ট্রাকের ধাক্কা : নটর ডেম শিক্ষার্থী নিহতের মামলার চার্জশিট গ্রহণ

আগের সংবাদ

নেতাকর্মীদের প্রতি শেখ হাসিনার নির্দেশ : যে হাত মারতে আসবে সে হাত ভেঙে দিতে হবে > আঘাত এলে পাল্টা আঘাত

পরের সংবাদ

কে এই ইয়াসিন বোনো

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কাতার বিশ্বকাপে নকআউট পর্বে স্পেনকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় মরক্কো। আফ্রিকার চতুর্থ দল হিসেবে বিশ্বকাপের শেষ আটে উঠেছে দেশটি। আফ্রিকা-আরব অঞ্চলের ঐতিহাসিক এই জয়ের নায়ক গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো। তার হাত গলে জালে জড়ায়নি স্পেনের কোনো পেনাল্টি শট। কার্লোস সোলের, সার্জিও বুসকেটসরা যেদিকেই শট নিয়েছেন, সেদিকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন বোনো। তার বিশ্বস্ত হাতে আটকে গেছে স্পেনের শেষ আটে ওঠার স্বপ্ন।
স্পেন-মরক্কোর মধ্যকার ম্যাচটি টাইব্রেকারে গড়ানোর আগে দুটি দারুণ সেভ করেন বোনো। ম্যাচ পেনাল্টি শুটআউটে যাওয়ার অন্যতম কারণ এটি।
পেনাল্টি শুটআউটে তার রেকর্ড অবিশ্বাস্য। ক্যারিয়ারে ২৬ শতাংশ পেনাল্টি ফিরিয়েছেন বোনো। এখন পর্যন্ত ৫০টি পেনাল্টি শটের মুখে দাঁড়ানো দীর্ঘদেহী এই গোলরক্ষক ফিরিয়েছেন ১৩টি শট।
১৯৯১ সালে কানাডার মন্ট্রিলে জন্মগ্রহণ করেন বোনো। অল্প বয়সেই তিনি পরিবারের সঙ্গে মরক্কোয় যান। মাত্র ৮ বছর বয়সে যোগ দেন ওয়াইদাদ ক্যাসাব্লাঙ্কা নামের ক্লাবে। ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত সেখানেই খেলেন তিনি। ক্লাবটির সিনিয়র দলের হয়ে ১১ ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন তরুণ বুনো। পরিণত বয়সে তার উচ্চতা দাঁড়ায় ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি। মাত্র ২১ বছর বয়সে তাকে দলে ভেড়ায় স্পেনের ক্লাব অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ। সেখানে দুই মৌসুম ক্লাবের বি টিমের হয়ে খেললেও মূল দলে জায়গা হয়নি তার।
২০১৪ সালে অ্যাথলেটিকো থেকে ধারে স্পেনের দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব জারাগোজায় যোগ দেন বোনো। এরপর জিরোনায় যোগ দিয়ে ক্লাবকে লা লিগায় উঠে আসতে সহায়তা করেন। ওই ক্লাবেই ২০১৯ সাল পর্যন্ত কাটান তিনি। এরপর তাকে ধারে দলে নেয় সেভিয়া। গত তিন মৌসুম ধরে এই ক্লাবের প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক তিনি। ২০২০-২১ মৌসুমে ১৫ ম্যাচে এবং গত মৌসুমে ১৩ ম্যাচে নিজের পোস্ট সুরক্ষিত রাখেন এই মরক্কান।
শীর্ষ পর্যায়ের ক্লাবে সময় লাগলেও মরক্কোর জাতীয় দলে ২০১৩ সাল থেকে নিয়মিত মুখ বোনো। ২০২১ আফ্রিকা কাপ অব নেশন্সে ৪ ম্যাচ এবং বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ৮ ম্যাচে মাঠে নামেন তিনি। আর বিশ্বকাপে এসে তো চমকেই দেন। তবে আরো আগে তার নাম ইউরোপের শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে বেশ জোরেশোরে উচ্চারিত হয়েছে। ২০২০ ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে সেভিয়ার সেই বিখ্যাত ২-১ গোলের জয়ে গোলপোস্টের নিচে রীতিমতো দেয়াল হয়ে দাঁড়ান বোনো, দারুণ দক্ষতায় প্রতিহত করেন ৬টি শট। ওই আসরের ফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ৩-২ গোলে জিতে শিরোপা উদযাপন করে সেভিয়া। সেবার ২ গোল হজম করলেও ২টি দারুণ সেভ করেন বোনো। এরপরই তাকে চার বছরের নতুন চুক্তি উপহার দেয় স্প্যানিশ ক্লাবটি। ২০২০-২১ চ্যাম্পিয়নস লিগে সেভিয়ার জার্সিতে পাঁচ ম্যাচে মাঠে নামেন বোনো এবং দুই ম্যাচে ক্লিনশিট পাওয়ার পরও তার দল শেষ ষোলোয় বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে হেরে বিদায় নেয়। ২০২১-২২ মৌসুমে লা লিগার সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জামোর্তা ট্রফি জেতেন বুনো। তাকে পুরস্কৃত করার পর রিয়াল মাদ্রিদের তারকা গোলরক্ষক থিবাউট কোর্তোয়া বলেন, ‘তাকে অভিনন্দন জানানো উচিত। সে দারুণ একজন বন্ধু এবং এটার যোগ্য দাবিদার।’
মরক্কোর হয়ে ৪৯টি ম্যাচ খেলা বোনো এবারের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে দেয়াল তুলে দাঁড়িয়েছিলেন। তার হাত ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়াতে পারেননি লুকা মদ্রিচ, ইভান পেরিসিকরা। কানাডার বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় পাওয়ার গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ দিয়ে দলে ফেরেন বোনো। এই ম্যাচেও কোনো গোল হজম করেননি তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়