রাজধানীর বাজারদর : সবজিতে স্বস্তি মাছ-ডিমের দাম অপরিবর্তিত

আগের সংবাদ

বই সংকটে উৎসবে ছন্দপতন : শিক্ষার্থীদের হাতে দেয়া হয় একটি-দুটি অথবা গতবছরের বই > ফেব্রুয়ারির আগে সব শিক্ষার্থী বই পাবে না

পরের সংবাদ

গভীরভাবে খনন করার জোর দাবি স্থানীয়দের : লৌহজংয়ের পোড়াগঙ্গা নদী মরা খালে পরিণত

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তাজুল ইসলাম রাকিব, লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) থেকে : লৌহজং মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি মুন্সীগঞ্জ জেলার চার পাশে বয়ে গেছে পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতী নদী। এই নদীগুলো আবার ছোট ছোট শাঁখা নদীতে রূপান্তরিত হয়ে বিভিন্ন নাম ধারণ করেছে। তেমনি একটি নদীর নাম পোড়াগঙ্গা নদী। অনেকেই আবার পোড়াগঙ্গা খালে বলে অবহিত করেন। অথচ এক সময় নৌযান, জলজপ্রাণী, জীববৈচিত্র্য, কৃষি-চাষাবাদ ও গৃহস্থালিসহ মানুষের বেঁচে থাকার গুরুত্বপূর্ণ অবলম্বন ছিল এই নদী।
স্থানীয়রা জানান, ভৌগোলিক কারণে মুন্সীগঞ্জ তথা বিক্রমপুরের বুক চিরে বইছে অনেক নদী। কিন্তু তার বেশ কয়েটি হারিয়ে গেছে বা যাচ্ছে। বিক্রমপুরের ‘পোড়াগঙ্গা নদীর নাম ভুলে গেছে এই প্রজন্ম। অথচ এটি ছিল এই অঞ্চলের সবচেয়ে উত্তাল নদী। সিলিমপুর, ভবানীপুর, নওপাড়া, নাগের হাট এলাকায় গেলে এর চিহ্ন হিসেবে ছোট নালা দেখা যায়। এই নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠেছিল বসতি।
এক সময় পাল তুলা নৌকা, লঞ্চসহ চলাচল করত এই নদী দিয়ে। এই নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। নওপাড়া বাজারের বেশির ভাগ মালামাল আসতো এই নদী পথে। এই অঞ্চলের মানুষের সঙ্গী ছিল ‘পোড়াগঙ্গা’। সুন্দর নামের অধিকারী ‘রজতরেখা’ নদীরও একই হাল। হারিয়ে যাচ্ছে কাজল রেখা ও কালীদাস নদী।
ইছামতী নদীও মৃত্যুর মুখে। বুড়িগঙ্গা দূষণ হয়ে ঢাকার বর্জ্য ধেয়ে আসছে ধলেশ্বরীতে। বর্জ্য আর নদী দখল প্রতিযোগিতায় হুমকির মুখে ধলেশ্বরী। বিক্রমপুরের গুরুত্বপূর্ণ
খালগুলোর অবস্থাও নাজুক। তালতলা- গৌরগঞ্জ খালে এখন লঞ্চ নেই। এই খালের ডহরী পর্যন্ত ঢাকার সদরঘাট থেকে নিয়মিত লঞ্চ চলাচল করেছে কয়েক বছর আগেও। এই খাল ধলেশ্বরী ও পদ্মার সংযোগ সৃষ্টি করেছে। এই খাল ধরে মাদারীপুর, ফরিদপুর অঞ্চলের মানুষ খুব সহজে ঢাকায় নৌপথে যাতায়াত করেছে।
এমনকি তালতলা-নারায়ণগঞ্জ এবং তালতলা-সদর ঘাট নৌরুটেও এখন লঞ্চ চলছে না। অন্যান্য খালেরও বর্তমান অবস্থা হতাশাজনক। অবৈধভাবে দখলসহ নানা কারণে নদী-খাল বিলুপ্ত হচ্ছে। খালের সঙ্গে নদীর নিবিড় সম্পর্ক। খাল ভরাট হওয়ার কারণে নদী ভাঙনসহ নদী মরে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।
ষাটোর্ধ্ব সোলেমান মিয়া জানান, এই নদীটিই ছিল একটা সময়ে আমাদের প্রাণ। নদীতে সাঁতার কাটা, নদীর উপর দিয়ে নৌকায় চড়ে দূর দূরান্তে ছুটে চলাই ছিলো নিত্য দিনের সঙ্গী। একটা সময়ে এই নদীকে ঘিরেই নদীর দুই তীরে মানুষ বসতি স্থাপন করেছিল। কালের বিবর্তনে আজ সেই নদীটিই এখন হারিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো জানান, উজান থেকে আসা পলি জমে নদীটি তার গভীরতা হারিয়ে ফেলে। বছরের পর বছর ধরে দখল, দূষণের কারণে নদীটি এখন চিকন খালে পরিনত হয়েছে। যার কারণে এই নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খালগুলোও মরে গেছে।
ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকরা। নদীটি এবং নদী সংযুক্ত খালগুলো সচল থাকলে কৃষকরা জমির পানি নিষ্কাশনে সুবিধা পেত। দ্রুত সময়ে এই নদীটি এবং নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খালগুলোকে গভীরভাবে খনন করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এতে বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা বেশি উপকৃত হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শুভ্রত দাস বলেন, এই নদীটাকে স্থানীয়রা নাগেরহাট খাল বলে চিনেন।
আমরা এই খালটির ১৩ কিলোমিটার পর্যন্ত খনন করার জন্য বাজেট প্রস্তাব করেছি। বাজেট প্রাপ্তির পর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে খালটিতে খনন কাজ শুরু করা হবে। 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়