অভিনেত্রী শিমু হত্যা মামলায় স্বামীসহ দুজনের বিচার শুরু

আগের সংবাদ

বাস্তবায়ন থমকে, শান্তি অধরা : শান্তিচুক্তির ২৫ বছর, সংঘাতে অশান্ত পাহাড়, বাড়ছে নতুন নতুন সশস্ত্র সংগঠন

পরের সংবাদ

ফরিদপুরে দুর্বৃত্তের হামলায় বিএনপির সমাবেশ পণ্ড : পুলিশসহ আহত ২০

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বিভাষ দত্ত, ফরিদপুর শহর প্রতিনিধি : বিএনপির পূর্বঘোষিত সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেছে দুর্বৃৃত্তদের হামলায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১২ রাউন্ড শটগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এসময় পুলিশের ৫ জন ও বিএনপির কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়।
গতকাল বুধবার বিকালে ফরিদপুর প্রেস ক্লাব চত্বরে ঘটে এই তাণ্ডব। এসময় হেলমেট পরিহিত ২০/২৫ জন যুবককে ১০/১২ মিনিট ধরে এই হামলায় অংশ নিতে দেখা যায়। তবে পুলিশ বলছে এটি স্থানীয় বিএনপির দুই গ্রুপের কোন্দলের জের।
বিএনপির স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, বিভাগীয় শহরগুলোতে বুধবার বিএনপির পূর্বঘোষিত সমাবেশ ছিল এটি। দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের হামলায় ও পুলিশের গুলিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের হতাহত হওয়া ও ‘গায়েবি’ মামলার প্রতিবাদে তারা এই সমাবেশ ডেকেছিল ফরিদপুর প্রেস ক্লাব চত্বরে। বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে সেখানে জড়ো হওয়া শতাধিক কর্মীর সামনেই মঞ্চে উপস্থিত বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের দিকে ইটপাটকেল ছুড়ে ও ঘটনাস্থলে পরপর তিনটি ককটেল ফাটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে হেলমেট বাহিনী। এতে কমপক্ষে ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়ে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গ্রেপ্তার এড়াতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন না তারা।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রেস ক্লাব চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙচুর হওয়া মঞ্চ, চেয়ারের ভাঙা টুকরা ও ইটপাটকেল ছড়িয়ে থাকা প্রেস ক্লাব চত্বর পুলিশ পরিবেষ্টিত। সেখানে ইউনিফর্ম পরা ও সাদা পোশাকে অর্ধশত পুলিশ সদস্যকে সতর্ক অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।
পুলিশ জানায়, বিএনপির দুই গ্রুপ মারামারি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় তারা এক পর্যায়ে ফাঁকা গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়। এসময় তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। সেখানে কর্তব্যরত ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি এমএ জলিল এ প্রতিবেদককে বলেন, বিএনপির সমাবেশ মঞ্চে হামলার ঘটনায় তাদের দলের আভ্যন্তরীণ কোন্দলই

দায়ী। তারা শামা ওবায়েদ ও নায়েব ইউসুফ এই দুই দলে বিভক্ত। এই হামলা সেই বিভক্তির কারণেই ঘটেছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় ছাত্রলীগ নেতা কাউসার আকন্দের নেতৃত্বে মোটরসাইকেলযোগে হোলমেট পরিহিত ২০/২৫ জন যুবক জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে সবার সামনেই হামলা চালায় বিএনপির এই সভায়। কাউসার ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্রছাত্রী সংসদের সাবেক ভিপি ও ছাত্রলীগ রাজেন্দ্র কলেজ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক। অবশ্য কাউসার আকন্দ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি সে সময় মিছিল নিয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমাদের কেউ এই হামলা চালায়নি। অন্যরা হামলা করে আমাদের উপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। বিকেল ৫টার দিকে দেখা যায়, ফরিদপুর প্রেস ক্লাব সংলগ্ন মুজিব সড়কের পাশ থেকে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ভ্যানে তুলে নেয় ডিবি পুলিশের সদস্যরা। এসময় তাকে ছাড়াতে স্থানীয় বিএনপির সিনিয়র নেতারা এগিয়ে গেলে তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ঘটে পুলিশের। তাকে গ্রেপ্তার করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বিএনপির দাবী এই নিয়ে তাদের ৯ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে মারামারি করে শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই গ্রেপ্তার ও হামলা এবং মঞ্চ ভাঙচুরের নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। হামলায় পণ্ড হয়ে যাওয়া উক্ত সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান ও ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলামের। ভাঙচুর হওয়ার পর তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
শামা ওবায়েদ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের গুলিতে এ পর্যন্ত বিএনপির ১১জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। তার প্রতিবাদে গত চারদিন আগে আমরা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছিলাম।
মঈন খান বলেন, এখানে আজ আমাদের যে সমাবেশ ছিল সেটা ছিল সাধারণ মানুষের উপরে এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের উপরে সরকারের নির্যাতনের বিরুদ্ধে। এর বিরুদ্ধে একটি শান্তিপূর্ণ ছোট সমাবেশ করতে এসে আমরা হামলার শিকার হলাম।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন বলেন, হামলায় দিলিপসহ তাদের অন্তত ৮ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ রিতু, কামাল, রাজীব ও সিজানসহ বেশ কয়েকজন তরুণকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়