জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি : ডা. এস এ মালেকের মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি

আগের সংবাদ

পল্টন ছেড়ে গোলাপবাগে বিএনপি : বিকাল থেকেই সমাবেশস্থলে নেতাকর্মীদের অবস্থান, রাজধানীজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা

পরের সংবাদ

নেতাকর্মীদের প্রতি শেখ হাসিনার নির্দেশ : যে হাত মারতে আসবে সে হাত ভেঙে দিতে হবে > আঘাত এলে পাল্টা আঘাত

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় কণ্ঠে উচ্চারণ করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ বসে ‘মাইর’ খাবে তা আর হবে না। আওয়ামী লীগ আর বসে থাকবে না। বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলে তার জবাব দিতে হবে। বারবার আঘাত করলে সহ্য করব না। ২০২২ সাল পর্যন্ত সহ্য করেছি। এখন আর করব না। যে হাত দিয়ে মারতে আসবে, সেই হাত ভেঙে দিতে হবে। যে হাত দিয়ে আগুন দিতে আসবে, সে হাত পোড়াতে হবে। ওদের কিসের ক্ষমা। বসে বসে আর মার খাওয়া যাবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি, মহানগর ও সহযোগী-ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও এডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, ঢাকার দুই মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও আতিকুল ইসলাম। কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণসহ সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা সভায় অংশ নেন।
নিজ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, প্রত্যেক এলাকায় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। তারা নয়াপল্টনে বিআরটিসির বাস পুড়িয়েছে। এটা তাদের টেস্ট ছিল। নেতাকর্মীদের বলছি, সবাই প্রস্তুত থাকুন। তারা আবারো বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। চাল-ডাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খেয়ে পুলিশের ওপর হামলা করছে। এভাবে সরকারের পতন ঘটানো যাবে না, এত সহজ নয়। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হলে আওয়ামী লীগ বসে থাকবে না। যে হাত দিয়ে মারতে আসবে সেই হাত ভেঙে দিতে হবে।

তাদের আর কোনো ক্ষমা করা হবে না।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যেসব নেতাকর্মী ‘মাইর’ খেয়েছে, তারা কেন সেগুলো প্রচার করে না। আওয়ামী লীগে যেসব নির্যাতিত নেতাকর্মী আছে, তাদের বিষয়গুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অগ্নি সন্ত্রাসী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না। ওরা আমাদের উৎখাত করবে? ওরা পকেট থেকে এসেছে আবার পকেটেই থাকবে। গণতন্ত্রের কথা ওদের মুখে মানায় না। এবার যেন আর কোনো বিআরটিসির বাস পোড়াতে না পারে। যেটা পোড়াতে যাবে, এখন তো সবার হাতে ক্যামেরা, ভিডিওি ফুটেজ দেখে যেই হাতে আগুন দেবে, সেই হাত সঙ্গে সঙ্গে পুড়িয়ে দিতে হবে। কোনদিন বলিনি এখন বলব, আর মার খাওয়ার সময় নেই।
গণমাধ্যমের মালিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে সমস্ত মিডিয়া এখন ধরনা দিচ্ছে, এত টেলিভিশন… এ তো আমারই দেয়া। আমি যদি উন্মুক্ত না করে দিতাম এত মানুষের চাকরিও হতো না, ব্যবসাও করতে পারত না। আমাদের আমলে সব দলের ব্যাবসায়ীরা শান্তিতে ব্যবসা করেছে। সেই সুযোগ দিয়েছি। বিএনপিকে যারা (মিডিয়া) তেল মারছে, তাদেরও হিসাব করব। আওয়ামী লীগের সময় সবাইকে শান্তি পূর্ণভাবে ব্যবসা করতে দিয়েছি। বিএনপির আমলে তো এত আরামে ব্যবসা করতে পারেনি। এই মিডিয়া একটা উল্টাপাল্টা কিছু লিখলেই তারা মারত। তারপরও এত আহ্লাদ আর তেল মারা কিসের। কত তেল আছে দেখব।
বিএনপির আমলে নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে যে অত্যাচারটা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর করেছে; আমরা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে গুণে গুণে সেই অত্যাচারের জবাব দিতে পারতাম, সেই ক্ষমতা আওয়ামী লীগ রাখে। কই আমরা তো করিনি। আমরা তো তাদের ওপর এভাবে অত্যাচার নির্যাতন করতে যাইনি। কারণ আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না।
সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পাড়া-মহল্লায় সতর্ক অবস্থান নেয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই পঁচাত্তর থেকে মাইর খেয়ে আসছি। এবার যে হাত দিয়ে মারবে সেই হাত ভেঙে দিতে হবে। যে হাত দিয়ে মানুষকে আগুন দিতে আসবে সে হাত আগুনে পোড়াতে হবে। পোড়ার যন্ত্রণাটা তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে। এখনো আগুনে পোড়া মানুষগুলোর অবস্থা দেখলে চোখে পানি আসে। এদের কিসের ক্ষমা?
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, পরিষ্কার কথা- নেতাকর্মীদের মাঠে থাকতে হবে। সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে বলতে হবে তারা কি শান্তিতে থাকতে চায়? নাকি আবার অশান্তিকে জায়গা দিতে চায়। জ্বালাও পোড়াও, হত্যা, খুন, মানি লন্ডারিং- এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের শান্তিকে বিনষ্ট করতে দেয়া হবে না। সবাই প্রস্তুত থাকেন। কোনো মানুষের একটা ক্ষতিও যেন তারা করতে না পারে। দোকানদাররাও যেন প্রতিবাদ করে। তারা বহু যন্ত্রণা দিয়েছে। অনেক সহ্য করেছি। আমাদের নেতাকর্মী ও কারো গায়ে হাত দিলে আর ক্ষমা নেই।
তারেক রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মুচলেকা দিয়ে গেছিল সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আমি ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করব, তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ধরে এনে সাজা বাস্তবায়ন করব। জাতির পিতার পলাতক খুনিদের বিষয়ে তিনি বলেন, আমেরিকা… তারা খুনি পালছে একটা, আবার কানাডা পালে আরেকটা, পাকিস্তানে আছে দুইটা। সবার কাছে বলব এই খুনিদের ফেরত পাঠাতে হবে। আর ব্রিটিশ সরকারকে বলব, তারেক জিয়াকে দেশে ফেরত পাঠাতে। কারণ সে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। যারা মানবতার কথা বলে, দুর্নীতির কথা বলে, আবার সেই খুনি ও দুর্নীতিবাজকে তাদের দেশে আশ্রয় দেয়। কাজেই তাকে বাংলাদেশের কাছে হ্যান্ডওভার করতে হবে। এই দেশে নিয়ে এসে সাজা আমি বাস্তবায়ন করব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের যেসব দেশে প্রতিদিন মানুষ খুন হয়, ভোটের সময় ভোট চুরি হয়েছে বলে ক্যাপিটাল হিলেও আক্রমণ হয়, পাঁচ-ছয় জন গুলি করে মারে, আর তাদের কাছ থেকে গণতন্ত্রের ছবক নিতে হবে? তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়ে যখন দেশে আসছি। তারেক জিয়ার বাপও আমাকে ঠেকাতে পারেনি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারও পারেনি। এতই নেতৃত্ব দেয়ার শখ দেশের বাইরে পালিয়ে থেকে কেন?
আ. লীগ ভেসে আসেনি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ মাটি ও মানুষের সংগঠন। জাতির পিতার নিজ হাতের সংগঠন। বিএনপির জন্ম জিয়ার উর্দি পরা পকেটে। আওয়ামী লীগ পকেটের সংগঠন নয়। বিএনপি পকেটের সংগঠন বলেই মাটিতে তাদের কোনো শিকড় নেই। বিএনপি স্বর্ণলতার মতো। যে গাছের উপরে স্বর্ণলতা উঠে সে গাছে আর কোনো ফল ধরে না, বিএনপি দেশের ওপর উঠেছিল সেই দেশটাকে খেয়ে ফেলেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়