বিএনপি নেতা খন্দকার মাহবুব হোসেন আর নেই

আগের সংবাদ

দেশজুড়ে জেঁকে বসেছে শীত : উত্তররাঞ্চলের কয়েক জেলায় বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ > জনজীবন বিপর্যস্ত > বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগবালাই

পরের সংবাদ

বিএসপিএর জবাব : পুরস্কার প্রত্যাখ্যান সালাউদ্দিনের

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস এসোসিয়েশনের (বিএসপিএ) দেয়া পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। এই সংগঠন সেরা ক্রীড়াবিদ হিসেবে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে বেছে নিয়েছে। তাই তিনি দ্বিতীয় পুরস্কার, অর্থের চেক এবং ক্রেস্ট গতকাল বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির কার্যালয়ে ফিরিয়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে বেশ গুঞ্জন শুরু হয় ক্রীড়াঙ্গনে। এরপর গতকাল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান প্রসঙ্গে বিএসপিএ বক্তব্য দেয়। তারা জানিয়েছে, গত ৩০ ডিসেম্বর কিংবদন্তি ফুটবলার কাজী সালাউদ্দিন ‘দ্বিতীয় সেরা’র পুরস্কার নিয়ে স্পোর্টসম্যান স্পিরিট দেখিয়েছেন। কিন্তু ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের মিডিয়া এক্সিকিউটিভ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের ‘দ্বিতীয় সেরা’র পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের কথা জানানো হয় বিএসপিএকে। একই সঙ্গে ট্রফি ও পুরস্কারের অর্থ ফেরত দেয় বাফুফে। তাদের চিঠি অনুযায়ী, এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বাফুফের গতকালের নির্বাহী কমিটির সভায়।
বিএসপিএ পুরস্কার দিয়ে সম্মান জানিয়েছে সাবেক ফুটবল সুপারস্টার কাজী সালাউদ্দিনকে। এই সম্মাননা তার খেলোয়াড়-জীবনের কীর্তির জন্য। কিন্তু ব্যক্তির পুরস্কার কী করে বাফুফের নির্বাহী কমিটির বিষয় হয়ে ওঠে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। বাফুফের চিঠিতে এটাকে ‘প্রহসনের পুরস্কার’ বলা হয়েছে, যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। প্রথমত, বাফুফে এর কোনো অংশ নয়।
দ্বিতীয়ত, প্রহসনের পুরস্কার বললে বাকি পুরস্কারপ্রাপ্ত কীর্তিমানদের অসম্মান করা হয়। বিএসপিএর বক্তব্য হলো তারা খুব আধুনিক, সুন্দর ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের ক্রীড়া ইতিহাসের সেরা দশ ক্রীড়াবিদকে বাছাই করেছে। এটা আমাদের জন্য নতুন হলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খুবই প্রচলিত সংস্কৃতি। বিএসপিএ অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে কাজটা করেছে এবং ক্রীড়াঙ্গনের সেরাদের সম্মান জানাতে পেরে খুশি। আর ক্রীড়াবিদদের পুরস্কৃত করা ও সম্মান জানানোর ধারা বিএসপিএর অনেক পুরনো। সেই ১৯৬৪ সাল থেকে বর্ষসেরা ক্রীড়া পুরস্কার দিয়ে আসছে এবং এটা ক্রীড়াঙ্গনের সর্বপ্রথম, খুবই গ্রহণযোগ্য বলেই বিবেচিত। এটাই আমাদের গর্ব।
এদিকে গত ৩০ ডিসেম্বর এক পাঁচতারকা হোটেলে প্রথম ও দ্বিতীয় ক্রীড়াবিদের নাম ঘোষণার পরপরই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন সালাউদ্দিন। সেই সময় কিছু বলেননি দেশের ফুটবল তারকা। তবে গতকাল এই বিষয়ে কথা বলেন বাফুফে সভাপতি।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, হোটেলে বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস এসোসিয়েশন (বিএসপিএ) কর্তৃক বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম খেলোয়াড়, শহীদ শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ও সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের (সাফ) পরপর চতুর্থ মেয়াদে নির্বাচিত সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিনকে প্রদত্ত ‘দ্বিতীয় সেরা ক্রীড়াবিদ’ এর পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে উক্ত প্রহসনের পুরস্কার প্রদান আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলকে অবমাননা করার শামিল এবং একই সঙ্গে ক্রীড়াঙ্গন তথা ফুটবলসংশ্লিষ্ট সবার জন্য অবমাননাকর।
এদিকে গত ৩০ ডিসেম্বর বিএসপিএ ষাট বছর পূর্তি উপলক্ষে স্বাধীনতাপরবর্তী বাংলাদেশের ১০ জন ক্রীড়াবিদ নির্বাচন করে তাদের সংবর্ধনা দিয়েছে। রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে ঘোঘিত ১০ জনকে সংবর্ধনা দিয়েছে দেশের ক্রীড়া সংবাদিকদের সবচেয়ে পুরনো এই সংগঠনটি।
বিএসপিএর এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, এমপি। সাকিব ও সালাউদ্দিনের পর বিএসপিএর দৃষ্টিতে ক্রমানুসারে বাংলাদেশের সর্বকালের আট ক্রীড়াবিদ হলেন- দাবাড়ু নিয়াজ মোর্শেদ, ফুটবলার মোনেম মুন্না, বক্সার মোশাররফ হোসেন, ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা, শুটার আসিফ হোসেন খান, স্প্রিন্টার শাহ আলম, সাঁতারু মোশাররফ হোসেন খান ও গলফার সিদ্দিকুর রহমান।
এদিকে সেরা পুরস্কার না পেয়ে সালাউদ্দিন ক্ষুব্ধ হলেও সাকিব উচ্ছ¡সিত। কারণ তার সেরার মুকুটে যোগ হয়েছে নতুন পালক। গত ১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের অর্জন নেহায়েত কম নয়। বিএসপিএ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাকিব বলেন, এটা আমার জন্য অনেক গর্বের বিষয়। ব্যক্তিগতভাবে আমার সেরা অর্জন। আমি আগেও বলছি, এখানে যে ১০ জন আছেন, সবাই তাদের জায়গায় সেরা। সবাই যার যার খেলায় অবদান রেখেছেন। একজনকে তো সেরা হিসেবে নির্বাচিত করতে হতো। সেটা শেষ পর্যন্ত আমি হয়েছি। সবাইকে ধন্যবাদ, যারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আশা করি, ভবিষ্যতে যতদিন খেলায় থাকব, এই পুরস্কারের প্রতিদান দিতে পারব।
বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস এসোসিয়েশনের এই পুরস্কার আমাকে আরো বেশি দায়িত্বশীল করবে, অনুপ্রাণিত করবে। এমন বিষয় যে কাউকেই অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করে। সেক্ষেত্রে এমন একটা পুরস্কার আমার জন্য অনেক বেশি অনুপ্রেরণাদায়ক ও দায়িত্বের। আমি চেষ্টা করব সামনেও ভালো করতে। আমাদের সবারই দায়িত্ব আছে যার যার জায়গা থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। যেহেতু আমরা খেলার মানুষ, আমরা খেলার মাধ্যমে এগিয়ে নিতে পারি। সেটাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়