রাজধানীর বাজারদর : সবজিতে স্বস্তি মাছ-ডিমের দাম অপরিবর্তিত

আগের সংবাদ

বই সংকটে উৎসবে ছন্দপতন : শিক্ষার্থীদের হাতে দেয়া হয় একটি-দুটি অথবা গতবছরের বই > ফেব্রুয়ারির আগে সব শিক্ষার্থী বই পাবে না

পরের সংবাদ

বছর শেষে টাইগারদের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির মূল্যায়ন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পুরাতনকে বিদায় আর নতুনকে স্বাগত জানাতে ব্যস্ত ছিল গোটা বিশ্বের মানুষ। ক্রীড়া অঙ্গনও এর ব্যতিক্রম ছিল না। তবে গত বছর ক্রিকেট মাঠে সব সংস্করণে শুরুটা ভালো করলেও শেষটা রাঙ্গাতে পারেনি বাংলাদেশ। বছর শেষে টাইগারদের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির মূল্যায়ন করলে পরিসংখ্যান তুলনামূলক স্বস্তির। এক নজরে যেনে নেই ২০২২ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিগুলো। গত বছর ১০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা। এর মধ্যে একটি জিতেছে তারা। এরপর আট ম্যাচে হেরেছে এবং একটিতে ড্র করেছে। বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয় ঐতিহাসিক অর্জন।
মাউন্ট মঙ্গানুইতে মুমিনুল হক, ইবাদত হোসেনদের চোখ জুড়ানো পারফরম্যান্সে টেস্ট জয়ের স্বাদ পায়। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে আট উইকেটে ঐতিহাসিক জয়ের মধ্যদিয়ে গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে বছর শুরু করে বাংলাদেশ। দুই টেস্ট ম্যাচ সিরিজের প্রথম ও নিজেদের ৩২তম ম্যাচে নতুন ইতিহাস রচনা করে টাইগাররা। ডেভন কনওয়ের ১২২ রানের সুবাদে প্রথম ইনিংসে ৩২৮ রান করে নিউজিল্যান্ড। এরপর প্রথম ইনিংস থেকে ১২০ রানের লিড নেয় টাইগাররা। লিডের পরও বাংলাদেশ ম্যাচ জিততে পারবে সেটি কল্পনাতেও ছিল না। পেসার এবাদত হোসেনের দুর্দান্ত বোলিং স্পেল বাংলাদেশের জয়ের পথ তৈরি করে। ৪৬ রানে ৬ উইকেট নেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৬৯ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। জয়ের জন্য মাত্র ৪০ রানের টার্গেট পায় বাংলাদেশ। মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় মুমিনুলরা। সিনিয়র টাইগারদের ছাড়া এমন জয় ছিল অবিশ্বাস্য। কারণ তামিম ইকবাল এবং সাকিব আল হাসানের মতো খেলোয়াড়রা অবিস্মরণীয় জয়ের টেস্টে ছিলেন না। তবে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে অবিস্মরণীয় জয়ের পর ভাবা হয়েছিল টেস্ট ফরম্যাটে শক্তি দল হবে বাংলাদেশ। কিন্তু পরবর্তীতে শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হারে বাংলাদেশ। গত বছর টেস্টে যে সাফল্য দিয়ে শুরু হয়েছিল তা ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। তাইতো টেকেনি টেস্টের অধিনায়ক মুমিনুল হক। দলের হতশ্রী অবস্থা ও নিজের বাজে পারফরম্যান্স মিলিয়ে মুমিনুল চলে যান বাতিলের খাতায়। অধিনায়কত্ব হারানোর পর দল থেকেও ছাঁটাই হন তিনি। তবে বছরের শেষ দিকে ভারতের বিপক্ষে জয়ের কাছে এসেও সেটি হাতছাড়া করে টাইগাররা।
এছাড়া গত বছর ১৫টি ওয়ানডের মধ্যে ১০টি জয় এবং পাঁচটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে আফগানিস্তানকে ২-১ ব্যবধানে হারানোর পর দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে একই ব্যবধানে জয়। প্রথমবারের মতো তামিম ইকবালের দুর্দান্ত নেতৃত্বে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটশ করার স্বাদ পায় টাইগাররা। তবে জিম্বাবুয়েতে সিকান্দার রাজার অবিস্মরণীয় পারফরম্যান্সে হোঁচট খায় বাংলাদেশ। এই সফরে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ খুইয়েছে টাইগাররা। ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ হেরেছে তারা। তবে বছরের শেষ ভাগে ঘরের মাঠে ভারতকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো তিন ম্যাচের সিরিজে হারানো। এমন সুখবর দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে বছর শেষ করছে টাইগাররা।
এদিকে গত বছর ২১টি টি-টোয়েন্টি খেলে মাত্র ছয়টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। হেরেছে ১৪টি ম্যাচে এবং একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। টেস্টের মতো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও দুর্বল ছিল টাইগারদের। তাছাড়া সব ছাপিয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিম অবসর নেন। বিশ্বের অন্যান্য দলের ন্যায় বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট একটি তরুণ দল তৈরি করার চেষ্টা করেছিল। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে এই সংস্করন থেকে বাদ দেয়া হয়। সিনিয়রদের মধ্যে শুধুমাত্র সাকিব আল হাসান দলে জায়গা ধরে রাখেন। টি-টোয়েন্টি দলকে গড়ে তোলার জন্য অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে নেতৃত্ব দেয়ার পর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসর নেন তামিম। তবে ২০২২সালে নেদারল্যান্ডস এবং জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে হারের বৃত্ত থেকে বের হয়েছে টাইগাররা। ২০০৭ সালের পর প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। যাইহোক হিসেবের খাতায় জয়ের থেকে পরাজয়ের পাল্লা ভারী হলেও তা বলে দেয়, বড় সাফল্য থাকলেও বছরটা ভালো যায়নি বাংলাদেশের। উত্থান-পতনের এই বছর ভুলে সামনে ভালো সময় আসুক। দুই হাজার তেইশ আনন্দযাত্রায় কাটুক তামিম-সাকিবদের এমনটাই চাওয়া ক্রিকেটপ্রেমিদের। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের নানা প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি মধ্যে ব্যাটিং ধারাবাহিকতায় সবার উপরে থেকে বছর শেষ করেছেন লিটন কুমার দাস। এক বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৯২১ রান করেছেন তারকা এ ব্যাটার। বল হাতে পুরো বছরটি রাঙ্গিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ২০২২ সালে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ডানহাতি এ বোলার। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ২০২২ সালে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে খেলেছেন ২৯ ম্যাচ। উইকেট শিকার করেছেন ৫৯টি।
এরমধ্যে একদিনের ম্যাচ খেলেছেন ১৫টি যেখানে উইকেট নিয়েছেন ২৪টি। ওয়ানডেতে ৭৪৬ বল করে ৬৭৭ রান দিয়েছেন তিনি। প্রতি ২৮ বল পর নিয়েছেন একটি উইকেট। দেশের হয়ে এ বছর ৮টি টেস্ট খেলেছেন মিরাজ,উইকেট নিয়েছেন ৩১টি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়