেননি ড্যারিল মিচেল। মাত্র ৩ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। আর হেনরি নিকোলস করেন ২৬ রান। রানের খাতা খুলতে পারেননি ব্রেসওয়েল।
এর আগে পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচ ড্র হয়। করাচি টেস্টের শেষ দিন পাকিস্তান ১৫ ওভারে ১৩৮ রান করার লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে। ৭.৩ ওভারেই ১ উইকেট হারিয়ে ৬১ রান তুলে ফেলে টিম সাউদির দল। তবে দুই আম্পায়ার আগেভাগেই খেলার শেষ ঘোষণা করায় ড্র হয় পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড সিরিজের প্রথম টেস্ট। শেষ দিন ২ উইকেটে ৭৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা পাকিস্তানই শুরুতে চাপে ছিল একটু। নোমান আলী ও অধিনায়ক বাবর আজম ফিরে যান ১০০ রানের মধ্যেই। পাকিস্তান অবশ্য এরপর ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয় সরফরাজ আহমেদের পাল্টা আক্রমণে, সঙ্গে ছিলেন ইমাম-উল-হক। এই দুজন অবিচ্ছিন্ন থেকেই যান মধ্যাহ্নবিরতিতে। দুজনের জুটিতে ওঠে ৮৭ রান। ৭৬ বলে ৫৩ রানের ইনিংসের পর ফেরেন সরফরাজ। আগা সালমানের সঙ্গে ইমামের জুটি অবশ্য বেশিক্ষণ টেকেনি। এরপর সেঞ্চুরি থেকে ৪ রান দূরে ইশ সোধিকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হন ইমাম। পাকিস্তান ৭ উইকেট হারায় ২০৬ রানের মধ্যে, তখনো তারা দ্বিতীয় ইনিংসে এগিয়ে ছিল মাত্র ৩২ রানে।
তবে শাকিল ও ওয়াসিম মিলে চা বিরতির আগে-পরে জুটিতে তোলেন ১১১ বলে ৭১ রান। সোধি শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট নেন ৮৬ রানে। শাকিল প্রতিরোধ চালিয়ে যান শেষ ব্যাটসম্যান মীর হামজাকে নিয়ে। ৮১ বল খেলে দুজন তোলেন ৩৪ রান। হামজা একাই খেলেন ৩৪ বল।
১৩৭ রানে এগিয়ে থেকে হুট করেই ইনিংস ঘোষণা করে দেন বাবর। ১৫ ওভার বা ১ ঘণ্টায় নিউজিল্যান্ডের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩৮ রান। নিউজিল্যান্ড টম লাথামের সঙ্গে ওপেন করতে পাঠায় মাইকেল ব্রেসওয়েলকে। আবরার আহমেদের করা প্রথম ওভারের শেষ বলেই বোল্ড হন ব্রেসওয়েল। ডেভন কনওয়ে ও লাথাম এগোচ্ছিলেন রোমাঞ্চকর এক জয়ের দিকেই। ২৪ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত ছিলেন লাথাম, কনওয়ে ১৮ রান করেন ১৬ বলে। তবে ৭.৩ ওভার পর আর খেলা চালাতে দেননি আম্পায়াররা।