উকিল আবদুস সাত্তারকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি

আগের সংবাদ

মন্দা মোকাবিলায় দুই চ্যালেঞ্জ : ডলারের দাম যৌক্তিক জায়গায় রাখা > মূল্যস্ফীতি কমিয়ে ৫ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনা

পরের সংবাদ

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জাতীয় সম্মেলন : জাতীয় সরকারসহ ১৯ দফা ঘোষণা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ক্ষমতার পালাবদলের সময় দেশে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়। কোনো দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন বর্তমান বাস্তবতায় সম্ভব না। এ কারণে সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের প্রস্তাবসহ ১৯ দফা ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। গতকাল সোমবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলটির জাতীয় সম্মেলন থেকে এই ঘোষণা দেন সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
দলটির আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীম বীর প্রতীক, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এম এম আলম, গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান, ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ প্রমুখ।
বৈষম্যহীন উন্নত বাংলাদেশ নির্মাণে সর্বাত্মক আন্দোলনের ডাক দিয়ে দলটির আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, দেশের সম্পদ বানের ঢলের মতো বাইরে পাচার হয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা লুট হচ্ছে। বৈষম্যের বীভৎস দৃশ্যে মানবতা লজ্জা পায়। মানুষের ভোটাধিকার শুধু কেড়েই নেয়া হয়নি, বরং ভোটের অধিকার চাওয়াকেই অপরাধ বানানো হয়েছে। একের পর এক কালাকানুন করে গোটা দেশকেই জেলখানা বানানো হয়েছে। বিরোধী মতকে দমন করা, গুম, রাজনৈতিক সমাবেশে গুলি করে মানুষ মারা ক্ষমতাসীনদের নিত্যদিনের কাজে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, সার্বিক বিচারে দেশ সেই ’৭১ পূর্ব পরাধীনতার বৃত্তেই আটকে আছে। এতগুলো বছর পরে এসব দেখে খুব কষ্ট হয়। কোটি মানুষের রক্তকে এভাবে বিফলে যেতে দেখে রক্ত আন্দোলিত হয়। জীবনের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে এভাবে পরাধীনতার বেড়াজালে আবদ্ধ হতে দেখে আর সহ্য করা যায় না।
এদিকে দলটির ১৯ দফায় বলা হয়- জনমতের ভিত্তিতে শাসনতন্ত্রের সংস্কার, বাংলাদেশের শাসনতন্ত্র তথা সংবিধানকে যথেচ্ছা সংশোধন করে জনঅধিকার খর্ব করার ঢাল বানানো হয়েছে। বর্তমান সংবিধান নিয়ে দেশের কোনো পক্ষই সন্তুষ্ট নয়। বিরোধীরা এটাকে সংস্কার করতে চাইছে। এতে আরো বলা হয়- সরকারপক্ষও বাহাত্তরের সংবিধানে ফেরত যাওয়ার কথা বলে বর্তমান সংবিধানের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে। এই সংবিধান রচনায় জনমতের তোয়াক্কা করা হয়নি। পাকিস্তান আমলের পার্লামেন্ট মেম্বারদের দিয়ে এই সংবিধান পাস করানো হয়েছে। এই সংবিধান প্রণয়নে গণভোটও হয়নি। এই ঐতিহাসিক বাস্তবতা ও চলমান গণঅসন্তোষ বিবেচনায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এ ভূখণ্ডের মানুষের হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য, বোধ, বিশ্বাস ও মনস্তত্ত্ব আমলে নিয়ে এবং গণভোটের মাধ্যমে জনগণের সমর্থনের ভিত্তিতে সংবিধানের সামগ্রিক সংশোধনের প্রস্তাব করছে। দলটির অন্য ঘোষণার মধ্যে রয়েছে- প্রশাসনকে দক্ষতা ও সততার ভিত্তিতে জনতার সেবক দর্শনে খোলাফায়ে রাশেদার আদর্শে গড়ে তোলা। সেপারেশন অব পাওয়ার নীতির প্রয়োগ করে শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন ও ন্যায়পাল বিভাগকে পরস্পর থেকে স্বাধীন ও স্বনির্ভর করে গড়ে তোলা হবে।
অর্থনীতি, শিল্পায়ন, কৃষি ও জ্বালানি খাতে বিদ্যমান সব দুর্নীতি-অনিয়ম দূর করতে খাতগুলোকে শক্তিশালী ও বহুমাত্রিক করতে এবং স্বনির্ভর এনার্জি সেক্টর নির্মাণে জাতীয় কাউন্সিল গঠন করা হবে। উৎপাদক কৃষক ও ভোক্তার স্বার্থরক্ষায় বাজার ব্যবস্থাপনা তথা পণ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণসহ পুরো ব্যবস্থাকে একটি সমন্বিত ব্যবস্থার অধীনে এনে নিত্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল করা, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি গড়ে তোলা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়